ডেস্ক রির্পোট:- ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি হামলার তীব্রতা কিছুতেই কমছে না।গত ২৪ ঘন্টায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় আরও ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের সংখ্যা মোট ৪৬ হাজার ৮০০ তে পৌঁছেছে। আগামী রবিবার থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও, এর আগে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা চলছে পুরোদমে। এই হামলায় অসংখ্য নিরীহ মানুষ নিহত ও আহত হচ্ছেন এবং চরম মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
গত কয়েকদিনে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় অন্তত ৮৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২১ জন শিশু ও ২৫ জন নারী। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার ঘোষণা সত্ত্বেও, এই হামলা থামেনি। ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা আজ একটি বৈঠকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করবে বলে জানা গেছে। তবে ইসরায়েলের উগ্র-ডানপন্থী সরকারের দুই মন্ত্রী এই চুক্তি অনুমোদন হলে পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ৪৬,৮০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,১০,৪৫৩ জন আহত হয়েছেন। বিশেষত শিশুদের উপর এর ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় প্রতিদিন প্রায় ১৫ জন শিশু গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে, যা তাদের জীবনে স্থায়ী অক্ষমতার কারণ হতে পারে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
আগামী রবিবার যুদ্ধবিরতির চুক্তি কার্যকর হলে হয়তো কিছুটা শান্তির আশা করা যাচ্ছে। কিন্তু যুদ্ধবিরতির আগে এমন লাগাতার সহিংসতা মানবিক সংকটকে আরও তীব্র করছে।এই সংঘাত থেকে স্থায়ী সমাধানের জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনার প্রয়োজন। মানবতার স্বার্থে যুদ্ধবিরতির পর শান্তির পথে এগিয়ে যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা,আনাদোলু এজেন্সি