শিরোনাম
পাহাড়ি গিরিপথে কেন ঝরছে প্রাণ,ঝুঁকিপূর্ণ ঝর্ণায় প্রবেশে বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন প্রয়োজন খাগড়াছড়িতে নানা বাড়িতে বেড়াতে এসে নদীতে নিখোঁজ শিশু পুতুলকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগে দুই প্রস্তাব শেখ হাসিনার যেসব তথ্য ফাঁস হয়েছে তা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অন্ধকারময় অধ্যায়-স্টেটসম্যানের সম্পাদকীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মিটফোর্ডের হত্যার বিচার হবে: আসিফ নজরুল লটারির মাধ্যমে নির্বাচনী দায়িত্ব পাবেন ডিসি-এসপিরা কাপ্তাই লেকে ১০ ফুট পানি বৃদ্ধি, ৫টি ইউনিট ২১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চালুউৎপাদন হচ্ছে পাহাড় ধসের শঙ্কা, তবু সরতে নারাজ তারা ‘জুলাই ঘোষণাপত্রে’ চূড়ান্ত মতামত দিয়েছে বিএনপি

লটারির মাধ্যমে নির্বাচনী দায়িত্ব পাবেন ডিসি-এসপিরা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫
  • ৭০ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রিপোট:- ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। স্বচ্ছতা নিশ্চিতে গত তিন নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের যথাসম্ভব বাদ দেওয়া, সব ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, পুলিশের শরীরে ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছেন সরকারপ্রধান।

নির্বাচনের আগে সব ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি বদল করা এবং নির্বাচনে লটারির মাধ্যমে দায়িত্ব দেওয়ার আলোচনাও করেছেন ড. ইউনূস।

বুধবার সরকারপ্রধানের বাসভবন যমুনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত বৈঠক থেকে তিনি এ নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর হতে বলেছেন সরকারপ্রধান।

বৈঠকের পর গতকাল রাতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানান।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক যত প্রস্তুতি রয়েছে, তা ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা’। নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং সংস্কারের অগ্রগতি হলে আগামী রমজানের আগে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হতে পারে বলে আবারও সরকারের বার্তা তুলে ধরেছেন প্রেস সচিব।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে সরকারের ঘোষণা কিংবা সিদ্ধান্ত অবশ্যই ইতিবাচক। এখন দেখতে হবে এটা কতটুকু বাস্তবায়ন করা হয়।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, অবশ্যই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। সংস্কার এবং বিচারের অগ্রগতিও করতে হবে নির্বাচনের আগে।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, নির্বাচনকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিরাপত্তা দিতে সক্ষম কিনা– তা নিশ্চিত করতে হয়। এ ছাড়া কীভাবে নির্বাচন হবে? প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের কথায় নির্বাচন দিয়ে চলে যেতে চাইছেন। শুধু নির্বাচন দেওয়ার জন্য কিংবা তাঁর মামলা খালাসের জন্য তাঁকে বসানো হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্কার করতে হবে।

গত ১৩ জুন লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, সংস্কার এবং বিচারের অগ্রগতি সাপেক্ষে ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহে নির্বাচন হতে পারে।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন, আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে। তাঁর প্রথম ঘোষণা ছিল, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে পরের বছর জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। বিএনপির দাবি ছিল, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন। তবে দলটি ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনে ঘোষণা মেনে নিয়েছে।

এদিকে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যেসব সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে ইসির দ্বিমত রয়েছে, সেগুলো নিয়েও কথা হয়েছে।

ঐকমত্যের সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করে বিশেষায়িত কমিটি গঠনে একমত হয়েছে। তবে ইসি নিজস্ব কর্মকর্তাদের নিয়ে ইতোমধ্যে সীমানা পুনর্নির্ধারণ কমিটি করেছে। সংবিধান অনুযায়ী, সীমানা নির্ধারণ ইসির এখতিয়ার হলেও, কমিটিতে কীভাবে বিশেষজ্ঞদের যুক্ত করা যায়, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয় বলে সূত্র জানিয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, আনসারের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ ও কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. জিয়াউল হক উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অনেক পাঁয়তারা হয়, তাই আগামী মাসগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর হতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৮ লাখ সদস্য নিয়োজিত থাকবেন জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব সদস্যের প্রশিক্ষণ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।

শফিকুল আলম জানান, পুলিশ পর্যালোচনা করে দেখেছে, ৪৭ হাজার ভোটকেন্দ্রের ১৬ হাজার ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এসব কেন্দ্রে কীভাবে শান্তিপূর্ণ ভোট করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বিবেচনা করা হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে– পুলিশের বডি ক্যামেরা রাখা এবং প্রতিটি কেন্দ্র সিসিটিভির আওতায় আনা। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে ভোটের জন্য প্রস্তুত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রেস সচিব জানান, চার দিনের পরিবর্তে নির্বাচনে সাত দিনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের কথা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, কর্মকর্তাদের নম্বর ধরে লটারির মাধ্যমে দায়িত্ব দেওয়া যায় কিনা, তা ভেবে দেখতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। যাতে কেউ কোনো প্রভাব খাটাতে না পারে।

ভোট সুষ্ঠু না হলে তা বাতিলের ক্ষমতা ইসিকে ফিরিয়ে দেওয়া যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখতে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আজাদ মজুমদার। তিনি বলেন, বিগত নির্বাচনে যেসব পোলিং ও প্রিসাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের বাদ দিয়ে এবার কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া যায় কিনা, তাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়েও মনিটরিং সেল গঠন হবে জানিয়ে উপ-প্রেস সচিব বলেন, অনিয়ম দেখা গেলে, এতে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

ভোটের দিন ইন্টারনেট সচল রাখার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, নির্বাচনের পর্যবেক্ষকদের নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রায় ২ লাখ পর্যবেক্ষক এই নির্বাচনে সম্পৃক্ত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পর্যবেক্ষকের নামে যাতে কেউ দলীয় কর্মীকে নির্বাচনী কেন্দ্রে পাঠাতে না পারে– এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন।

নির্বাচন পর্যন্ত সেনাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা নিয়ে থাকবে কিনা– এ প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন, নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে। তিনি বলেন, ১৮ থেকে ৩৩ বছর বয়সীদের জন্য পৃথক তালিকা এবং বুথ কীভাবে নিশ্চিত করা যায়, তা খতিয়ে দেখতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। যারা প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে, যাতে প্রথম ভোটে ভালো স্মৃতি হয়।

বৈঠকের বিষয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেন, নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালনে ডিসেম্বরের মধ্যে পুলিশ সদস্যদের প্রস্তুত করে তোলা হবে। আগস্ট থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রশিক্ষণ শুরু হবে। কীভাবে একটি কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে হয়, কোন ধরনের বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে– তা হাতেকলমে শেখাব। এ ছাড়া প্রযুক্তিগত বিষয়গুলোও থাকবে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট হবে– এটা ধরে নিয়ে পুলিশ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করবে।

আইজিপি জানান, প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে সব বাহিনীর জনবল ব্যবস্থাপনার ওপর আলোচনা হয়েছে। নিখুঁত নির্বাচন মূল লক্ষ্য। কোনো কেন্দ্রে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সমন্বয়ের মাধ্যমে তা মোকাবিলার পদ্ধতি ও কৌশল সম্পর্কে বাহিনীর সদস্যদের প্রায়োগিক ধারণা দেওয়া হবে। সমকাল

 

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions