ডেস্ক রির্পোট:- বিগত সরকারের সময় গৃহীত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ কয়েকটি বিমানবন্দরের প্রায় ৩০০ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ বাতিল করার প্রস্তাব করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। গত ১৬ জানুয়ারি এসব কাজের চুক্তি বাতিল করে নতুনভাবে সরকার নির্ধারিত যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তা বাস্তবায়নের নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। প্রস্তাবটি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এসব কাজের মধ্যে শাহজালাল বিমানবন্দর কেন্দ্রীয় মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আবাসিক ও অনাবাসিক ভবন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিমানবন্দরের স্থাপনা নির্মাণের কাজ রয়েছে।
বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া বুধবার (৫ জানুয়ারি) বলেন, ‘সব কার্যক্রমের উপযোগিতা যাচাই করে আমরা ৩০০ কোটি টাকার কাজ বন্ধের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এগুলো আমাদের কাছে অপ্রয়োজনীয় মনে হয়েছে। তবে বেবিচককে আরও গতিশীল করা, রেভিনিউ বাড়ানো, সার্বিক কার্যক্রম অপারেশনাল রাখার জন্য সময়োপযোগী এবং কল্যাণকর সব ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’
বেবিচক সংশ্লিষ্টরা জানান, উন্নয়নমূলক কাজের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাধ্যবাধকতা, ডিপিডি না মানা, ফিজিবিলিটি স্টাডি না হওয়া এবং বিমা সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা না দেওয়ায়— এসব কাজ বাতিল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব কাজের মধ্যে রয়েছে কুর্মিটোলার ইর্শাল কলোনিতে ১৪ তলা ও কাওলায় ১৪ তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ, থার্ড টার্মিনালের সাউথ সাইডে স্টেকহোল্ডারদের জন্য অফিস ভবন, সিএটিসি কমপ্লেক্সে নতুন মসজিদ, বেবিচক হেড অফিসের পূর্বপাশে ছয় তলা অফিস ভবন নির্মাণ, বেবিচকের প্রশাসনিক এলাকায় সেমসুর অফিস কমপ্লেক্স, ওয়ার্কশপ ও ওয়্যারহাউজ, তেজগাঁওয়ে দুটি ছয় তলা ভবন, আমবাগানে নতুন মসজিদ নির্মাণ ও অন্যান্য কাজ, কুর্মিটোলায় বেবিচক কলেজের পাশে অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণ।
এ ছাড়া ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে ছয় তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ, সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে সেন্ট্রাল স্টোর, অভিযোগ সেন্টারসহ নানা অফিসের জন্য ভবন নির্মাণ, সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে ১০ তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ, ছয় তলা কোয়ার্টার নির্মাণ, কক্সবাজার বিমানবন্দরে ডি টাইপ কোয়ার্টার নির্মাণ, চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে ছয় তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ, বাগেরহাট খানজাহান আলী বিমানবন্দরে অফিস ভবন কাম রেস্টহাউজ, কার পার্কিং, কানেকটিং এবং অভ্যন্তরীণ রাস্তা ভূমি উন্নয়ন, ড্রেনেজ সিস্টেমের নির্মাণকাজ, ওসমানী বিমানবন্দরে ১০ তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ, ছয় তলা কোয়ার্টার নির্মাণ এবং কক্সবাজারে ডি টাইপ কোয়ার্টার নির্মাণকাজ রয়েছে।
বেবিচকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কার্যাদেশ দেওয়া কাজগুলোতে শুধু পূর্ত কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ই/এম কাজ অন্তর্ভুক্ত নেই। ফলে কাজ বাস্তবায়নে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া ডিপিপি প্রণয়ন বা অনুমোদন না করে কাজগুলোর প্রশাসনিক অনুমোদন, দরপত্র প্রক্রিয়াকরণ, কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে—যা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ও পরিকল্পনা শৃঙ্খলার পরিপন্থি। যেহেতু চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পরিচালন বাজেটের আওতাধীনে ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত কাজের অর্থ ব্যয়ের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিধিনিষেধ রয়েছে এবং ঠিকাচুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ সাধারণ বিমা করপোরেশন থেকে তালিকায় বর্ণিত কাজগুলোর ইনস্যুরেন্স ডকুমেন্টস পাওয়া যায়নি।
দাফতরিক/আবাসিক/মসজিদ/কলেজের অ্যাকাডেমিক ভবন সংশ্লিষ্ট কাজগুলোর ক্যাপাসিটি যথাযথ ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পাদনের মাধ্যমে পুনর্নির্ধারণ করা প্রয়োজন। সেহেতু এসব কাজের প্রশাসনিক অনুমোদন ঠিকাচুক্তি বাতিল করে নতুনভাবে সরকার নির্ধারিত যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণপূর্বক কাজগুলো বাস্তবায়নে অনুমোদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।বাংলা ট্রিবিউন