ডেস্ক রির্পোট:- তিন পার্বত্য জেলায় বৈষম্য নিরসন, সকল হত্যাকান্ডের বিচার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে বৈষম্যবিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা শিক্ষক সোহেল রানা, পরিবহণ শ্রমিক মামুনসহ পাহাড়ে সংঘটিত সকল হত্যাকাÐের বিচার দাবি করেন। ঐক্য পরিষদেই প্রধান সমন্বয়কারী তৌহিদ আজাদের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সাবেক সদস্য, সাবেক এমপি, চট্টগ্রাম নগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী। ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম মুজাহিদের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি জেল পারিষদের সাবেক সদস্য আবু বকর, শ্রমিক কল্যাণ পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, বান্দরবান জেলা নাগরিক পরিষদের সাবেক সভাপতি আতিকুর রহমান, ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছাদেক, ছাত্র শিবির বান্দরবান জেলার সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট হাসান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ফজলুল হক শ্রাবণ, তারেক মানোয়ার প্রমুখ।
প্রধান অতিথি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল সমস্যা সমাধানের জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিশেষ কমিশন গঠনের কোন বিকল্প নাই। ভ‚মি সমস্যা সামাধান সবাইকে সাথে নিয়ে করতে হবে।
১৯০০ সালের শাসনবিধি বাতিলসহ বৈষম্য, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গঠন ও পার্বত্য চুক্তি বাতিল করে দেশের সাংবিধানিক ধারাসমূহ প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐক্য পরিষদ।
বক্তারা বলেন, নানান বৈষম্যের শিকার হয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালি পরিবারগুলো। উপজাতি পরিবারগুলো রাষ্ট্রীয় যেসব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে, ঠিক তার বিপরীতে বাঙালি পরিবারগুলো তা পাচ্ছে না। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামকে খ্রিস্টান অধ্যুষিত রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে। তারা বলেন, আমরা পাহাড়িদের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছি। নিভৃত এলাকায় নামাজ পড়তে পারি না। আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে হেয় করা হচ্ছে। আমাদের ছেলে-মেয়েদেরও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপজাতিদের দ্বারা হেনস্তার শিকার হতে হয়। পাহাড়ে কুকি-চিন ও অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠনের ভয়ে অনেক বাঙালি পাহাড় ছেলে চলে যাচ্ছেন। এছাড়া খুন-হত্যার মতো নিয়মিত ঘটনা চলছে। রাজনৈতিকভাবে তিন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত। সকল জায়গায় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধি নিশ্চিত করা হউক।
আরো বলেন, উপজাতিদের জন্য আয়কর ফ্রি, কিন্তু বাঙালিদের আয়কর দিতে হয়। তাই অর্থনৈতিকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙালিরা গরিব থেকে গরিব হচ্ছে আর উপজাতিরা দিন দিন ধনী থেকে ধনী হচ্ছে। আয়কর প্রদানে পার্বত্য অঞ্চলের সব স¤প্রদায়ের জন্য একই নিয়ম চালু করা উচিত। বক্তারা বলেন, ব্যাংক লোন নিলে উপজাতিদের কোনো সুদ দিতে হয় না, কিন্তু বাঙালিদের চড়া সুদ দিতে হয়। উপজাতিরা ব্যাংক লোন পরিশোধ করতে না পারলে তাদের অনেক ক্ষেত্রেই তা মওকুফ করা হয়। কিন্তু বাঙালিরা পরিশোধ করতে না পারলে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হয় এবং জেলখানায় যেতে হয়। লোনের ক্ষেত্রে সব স¤প্রদায়ের মানুষের জন্য একই নীতি অবলম্বন করতে হবে।