নগদ টাকার সংকট, একদিনে ২৫ হাজার কোটি টাকা ধার দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪
  • ৮৯ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- সাপ্তাহিক ও সাধারণ ছুটিসহ টানা ৫ দিন ছুটির সময় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ও অর্থ সংকটের কারণে বেশিরভাগ গ্রাহক এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে পারেনি। এতে ব্যাংক খোলার পর পরই নগদ টাকার চাহিদা বেড়েছে। ফলে বুধবার ব্যাংক খোলার প্রথম দিনেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা ধার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো নিয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা, বাকি টাকা নিয়েছে অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংক এক বিজ্ঞপ্তিতে টাকা ধার দেয়ার এই তথ্য জানিয়েছে।

ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ধার নেয়া এই অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে থাকা হিসাবে ঘাটতি ও নগদ জমায় (সিআরআর) ঘাটতি হিসেবে ব্যবহার করে অনেক ব্যাংক। আবার অনেক ব্যাংক নগদ টাকা নিয়ে গ্রাহকের চাহিদা মেটায়। সাম্প্রতিক সময়ে নগদ টাকার চাহিদা বেশ বেড়ে গেছে। ব্যাংক শাখার পাশাপাশি এটিএমগুলোতেও নগদ টাকার চাহিদা বেড়েছে।

গত বৃহস্পতিবারের ব্যাংকিং কার্যক্রমের পর পাঁচ দিনের ছুটি শেষে বুধবার ব্যাংকগুলো খুলেছে। শুক্র-শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটির পর রবি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা তিন দিন সাধারণ ছুটি ছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিক্ষোভ সহিংস হওয়ার পর সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, গত বুধবার বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক রেপো, অ্যাসিউরড রেপো, অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট (এএলএস) ও শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর জন্য ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটির (আইবিএলএফ) নিলাম অনুষ্ঠিত হয়।

এই নিলামে ৭ দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় ১৪টি ব্যাংক ও ২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ৫ হাজার ৭ কোটি টাকা, ১৪ দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় ৯টি ব্যাংককে ২ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা, ২৮ দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় ১২টি ব্যাংক ও ২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ৭ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়।

এ ছাড়া গত বুধবার ১৮০ দিন মেয়াদি অ্যাসিউরড রেপো আওতায় ৩টি ব্যাংককে ৫ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা এবং ১ দিন মেয়াদি অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট আওতায় ১১টি প্রাইমারি ডিলার ব্যাংককে ৩ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়। পাশাপাশি ১৪ দিন মেয়াদি ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটির আওতায় ১টি ব্যাংককে ৪৯৭ কোটি টাকা ও ২৮ দিন মেয়াদে ৫টি ইসলামি ধারার ব্যাংককে ৯৮৪ কোটি টাকা দেয়া হয়। সব মিলিয়ে বুধবারে ২৫ হাজার ৫২১ কোটি টাকা ধার দেয়া হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ৭ দিন মেয়াদে টাকা ধারের সুদহার ছিল ৮.৬০ শতাংশ, ১৪ দিন মেয়াদে সুদহার ছিল ৮.৭০ শতাংশ ও ২৮ দিন মেয়াদি টাকা ধারের সুদহার ছিল ৮.৭৫ শতাংশ। এ ছাড়া অ্যাসিউরড রেপো ও অ্যাসিউরড লিকুইডিটির সুদহার ছিল সাড়ে ৮ শতাংশ। ইসলামি ধারার ব্যাংকের জন্য মুনাফার হার ছিল সাড়ে ৫ শতাংশ। ২৮ দিন মেয়াদি ইসলামি ধারার ব্যাংকের জন্য মুনাফার হার ছিল ৩.২৫ শতাংশ থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ।

এদিকে বুধবারের মতো বৃহস্পতিবারও প্রায় প্রতিটি ব্যাংকের শাখায় শাখায় উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। ব্যাংকগুলোতে সীমিত পরিসরে সেবা দেয়া হয়। বেশিরভাগ ব্যাংকে অর্থ লেনদেনই বেশি হয়েছে। ফলে জমা-উত্তোলনের কাউন্টারে কিছু গ্রাহক থাকলেও বাকিগুলো ছিল অনেকটাই ফাঁকা। ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার টাকা জমার চেয়ে উত্তোলনই বেশি হচ্ছে। রাজধানীর ব্যাংক পাড়া মতিঝিল, দিলকুশা, পল্টন ও ফকিরাপুল এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।

কয়েকটি ব্যাংকের বিভিন্ন শাখা ঘুরে দেখা গেছে, ব্যাংকগুলোর শাখার প্রতিটি সেবা কাউন্টারে উপস্থিত বেশির ভাগ গ্রাহকই এসেছেন টাকা উত্তোলন করতে। অনেকে আসেন বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল পরিশোধ করেছেন ব্যাংকে।

এদিকে আজ বৃহস্পতিবারও ব্যাংক খোলা ছিল বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত। এর আগে গত মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions