ডেস্ক রির্পোট:- কক্সবাজারে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে একের পর এক পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটছে। চারটি পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সবশেষ বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার শহরের কলাতলী সৈকত পাড়া এলাকা থেকে এক স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার সকালে শহরের ৬ এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডে পাহাড় ধসের ঘটনায় দু’জন এবং দুপুরে ঝিলংজায় একজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় তিন ঘণ্টার উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে মিম নামে এক স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মিম সৈকত পাড়ার সেলিমের মেয়ে। সে সৈকত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার দোলন আচার্য বলেন, পাহাড় ধসের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল থেকে লামিয়া নামে একজনকে জীবিত উদ্ধার করেছি। এ ছাড়া মিম নামে আরেকজনকে প্রায় তিন ঘণ্টার উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে মৃত উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার দুপুর একটার দিকে কক্সবাজারের ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মুহুরিপাড়া এলাকায় পাহাড় ধসে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে।
নিহত গৃহবধূর নাম লায়লা বেগম (৩৫)। তিনি বজল আহমদের স্ত্রী। তাদের দুই বছরের শিশু মোহাম্মদ জুনায়েদ গুরুতর আহত হয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নিহত গৃহবধূর মেয়ে ইয়াছমিন আক্তার বলেন, আমার মা ভাইকে নিয়ে দুপুরে ভাত খাচ্ছিল। এসময় হঠাৎ পাহাড় ধসে রান্নাঘরে পড়ে। এ ঘটনায় আমার মা ও ভাইকে মাটির ভেতর থেকে বের করা হয় এলাকাবাসীর সহায়তায়। পরে আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে। আমার ভাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ছাড়া সকাল ৭টার দিকে পাহাড় ধসের পৃথক ঘটনায় আরও দু’জনের মৃত্যু হয়। শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব পল্যান কাটা এলাকায় বসতঘরে পাহাড় ধসে মোহাম্মদ করিমের স্ত্রী জমিলা বেগম (৩০) নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিকদার বাজার এলাকায় মাটির দেয়াল চাপা পড়ে সাইফুলের ছেলে মো. হাসান (১০) মারা যায়।
নিহত জমিলার স্বামী করিম জানান, সকাল ৬টার দিকে ঘুম থেকে উঠেই নাস্তা খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল সপরিবারে। এসময় আচমকা পাহাড়ের কাদা মাটি বসতঘরে পড়লে চাপা পড়ে গৃহবধূ জমিলা। তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শিশু হাসানের পরিবার জানায়, শিশু হাসানের গায়ে পাহাড় ধসে মাটির দেয়ালসহ আসবাবপত্র পড়ে। পরে ঘটনাস্থল থেকে তাকে মৃত উদ্ধার করে স্থানীয়রা।
কক্সবাজার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম তারিকুল আলম বলেন, কক্সবাজার পৌরসভা ১৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছে। তাদের জন্য রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শহরের পাহাড়ে বসবাসরতদের মাইকিং করে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। কিন্তু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চায় না। একারণে মৃত্যুর মতো এমন ঘটনা ঘটছে। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছে, তারা নিরাপদে আছে।