টিসিবির ৪৩ লাখ কার্ডের চাল কোথায় গেল?

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১৬ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- স্বল্প আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে ও চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে চাল বিতরণ করছে সরকার। এই কর্মসূচির আওতায় দেশের এক কোটি পরিবার প্রতি মাসে পাঁচ কেজি করে চাল পায়। এ খাতে বরাদ্দ না থাকলেও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশে টিসিবিকে চাল সরবরাহ করছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) পাঁচ মাসে এরই মধ্যে আড়াই লাখ টন চাল দেওয়া হয়েছে টিসিবিকে।
অথচ খাদ্য মন্ত্রণালয়কে এ চাল বিতরণের কোনো তথ্য দিচ্ছে না সংস্থাটি। টিসিবি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা হওয়ায় রীতি অনুযায়ী খাদ্য মন্ত্রণালয় ওই মন্ত্রণালয়কে বারবার চিঠি দিয়ে তাগিদ দেওয়ার পরও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এখনো এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানতে চাইলে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ও অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল খালেক বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি।
কিন্তু টিসিবি থেকে এখনো কোনো তথ্য জানতে পারিনি।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খাদ্য অধিদপ্তরের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে টিসিবির চাল বিতরণের তথ্য চেয়ে নির্ধারিত ছকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে প্রথম দফায় গত ২৩ অক্টোবর চিঠি দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু ওই চিঠির কোনো সাড়া দেয়নি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। একই তথ্য চেয়ে গত ১২ নভেম্বর ফের তাগিদপত্র দেওয়া হয়।

বাণিজ্য সচিবকে লেখা ওই তাগিদপত্রে বলা হয়, সারা দেশে টিসিবি কার্ডধারী এক কোটি পরিবারকে প্রতি মাসে পাঁচ কেজি করে মোট ৫০ হাজার টন চাল দেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরের গত পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) মোট আড়াই লাখ টন চাল এ খাতে বরাদ্দ করা হয়েছে। ওএমএস (টিসিবি) খাতে বিতরণ করা চালের সঠিক তথ্য সংরক্ষণের জন্য টিসিবির কার্ডধারী কতজন ভোক্তার অনুকূলে কী পরিমাণ চাল বিতরণ করা হয়েছে তার তথ্য প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হলো। তবে এ তাগিদপত্র পাওয়ার পরও তথ্য পাঠায়নি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে আবারও চিঠি/তাগিদপত্র পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে এক কোটি পরিবারের কার্ডের মধ্যে ৫৭ লাখ কার্ডকে স্মার্ট কার্ডে রূপান্তর করা হয়েছে। বাকি ৪৩ লাখ কার্ড স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। যেসব কার্ড এখনো স্মার্ট কার্ড হয়নি সেগুলোর বিপরীতে কী চাল বিতরণ করা হচ্ছে? হয়ে থাকলে ভালো কথা। কিন্তু যদি না হয়ে থাকে তাহলে সেই ৪৩ লাখ কার্ডের চাল কোথায় গেল? সে হিসাব বের করতেই আমরা বারবার চিঠি দিচ্ছি, কিন্তু কোনো জবাব পাচ্ছি না। আমরা শিগগিরই আবারও চিঠি দেব।’

খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সরকার গত বছর চাল কিনেছে কেজিপ্রতি ৪৬ টাকায়। কিন্তু এর অর্থনৈতিক মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৫৬ টাকা। চলতি অর্থবছরের গত পাঁচ মাসে এক কোটি পরিবারের মাঝে পাঁচ কেজি হারে এ পর্যন্ত আড়াই লাখ টন চাল টিসিবিকে দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। কেজিপ্রতি ৫৬ টাকা দরে আড়াই লাখ টন চালের মূল্য এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা। সে হিসাবে ৪৩ লাখ কার্ডের বিপরীতে গত পাঁচ মাসে যে পরিমাণ চাল টিসিবিকে দেওয়া হয়েছে তার মূল্য ৬০০ কোটি টাকার বেশি। বাজেটে এ খাতের কোনো বরাদ্দ না থাকলেও ওএমএসের বরাদ্দ থেকে এ চাল দেওয়া হচ্ছে।

বাণিজ্যসচিব বিদেশ সফরে থাকায় তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে হোয়াটসঅ্যাপে পরিচয় দিয়ে তাঁর বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি সাড়া দেননি।

টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমরা খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এ ধরনের কোনো চিঠি পাইনি। তবে এক কোটি পরিবারের কার্ডের মধ্যে ৫৭ লাখ কার্ড স্মার্ট কার্ডে রূপান্তর করা হয়েছে। বাকি ৪৩ লাখ কার্ড স্মার্ট কার্ডে রূপান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এ অবস্থায়ও এক কোটি কার্ডধারী সবাইকে পণ্য দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি স্থানে ৩৫০ জনের জন্য টিসিবির পণ্য বরাদ্দ থাকে। পুরনো কার্ডেই এখনো পণ্য দেওয়া হচ্ছে। আগামী জানুয়ারি থেকে স্মার্ট কার্ডে টিসিবির পণ্য দেওয়ার টার্গেট রয়েছে।’কালের কণ্ঠ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions