দেশ চালাচ্ছেন দ্বৈত নাগরিকরা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
  • ২৮ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- বাংলাদেশ পছন্দ নয়। এদেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। দুর্নীতি, দুঃশাসন, অর্থনীতি, নিরাপত্তা, পরিবেশ-প্রতিবেশ মিলিয়ে বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়ছে দেশটি! এমন উপলব্ধি থেকে ‘আগাম ব্যবস্থা’ হিসেবে অনেকে গ্রহণ করেছিলেন ‘উন্নত দেশ’-এর নাগরিকত্ব। দালিলিকভাবে জন্মভূমির সঙ্গে ছিন্ন করেছিলেন সম্পর্ক। লাথি মেরে ছেড়ে চলে যাওয়া সেই ব্যক্তিরাই এখন ফিরে আসছেন দেশের হর্তাকর্তা হয়ে। পক্ষান্তরে ফ্যাসিস্ট হাসিনার লাথি-গুতো, জেল-জুলুম সহ্য করেছেন অগণিত মানুষ। হাজারো নিপীড়নের মুখে তারা মাটি কামড়ে পড়েছিলেন নিজ ভূমে। ধানক্ষেত ও বন-বাঁদাড়ে রাত কাটিয়েছেন। গ্রেফতার আতঙ্কে ঘরে ঘুমাতে পারেননি বছরের পর বছর। মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় বারবার কারাগারে গেছেন। আয়নাঘরে বন্দি থাকতে হয়েছে। সর্বশেষ জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন। অথচ এখন তারা নেই দেশ পরিচালনায়।

ভূ-খ-ের বাইরে থেকে অনেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন সংঘটিত করেছেন। শক্তি ও সাহস জুগিয়েছেন। মানুষের মানসে ছড়িয়েছেন দ্রোহের আগুন। তাদের বড় অংশটিকেও যুক্ত করা হয়নি রাষ্ট্রপরিচালনায়; বরং অন্তর্বর্তী সরকারে ভিড় জমিয়েছে একটি সুবিধাভোগী শ্রেণি। কেউ ‘উপদেষ্টা’ হিসেবে ঠাঁই করে নিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পেটের ভেতরে। কেউ হয়েছেন ‘বিশেষ সহকারী’। কেউবা হয়েছেন ‘জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা’। অথচ তাদের অনেকের শেকড় পোঁতা আছে বিদেশে। টিকি বাঁধা রয়েছে পশ্চিমাদের কাছে। দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা তাদের নিতান্তই লোকদেখানো।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকার সংশ্লিষ্ট এসব ব্যক্তিরা হচ্ছেন দুধের মাছি। তাদের পরিবার বসবাস করে বিদেশে। সন্তান ‘মানুষ’ হচ্ছে পশ্চিমা আলো-হাওয়ায়। স্বার্থ ফুরালে উড়াল দেবেন ফুরুৎ করে। ফিরে যাবেন পরিবারের সান্নিধ্যে। রাজনীতির বাতাস উল্টো দিকে বইতে শুরু করলে খুঁজে পাওয়া যাবে না তাদের। অন্তর্বর্তী সরকার যদি ব্যর্থ হয়Ñ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের পথ সুগম হবে। আর পুনরায় হাসিনার শাসন ফিরে এলে টার্গেট হবেন সেই সব যোদ্ধারা, যারা শুধুমাত্র দেশ প্রেম ও বিবেকের তাড়নায় জুলাই জাগরণে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন। যারা ক্ষমতার স্বাদ পাননি। যাদের যাওয়ার মতো দ্বিতীয় কোনো গন্তব্য নেই। আন্দোলনের মূল অংশীজনদের সরকারের বাইরে রাখা হয়েছে। বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিরা নির্ধারণ করছেন জাতির ভবিষ্যৎ।

সমালোচকদের কেউ সরকারকে আখ্যায়িত করছেন ‘এনআরবি ক্লাব’ নামে। কেউবা নাম দিয়েছেন ‘এনজিও-বিষয়ক ব্যুরো’। কারণ সরকারের গুরত্বপূর্ণ পদে বসা অনেকেই এদেশের নাগরিক নন। ‘নিরাপদ ঠিকানা’ হিসেবে তারা পছন্দ করেছেন ইউরোপ-আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়াকে। বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করে কোন্ কোন্ উপদেষ্টা, সংস্কার কমিশনের প্রধান কিংবা বিশেষ সহকারী পশ্চিমা নাগরিকত্ব নিয়েছেন সেই তালিকা ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এ কারণে অনেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘বিদেশিদের সরকার’ বলেও অভিহিত করছেন। তবে দেশের মানুষকে সন্দিহান করে তুলেছে অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা এই ‘বিদেশি’দের কথা-বার্তা, কার্যকলাপ ও সিদ্ধান্ত। গৃহযুদ্ধে পর্যুদস্ত মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে ‘মানবিক করিডোর’ দেয়ার আলাপ চলছে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর পরিচালনার কার্যভার বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়ার কথা হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষার নামে সেন্টমার্টিনে মানুষের প্রবেশাধিকার রহিত করা হয়েছে। মানুষ মনে করছে, এসবই ঘটছে পশ্চিমা প্রেসক্রিপশনে, পশ্চিমা ফুটপ্রিন্ট বাড়ানোর স্বার্থে। যা দেশের সার্বভৌমত্ব, অখ-তা ও নিরাপত্তাকে সমূহ ঝুঁকির মুখে ফেলছে। গত ৯ মাসে সম্পাদিত খ- খ- কার্যকলাপ এক সাথে করলে জনমনে এমন সংশয় জাগার অবশ্য যথেষ্ট কারণও রয়েছে।

ড. খলিল বিতর্ক : সরকারে থাকা বেশ কয়েকজন উপদেষ্টার দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। এমন অভিযেডাগ সম্বলিত বেশ কয়েকজনের তালিকা ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এ তালিকার একজন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান। গত বছর ১৯ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা-বিষয়ক হাই-রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। গত ৯ এপ্রিল তাকে ‘জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা’ হিসেবেও নিয়োগ দেয়া হয়।

১৯৭৯ সালে ফরেন সার্ভিসে যোগদান করেন ড. খলিলুর রহমান। ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি লতিফুর রহমানের একান্ত সচিব হিসেবে কাজ করেন। এ সময় এক গৃহবধূ হত্যা এবং তার স্বামীর আত্মহত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে তার নাম। মামলা হয়। পরে তিনি যুক্তরাষ্ট্র পাড়ি জমান। সেখানে তিনি টাফটস ও হাভার্ড ইউনিভার্সিতে আইন ও কূটনীতিতে এমএ এবং অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। তাকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয়ার পরপরই রোহিঙ্গাদের জন্য রাখাইন রাজ্যে ‘মানবিক করিডোর’ প্রদান এবং চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়ার ইস্যুটি আলোচনায় আসে। ফলে তুমুল বিতর্কের মুখে পড়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। এ সিদ্ধান্তের পেছনে ড. খলিলুর রহমানের ‘ক্যারিক্যাচার’ রয়েছে-মর্মে তুলোধোনা করা হচ্ছে তাকে। এরই এক পর্যায়ে গত ১৭ মে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) একজন বিদেশি নাগরিককে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বানিয়েছেন। আমাদের দেশের সেনাবাহিনী কীভাবে একজন বিদেশি নাগরিকের কাছে তাদের রিপোর্ট পেশ করবে? তিনি তো বাংলাদেশের জন্য নন, তার দেশের জন্য কাজ করবেন। মানবিক করিডোরের নামে বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। আপনি কার সঙ্গে পরামর্শ করে এই সিদ্ধান্ত নিলেন? ড. ইউনূসকে বলব, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে বিদায় করুন। তিনি বাংলাদেশকে অস্থির করার পরিকল্পনা করছেন। কিন্তু আমরা তা হতে দেবো না।

বিএনপি নেতার এ অভিযোগের একদিন পর (১৮ মে) প্রতিক্রিয়া দেখান ড. খলিলুর রহমান। তিনি সালাহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেন, আমি একজন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে আমার অধিকার পূর্ণমাত্রায় প্রয়োগ করতে প্রস্তুত। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. খলিল আরো বলেন, অভিযোগ প্রমাণের ভার সেই ব্যক্তির ওপর বর্তায় যিনি এটি করেছেন। প্রয়োজনে এটি আদালতের সামনে প্রমাণ করতে হবে।

নাগরিকত্ব বিধানাবলির অস্পষ্টতা : সরকার পরিচালনায় নাগরিকত্ব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অন্তর্বর্তী সরকারে তাই ‘নাগরিকত্ব’ প্রসঙ্গটি উচ্চারিত হচ্ছে জোরেসোরে। বিদ্যমান সংবিধান বলছে, কোনো বিদেশি নাগরিক সরকারে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন না।

প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী অনেকের বিরুদ্ধে বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ তথা দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখার অভিযোগ তদন্ত চলছে। সাংবিধানিক পদ, এমকি সরকারে থাকা ব্যক্তির দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণ সংবিধানে কঠোরভাবে বারিত।

সংবিধানের প্রথমভাগে (অনুচ্ছেদ ৬ এর ১) ‘নাগরিকত্ব’ প্রসঙ্গে বলা হয়েছেÑ বাংলাদেশের নাগরিকত্ব আইনের দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের নাগরিকত্বের বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা রয়েছে সংবিধানের পঞ্চম ভাগের ‘আইনসভা’-বিষয়ক অনুচ্ছেদে। এমপি নির্বাচনে ‘যোগ্যতা ও অযোগ্যতা’ বিষয়ে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৬ (২) এর (গ) তে বলা হয়েছেÑ কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি (২) কোনো ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ-সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি ওই ব্যক্তি বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন। নির্বাচিত সরকার গঠন প্রক্রিয়ায় সংবিধানের এই অনুচ্ছেদ রাখা হলেও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের বিষয়ে স্পষ্ট কিছু নেই সংবিধানে।

অন্যদিকে ‘নাগরিকত্ব’ সংক্রান্ত অনুচ্ছেদ ৬ (১) এ বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব আইন দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে। আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ কোনো আইন নেই। ১৯৫১ সালে প্রণীত একটি আইন রয়েছে। এ ছাড়া ১৯৭২ সালে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত একটি সরকারি আদেশ (অস্থায়ী বিধান) রয়েছে। যাতে দ্বৈত নাগরিকত্বকে বারিত করা হয়েছে। ১৯৭২ সালের বিধান অনুযায়ী ইউরোপ অথবা উত্তর আমেরিকা অথবা সরকার কর্তৃক গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্ধারিত অন্য যেকোনো রাষ্ট্রের নাগরিককে সরকার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিতে পারে।

১৯৫১ সালের নাগরিকত্ব আইনের ১৪ ধারায় দ্বৈত নাগরিকত্ব অথবা জাতীয়তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫১ এর ১৪(১) ধারায় বলা হয়েছেÑ এ ধারার বিধানাবলি সাপেক্ষে যদি কোনো ব্যক্তি এ আইনের বিধানাবলির অধীন বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকেন এবং একই সময়ে অন্য কোনো দেশের নাগরিক বা অধিবাসী হয়ে থাকেন, তিনি যদি না ওই দেশের আইন অনুযায়ী তার নাগরিক অথবা অধিবাসী মর্যাদা পরিত্যাগ করে ঘোষণা প্রদান না করে থাকেন, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হওয়া হতে বিরত হবেন।

১৯৫১ সালের এই আইনটি হালনাগাদ করতে জাতীয় আইন কমিশন সুপারিশ করলেও স্বাধীনতার পরবর্তী কোনো সরকারই সেটি করেনি। ফলে অনেকটা অস্পষ্টতা নিয়েই চলছে ‘নাগরিকত্ব আইন’-এর বিধান। অস্পষ্টতা থাকায় নাগরিকত্ব আইনের অপব্যাখ্যা এবং অপব্যবহারও চলছে ব্যাপক।

অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ও আইনজ্ঞ ইকতেদার আহমেদের মতে, সংবিধান অনুযায়ী বিদেশি নাগরিকত্ব বহাল রেখে এমপি হওয়ার ক্ষেত্রে বা অপরাপর সাংবিধানিক পদধারী হওয়ার ক্ষেত্রে ভাবাগতভাবে বিধিনিষেধ সাংবিধানিক পদধারীদের অনুরূপ হওয়া সত্ত্বেও অনেকে বিষয়টি উপেক্ষা করে দেশের সর্বোচ্চ আইনের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করছেন। এটি জাতির সঙ্গে উপহাস মাত্র।

সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীব ব্যারিস্টার আকবর আমীন সরকারি পদ এবং সাংবিধানিক পদ-পদবি ধারণে সাংবিধানিক বাধার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রেও বিদেশি নাগরিকত্ব গ্রহণ সাংবিধানিক বাধা রয়েছে। সংবিধানের ষষ্ঠ ভাগে বিচারক নিয়োগ বিষয়ে বলা হয়েছে। অনুচ্ছেদ ৯৫(২) অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ হইবেন না যদি তিনি বাংলাদেশের নাগরিক না হন। বাস্তবতা হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার অনেক বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন, যারা একাধারে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে বিচারক নিয়োগ বাগিয়ে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছেন। তারা আবার মার্কিনযুক্ত রাষ্ট্রেরও নাগরিক। আইনজ্ঞরা বলছেন, সংবিধান সাপেক্ষে এটি একটি প্রতারণা ও মিথ্যাচারিতা। এমনটি ঘটত না যদি ‘নাগরিকত্ব’ বিষয়ক শক্ত আইন থাকত।ইনকিলাব

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions