ব্লকরেইড অব্যাহত ঢাকায় ২০৭ মামলায় গ্রেপ্তার ২৫৩৬

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০২৪
  • ৮০ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রিপোট:- কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দেশব্যাপী প্রায় সাড়ে পাঁচশ’ মামলা হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় ৭ হাজারের মতো আসামি গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। মহানগর থেকে শুরু করে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অভিযান চালিয়ে আসামি গ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা মহানগর পুলিশও বিভিন্ন এলাকায় ব্লক রেইড দিচ্ছে। এলাকা ভাগ করে গত কয়েকদিন ধরে বিরোধী ঘরানার রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও অন্যান্য শ্রেণি-পেশার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পুলিশের অভিযোগ যাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তারা কোটা আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সহিংসতা ও নাশকতা চালিয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের দেয়া তথ্যমতে, ডিএমপির বিভিন্ন থানা এলাকায় শনিবার পর্যন্ত ২০৭টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২ হাজার ৫৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তারের সংখ্যা বাড়ছে। কারণ পুলিশ ব্লক রেইড অব্যাহত রেখেছে।

প্রতি রাতেই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হচ্ছে। অভিযানে সেনাবাহিনী ও বিজিবি সহযোগিতা করছে। যেসব এলাকায় সহিংসতা ও নাশকতা বেশি হয়েছে ওইসব এলাকায় বেশি ব্লক রেইড দেয়া হচ্ছে। ব্লক রেইডের আগে গোয়েন্দারা তথ্য সংগ্রহ করছেন। তারপর সুবিধামতো সময়ে রেইড দেয়া হয়। ব্লক রেইডের অংশ হিসাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর যৌথ দল ওই এলাকার প্রতিটি অলিগলির রাস্তায় অবস্থান নেয়। এলাকাগুলো পুরোপুরি ঘেরাও করা হয়। যাতে করে সন্দেহভাজন ও গোয়েন্দা তথ্যের আসামিরা পালিয়ে যেতে না পারে। পরে বাসায় বাসায় অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করে থানা ও ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়।
ব্লক রেইডের সঙ্গে যুক্ত পুলিশ ও ডিবির এমন কর্মকর্তারা বলছেন, সহিংসতার সময় ধারণ করা ভিডিও ও স্টিল ছবি বিশ্লেষণ করে আসামিদের পরিচয়, নাম, মোবাইল নম্বর ও লোকেশন জেনে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। অসাবধানতাবশত নির্দোষ কাউকে আটক করা হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়া হয়। কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, সহিংসতায় সম্পৃক্ততা আছে এমন ভিডিও ফুটেজ ও ছবি রয়েছে তাদের ছাড় দেয়া হচ্ছে না। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অযথা কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারী, ইন্ধনদাতা, অর্থের যোগানদাতা, ককটেল-অস্ত্র ও নাশকতায় অংশ নিয়েছেন এমন ব্যক্তিদের খোঁজা হচ্ছে।

ডিএমপি’র সূত্রগুলো বলছে, এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর যেসব নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা হলেন- বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জহিরউদ্দিন স্বপন, আমান উল্লাহ আমান, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, রুহুল কবির রিজভী, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, রশিদুজ্জমান মিল্লাত, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, রফিকুল ইসলাম, আমিনুল হক, নাসিরউদ্দিন আহমেদ অসীম, নিপুণ রায় চৌধুরীসহ আরও অনেকে। জামায়াতের গ্রেপ্তার নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, মিয়া গোলাম পরওয়ার, মোবারক হোসাইন। বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান (পার্থ), জাতীয় দলের চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র এহসানুল হুদা, দন্ত চিকিৎসক সাখাওয়াত হোসেন ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।

ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপারেশন) বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ব্লক রেইড চলছে। তবে সেটা আমাদের প্রয়োজনমতো করছি। এটা আমাদের একটা কৌশল। যখন আমরা মনে করছি রেইড দেয়া দরকার তখনই দিচ্ছি। সেটা মধ্যরাতে বা ভোররাতে হতে পারে। প্রয়োজন মনে করলে ২ থেকে ৪ দিন বন্ধ করে আবার শুরু করবো। তিনি বলেন, যারা নাশকতা, অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িত তাদের প্রত্যেককেই আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions