ডেস্ক রির্পোট:- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের বাতিল হওয়া কূটনৈতিক পাসপোর্টের ৪৬ শতাংশই রয়েছে তাঁদের স্পাউসদের (স্বামী বা স্ত্রী) নামে। গত মাসে শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ মোট ৬২৩টি কূটনৈতিক (লাল) পাসপোর্ট বাতিল করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এদিকে এসব লাল পাসপোর্ট বাতিলের পর জারি করা ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, বিধি অনুযায়ী বাতিল হওয়া লাল পাসপোর্টধারীরা সরকারের দুটি সংস্থার প্রতিবেদনের মাধ্যমে সাধারণ পাসপোর্ট পাওয়ার যোগ্য হবেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাতিল হওয়া কূটনৈতিক পাসপোর্টের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর সরকারের অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর ৪১টি, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের ২টি, চিফ হুইপ ও হুইপসহ ৬টি, সংসদ সদস্যের ৩০২টি, টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী, উপদেষ্টা এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ১৪টি। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের স্বামী-স্ত্রীদের (স্পাউস) পাসপোর্ট ছিল ২৫৮টি। মোট বাতিল করা হয় ৬২৩টি যা কূটনৈতিক পাসপোর্টের শতকরা ৪৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
লাল পাসপোর্টধারীদের বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে কোনো লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না। এ ছাড়া যেসব দেশের সঙ্গে রাষ্ট্রের চুক্তি রয়েছে সেসব দেশে যাওয়ার জন্য তাঁদের আগে থেকে ভিসাও নিতে হয় না। বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর তাঁরা অন-অ্যারাইভাল ভিসা পেয়ে থাকেন।
লাল পাসপোর্ট বাতিলের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা ও বহিরাগমন অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আলী রেজা সিদ্দিকী বলেন, কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নেওয়া হয়। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও সরকারের সচিব ও সিনিয়র সচিব এবং স্পাউসরা কূটনৈতিক পাসপোর্ট পেয়ে থাকেন। তবে তাঁদের সঠিক সংখ্যা পাসপোর্ট অধিদপ্তর বলতে পারবে।
গতকাল বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. নূরুল আনোয়ারের মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার কল করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে খুদে বার্তার মাধ্যমে মন্তব্য জানতে চেয়েও সাড়া মেলেনি।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সেলিনা বানু এবং পরিচালক (পাসপোর্ট, ভিসা ও পরিদর্শন) এ কে এম মাজহারুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁদের মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, দেশে বর্তমানে লাল পাসপোর্ট পাওয়ার যোগ্যদের মধ্যে রয়েছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য এবং তাঁদের স্বামী বা স্ত্রী। এ ছাড়া বিচারপতি, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের প্রধান, মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিদেশে বাংলাদেশি মিশনের কর্মকর্তারা লাল পাসপোর্ট পেয়ে থাকেন।
গত ২১ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, মন্ত্রিসভার সদস্য, বিলুপ্ত জাতীয় সংসদের সব সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট অনেকের কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
এদিকে বাংলাদেশের বাস্তবতার নিরিখে কূটনৈতিক পাসপোর্ট সীমিত করার দাবি জানিয়েছেন নাগরিক অধিকার ও সুশাসন নিয়ে কাজ করা সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মনে হয়, কূটনৈতিক পাসপোর্ট সবাইকে দেওয়া উচিত না। ভবিষ্যতে এসব পাসপোর্ট সীমিত করা দরকার। আজকেররপত্রিকা