শিরোনাম
স্ত্রীকে খুন করে কুচি কুচি করে কেটে প্রেশার কুকারে সেদ্ধ করে ফেলেন : চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি স্বামীর রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম ভুট্টোর দলীয় স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা কাছে জিম্মি ছিল খাগড়াছড়ি বেরোবিতে পরীক্ষা না দিয়েও পাস ছাত্রলীগ নেত্রী গোপন কারাগারে শিশুদেরও আটক রেখেছিলেন ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় শুরু, আতঙ্ক ‘মুক্তির পথে’ বিচার বিভাগ,পূর্ণতার পথে পৃথককরণ কৌশল ব্যর্থ হচ্ছে আ’লীগের ভারতকে ছেড়ে কেন চীনের ঘনিষ্ঠ হচ্ছে শ্রীলঙ্কা? ৩৭০ কোটি ডলারের চুক্তি এক বছরে উখিয়া-টেকনাফে ১৯২ জন অপহরণ,আতঙ্কে স্থানীয় বাসিন্দা ও রোহিঙ্গা

বিপাকে গাড়ি মালিকরা, অনেকেই নিচ্ছেন প্রতারণার আশ্রয়

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১৪ দেখা হয়েছে

মোটরযানে উৎসে কর এবং পরিবেশ সারচার্জ হাসিনা সরকারের পরিপত্র বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে সরকারের বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা :: হাসিনার পরিপত্র বাতিলের দাবি

ডেস্ক রির্পোট:- স্বৈরাচার হাসিনা সরকার দেশ থেকে পালানোর কিছুদিন আগে মোটরযানের বিপরীতে উৎসে কর এবং পরিবেশ সারচার্জ সংগ্রহ সংক্রান্ত আয়কর পরিপত্র জারি করে। এতে একাধিক গাড়ি ব্যবহারকারীরা বিপাকে পড়েছেন। গত ৮ জুলাই হঠাৎ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) করনীতি উইং’র দ্বিতীয় সচিব (কর আইন-১) বাপন চন্দ্র দাস স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে দুটি গাড়ি থাকলেই প্রদান করতে হবে সারচার্জের নামে মোটা অঙ্কের টাকা। যা ৭৫ হাজার থেকে শুরু হয়ে সিসি ভেদে সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রদান করতে হচ্ছে। মোটা অঙ্কের এই টাকা প্রদানের ক্ষেত্রে গাড়ি মালিকদের রয়েছে অনীহা। অনেকেই আবার প্রত্যারণার আশ্রয় নিচ্ছেন। উৎসে কর এবং পরিবেশ সারচার্জ এড়াতে পরিবারের অন্যান্যদের নামে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করাচ্ছেন। এতে বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে এনবিআর। মোটা অঙ্কের সারচার্জের হাত থেকে বাঁচতে প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছেন অনেকে। সেজন্য হাসিনা সরকারের পরিপত্র বাতিলের দাবি তাদের।

অথচ আগের নিয়মে উৎসে কর এবং পরিবেশ সারচার্জ থাকলে একই নামে একাধিক গাড়ি রেজিস্ট্রেশন বাড়তো। বড় অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হতো না সরকার। হঠাৎ করে গাড়ির উপর মোটা অঙ্কের সারচার্জ আরোপের কারণে ফিটনেস নবায়নের পরিমাণও কমে যাচ্ছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার বিভিন্ন সময়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য অনেক সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সংশোধন করেছে অনেক। একাধিক গাড়ির উপর সারচার্জের নামে অর্থ অরোপও ছিলো তাদের বিশাল অঙ্কের লুটপাটের একটি অংশ। এই বিষয়টিকে একটি ছলচাতুরিমূলক কর্মকান্ড বলেও মনে করছেন অনেকে। তাই ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর এসব বির্তর্কিত প্রজ্ঞাপন, আদেশ, নির্দেশ বাতিল ও সংশোধন করা প্রয়োজন। সেই প্রেক্ষিতে পবিবেশ সারচার্জের নামে এনবিআরের অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়টি বাতিল বা সংশোধন উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন গাড়ি মালিক জানান, নতুন পরিপত্রে উৎসে কর এবং পরিবেশ সারচার্জ দ্বিতীয় গাড়ির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ৭৫ হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা প্রদান করতে হয়। তাই বাধ্য হয়ে দ্বিতীয় গাড়িটি নিজের নামে করিনি। পরিবারের অন্য এক সদস্যের নামে রেজিস্ট্রেশন করিয়েছি। তিনি বলেন, শুধু তিনিই নন; অধিক উৎসে কর এবং পরিবেশ সারচার্জের কারণে অনেক গাড়ির মালিকই এই সুযোগ নিচ্ছে। অপর এক গাড়ি মালিক জানান, এনবিআর’র উচিত অনতিবিলম্বে স্বেরাচার হাসিনার পরিপত্র বাতিল করা।

অবশ্য এনবিআর’র সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম বলেন, সরকার একাধিক গাড়ি ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে চাইছে। এ জন্য হয়তো অতিরিক্ত উৎসে কর এবং পরিবেশ সারচার্জ ধার্য্য করা হয়েছে। তবে হাসিনা সরকারের পরিপত্র বহাল থাকবে কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের হাতে নয়; এ নিয়ে কোন নির্দেশনা আসলে অমরা বাস্তবায়ন করবো।

বিআরটিএ বলছে, এনবিআর’র সারচার্জ আরোপ করলেও আদায়ের দায়িত্বে রয়েছে বিআরটিএ। পরিবেশ সারচার্জের নামে টাকা আদায়ের ক্ষেত্রে মালিকদের নানাভাবে বুঝাতে হচ্ছে বিআরটিএর কর্মকর্তাদের। আদায়কৃত টাকা বিআরটিএর প্রাপ্য না হলেও তাদেরকে প্রতিনিয়তই গাড়ি মালিকদের মুখোমুখি হতে হয়। কোনো করদাতার নামে একাধিক ব্যক্তিগত গাড়ি থাকলে পরিবেশ সারচার্জ বাবদ কর দিতে হবে। তবে স্ত্রী, সন্তানের নামে গাড়ি থাকলে সারচার্জ দিতে হবে না। নিজের নামে একাধিক গাড়ি থাকলে প্রথম গাড়িতে কোনো সারচার্জ আরোপ হবে না। একের অধিক প্রতিটি গাড়ির ক্ষেত্রে সারচার্জ আরোপ হবে। যেমন কোনো ব্যক্তির নামে যদি তিনটি গাড়ি থাকে, তবে দুটি গাড়িতে সারচার্জ বসবে। তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সারচার্জ আরোপের বিষয়টি স্পষ্ট করে নির্দেশনা দিলেও বিপাকে পড়েছেন বিআরটিএ ও গাড়ির মালিকরা। পরিবেশ সারচার্জের নামে যে টাকা আদায় কারা হচ্ছে তার কোনো অংশই বিআরটিএ পাবে না। এনবিআরএর নির্দেশনার প্রেক্ষিতে বিআরটিএ এই অর্থ আদায়কারী মাত্র। এদিকে প্রতিদিনই বিআরটিএর অফিসে এসে গাড়ির মালিকরা সারচার্জ নামে অতিরিক্ত টাকার কথা জেনে পরিশোধ না করে ফিরে যাচ্ছেন। অতিরিক্ত পরিবেশ সারচার্জ আরোপের কারণে অনেকেই গাড়ির ফিটনেস নবায়নকারী কর্তৃপক্ষের অফিসে এসেও টাকা জমা দিচ্ছেন না। এতে গাড়ির ফিটনেস নবায়নের জন্য অর্থ আদায়ের পরিমাণও কমে যাচ্ছ।

গাড়ির মালিকরা বলছেন, পরিবেশ সারচার্জের নামে অতিরিক্ত টাকার কারণে বাড়তি অর্থ দিতে হচ্ছে। এতে করে বাড়তি চাপ নিতে হচ্ছে। একের অধিক গাড়ি থাকলেও প্রতিটি গাড়িতেই সারচার্জের নামে টাকা দিতে হচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন গাড়ির মালিকরা। তারা আরো বলেন, ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের অনেক প্রজ্ঞাপন, আদেশ, নির্দেশ বাতিল ও সংশোধন করা হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে পবিবেশ সারচার্জের নামে এনবিআরের অতিরিক্ত টাকা আদায়ের ব্যাপারে বিষয়টি বাতিল বা সংশোধন করে সহজ শর্ত আরোপ করলে গাড়ির মালিকরা উপকৃত হতো। এছাড়াও গাড়ির ফিটনেস নবায়নও সহজ হতো।

এনবিআরের নির্দেশনা অনুসারে, একাধিক ব্যক্তিগত গাড়ির ক্ষেত্রে ১৫০০ সিসি বা ৭৫ কিলোওয়াটের ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য নিয়মিত করের (২৫ হাজার টাকা) পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও ২৫ হাজার টাকা কর দিতে হবে। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তির ১৫০০ সিসির মধ্যে দুটি গাড়ি থাকলে প্রথম গাড়ির জন্য ২৫ হাজার টাকা আর দ্বিতীয় গাড়ির জন্য ২৫ হাজার টাকার নিয়মিত করের পাশাপাশি অতিরিক্ত গাড়িটির জন্য পরিবেশ সারচার্জ বাবদ আরও ২৫ হাজার টাকা দিতে হবে। ফলে দ্বিতীয় গাড়ির ৫০ হাজার আর প্রথম গাড়ির ২৫ হাজার মিলে এক বছরে মোট কর হবে ৭৫ হাজার টাকা। দুটি গাড়ির মধ্যে করদাতার যে গাড়িতে সিসি বেশি থাকবে সেই গাড়িতেই অতিরিক্ত পরিবেশ সারচার্জ দিতে হবে। সিসিভেদে সারচার্জের পরিমাণও বাড়বে। যেমন ১৫০০ সিসি বা ৭৫ কিলোওয়াটের বেশি কিন্তু ২০০০ সিসি বা ১০০ কিলোওয়াটের কম গাড়ির ক্ষেত্র ৫০ হাজার টাকা; ২০০০ সিসি বা ১০০ কিলোওয়াটের বেশি কিন্তু ২৫০০ সিসি বা ১২৫ কিলোওয়াট পর্যন্ত ৭৫ হাজার টাকা; ২৫০০ সিসি বা ১২৫ কিলোওয়াট থেকে ৩০০০ সিসি বা ১৫০ কিলোওয়াট পর্যন্ত দেড় লাখ টাকা; ৩০০০ সিসি বা ১৫০ কিলোওয়াট থেকে ৩৫০০ সিসি বা ১৭৫ কিলোওয়াট পর্যন্ত ২ লাখ টাকা এবং ৩৫০০ সিসি বা ১৭৫ কিলোওয়াটের বেশি যেকোনো গাড়িতে সাড়ে ৩ লাখ টাকা সারচার্জ দিতে হবে। পরিবেশ সারচার্জ ফিটনেস নবায়নকারী কর্তৃপক্ষ উৎসে সংগ্রহ করবে। ফিটনেস নবায়ন করতে রিটার্ন জমার কপি জমা দিতে হয়। রিটার্ন জমার কপি ছাড়া ব্যাংকগুলো ফিটনেস নবায়ন করে না। একাধিক গাড়ির ক্ষেত্রে যে গাড়ির উপর সর্বনিম্ন হারে পরিবেশ সারচার্জ আরোপিত হবে সে গাড়ি ব্যতীত অন্যান্য গাড়ির বিপরীতে পরিবেশ সারচার্জ পরিশোধ করতে হবে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, করদাতা ব্যক্তির নামে একাধিক গাড়ি থাকলে পরিবেশ সারচার্জ দিতে হচ্ছে। নিজের নামে একাধিক গাড়ি থাকলে যে গাড়িতে সিসি বেশি থাকবে সেই গাড়িতেই পরিবেশ সারচার্জ দিতে হবে। এটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সারচার্জ আরোপের নির্দেশনা দিয়েছে। এই পরিবেশ সারচার্জের নামে যে টাকা আদায় কারা হচ্ছে তার কোনো অংশই বিআরটিএ পাবে না। এনবিআরএর নির্দেশনার প্রেক্ষিতে বিআরটিএ এই অর্থ আদায়কারী মাত্র। ফিটনেস নবায়নের সময় এই সারচার্জ আদায় করা হচ্ছে। অতিরিক্ত পরিবেশ সারচার্জ আরোপের কারণে অনেকেই গাড়ির ফিটনেস নবায়নকারী কর্তৃপক্ষের অফিসে এসেও টাকা জমা দিচ্ছেন না। এতে গাড়ির ফিটনেস নবায়নের জন্য অর্থ আদায়ের পরিমাণও কমে যাচ্ছ। ইনকিলাব

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions