রাঙ্গামাটি:- জুমের আগুনে পুড়ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। আদি পদ্ধতিতে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের শত শত পাহাড়ের ঝোপ-জঙ্গল, গাছপালা কেটে আগুনে পোড়ানো হচ্ছে জুম চাষের জন্য। পাহাড়ি জুমিয়া পরিবারগুলোর লাগানো আগুনে পার্বত্যাঞ্চলের সবুজ শ্যামল প্রকৃতি পুড়ে সৃষ্টি হয়েছে নেড়া পাহাড়।
কয়েক সপ্তাহ থেকে বান্দরবান-রুমা-থানছি সড়কে, রাঙ্গামাটি সদরের সাপছড়ি, বাঘাইছড়ি উপজেলা, কাউখালি, সাজেক, খাগড়াছড়ির রামগড়, পানছড়ির বিভিন্ন এলাকার আশেপাশে অসংখ্য পাহাড় জুম চাষের জন্য আগুনে পোড়াতে দেখা গেছে। বছরের পর বছর পাহাড়ে আগুন দিয়ে জুম চাষের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীজ সম্পদ।
মৃত্তিকা ও পরিবেশবাদী সংস্থার জরিপে দেখা গেছে, জুম চাষের ফলে বনজ সম্পদ ধ্বংস হয়ে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। অন্যদিকে মাটির উর্বরতা শক্তি হ্রাস করে ভূমি ক্ষয় হচ্ছে। পাশাপাশি বন্যপ্রাণীর নিরাপদ আশ্রয়স্থল ধ্বংস হচ্ছে এবং ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এ কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপন্ন হতে চলেছে। ভূমি অবক্ষয় সম্পর্কিত একজরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে মোট পাহাড়ি ভূমির প্রায় ১৭ হাজার বর্গকিলোমিটার ভূমি এখন ক্ষয়ের মুখে। তার জন্য প্রধানত জুমচাষকে দায়ী করা হয়েছে।
১৯৯২ সালে অপর এক জরিপে উল্লেখ করা হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমিক্ষয়ের মাত্রা অত্যন্ত বিপজ্জনক। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের জরিপ অনুযায়ী পার্বত্যাঞ্চলে প্রতি হেক্টরে ১০০ থেকে ১২০ টন মাটি ক্ষয় হচ্ছে। আন্তর্জাতিক আইইসিএন সংস্থার মতে দুর্গমাঞ্চলে ১৯৬৪ হতে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২১ বছরে মৃত্তিকা সম্পদ শতকরা ১৮ ভাগ ক্ষতি সাধিত হয়েছে। উপরোক্ত সংস্থাগুলোর জরিপে ভূমিক্ষয়ের জন্য পাহাড়ের জুমচাষকেই প্রধানত দায়ী করা হয়েছে।