ডেস্ক রির্পোট:- নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। বৃহস্পতিবার উপদেষ্টাদের শপথ পড়ানোর আগে বৈধতা প্রশ্নে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন মতামত চাইলে সুপ্রিম কোর্ট বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তা থেকে উত্তরণে এর ভিন্ন কোনো পথ খোলা নেই।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন মতামত দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে। সর্বোচ্চ আদালত থেকে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি বলেছেন– এখন দেশে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেই। এ অবস্থায় রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সুপ্রিম কোর্টের মতামত দরকার। পরে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের সাত বিচারপতি ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আলোচনা করে বৈধতার বিষয়ে সংবিধানের ১০৬ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মতামত দেন।
জানা যায়, রাষ্ট্রপতির আহ্বানে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়ালি বসেন সুপ্রিম কোর্ট। শুনানিতে অংশ নেন নবনিযুক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। শুনানি শেষে রুলিং দেন সুপ্রিম কোর্ট। এতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ বলেন, শপথ নেওয়ার সাত মাসের মধ্যে পদত্যাগ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি সাংবিধানিক সংকট তৈরি করে গেছেন। এ মুহূর্তে দেশে একটি মধ্যবর্তী সরকার দরকার। কাজেই ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের শপথে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নেই। দুর্যোগ মুহূর্তে এমনটি হতে পারে। ভবিষ্যতে যাতে এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে প্রশ্ন না ওঠে, তাই এ বৈধতা দেওয়া হলো। আপিল বিভাগের মতামতের পরই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টার শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি।
সাত সদস্যের আপিল বিভাগে প্রধান বিচারপতি ছাড়া অন্য ছয় সদস্য হলেন– বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন।
এ বিষয়ে নবনিযুক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সংবিধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের কোনো বিধান না থাকায় উল্লিখিত প্রশ্নের বিষয়ে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ প্রদত্ত উপদেষ্টামূলক এখতিয়ার প্রয়োগ করে আপিল বিভাগ মতামত দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক শূন্যতা পূরণে জরুরি প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্য পরিচালনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা ও অন্যান্য উপদেষ্টা নিযুক্ত করতে পারবেন।
সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতি যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপিল বিভাগের মতামত চাইতে পারেন। অনুচ্ছেদটি বলছে, যদি কোনো সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হয় যে, আইনের এইরূপ কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে বা উত্থাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা এমন ধরনের ও এমন জনগুরুত্বসম্পন্ন যে, সেই সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ করা প্রয়োজন, তা হলে তিনি (রাষ্ট্রপতি) প্রশ্নটি আপিল বিভাগের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করতে পারবেন এবং ওই বিভাগ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শুনানির পর প্রশ্নটি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে স্বীয় মতামত জ্ঞাপন করতে পারবেন।