ডেস্ক রির্পোট:- সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার পরও লেবাননে বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। এমনকি তারা আরও ভয়াবহ হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বেসামরিক নাগরিকদের জান-মাল রক্ষায় যুদ্ধের কোনো নীতিই ইহুদিবাদী রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মানছেন না। পরিস্থিতি এতই শোচনীয় যে মাত্র সপ্তাহের ব্যবধানে লেবাননে উদ্বাস্তু ১০ লাখ ছাড়িয়েছে।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেছেন, ইসরায়েলের অব্যাহত বিমান হামলা ইতিমধ্যেই লেবানন জুড়ে প্রায় এক মিলিয়ন মানুষকে তাদের বাড়িঘর ছাড়তে হয়েছে। এটি এ যাবতকালে সবচেয়ে বড় বাস্তুচ্যুতির ঘটনা।
বৈরুতে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে ইসরায়েল হত্যার দুই দিন পর রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও নিহতের খবর জানিয়েছে। সর্বশেষ তথ্যে রোববারের হামলায় ৫০ জনেরও বেশি লোক নিহত হওয়ার খবর দিয়েছে তারা। এদিকে হিজবুল্লাহ উত্তর ইসরায়েলে আরও রকেট নিক্ষেপ করেছে। তবে এতে হতাহতের ঘটনা জানা যায়নি। বেশিরভাগ রকেট আইডিএফের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করে আকাশেই ধ্বংস করে।
ইসরায়েল বলেছে, তারা ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুথিদের সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে বড় আকারের বিমান হামলা চালিয়েছে। বৈরুতের জন্য আরও ভয়াবহ দিন অপেক্ষা করছে। হিজবুল্লাহর সন্ত্রাসবাদীদের নেতাদের ধ্বংস তারা করবেই।
সপ্তাহের ব্যবধানে উদ্বাস্তু ১০ লাখ ছাড়িয়েছে
লেবাননে হামলা / আরও এক সিনিয়র কর্মকর্তাকে হত্যার দাবি
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী মিকাতি রোববারের হামলার বর্ণনা দিয়ে বলেছেন, বিমান হামলার কারণে বৈরুত এবং দক্ষিণ সীমান্ত এলাকাসহ দেশের অন্যান্য অংশ থেকে মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) বরাতে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লেবানন থেকে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ ইসরায়েলি হামলার কারণে সিরিয়ায় আশ্রয় নিয়েছে। সংস্থাটির প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্দি এক এক্স পোস্টে জানান, হামলার কারণে লেবাননের অভ্যন্তরেও দুই লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। লেবানন ও সিরিয়া সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রম চলছে।
এদিকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ হতাহতদের সামলাতে ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে পড়ছে। তারা আশ্রয়কেন্দ্র এবং হাসপাতালসহ সবখানে সহায়তা করার জন্য উদগ্রিব। কিন্তু রোগীর চাপ এতই বেশি যে তাদের পক্ষে সবাইকে সেবা দেওয়া প্রায় অসম্ভব। লেবাননের বিবিসির সংবাদদাতারা সরেজমিন ঘুরে এ তথ্য জানিয়েছেন।
২৫ বছর বয়সী আয়া আইয়ুব বিবিসিকে বলেন, তাকে তার ছয় সদস্যের পরিবারের সাথে বৈরুতের দক্ষিণ তাহউইতেত আল-গাদির শহরতলিতে পালিয়ে আসতে হয়েছে। কারণ তাদের এলাকায় থাকা খুব বিপজ্জনক ছিল। তার বাড়ির আশেপাশে বিমান হামলায় সব ভবন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি বর্তমানে বৈরুতের একটি বাড়িতে আরও ১৬ জনের সাথে আশ্রয় নিয়েছেন।
আয়া বলেন, আমরা শুক্রবার বাড়ি ছেড়ে রওনা হয়েছিলাম এবং যাওয়ার কোনো জায়গা ছিল না। আমরা রাস্তায় ছিলাম। একদল লোক আমাদের একটি আবাসিক ভবনে যেতে সাহায্য করে। এটি এখনও নির্মাণাধীন। আমরা রাতে মোমবাতি জ্বালিয়ে জড়সড় হয়ে বসে থাকি। বাইরে থেকে পানি ও খাবার এলে ভাগাভাগি করে খাই।