ঢাকা নিয়ে নতুন চিন্তা বিএনপির,চার মহানগরে নতুন কমিটি

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ৮ জুলাই, ২০২৪
  • ৮২ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- অবশেষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ, বরিশাল এবং চট্টগ্রাম মহানগরে নতুন আহ্বায়ক (আংশিক) কমিটি ঘোষণা করেছে বিএনপি। এতে মাঠের নেতাদের মূল্যায়ন করা হয়েছে বলে নীতিনির্ধারকদের দাবি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঢাকার দুই মহানগরে দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে সাংগঠনিকভাবে পরিচিতদের বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তাদের নেতৃত্বে সবার সমন্বয়ে ঢাকায় সাংগঠনিক বলয় গড়ে তোলা হবে। অন্যদিকে চট্টগ্রাম মহানগরে বিএনপির সিনিয়র নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও আব্দুল্লাহ আল নোমান বলয়কে ঐক্যবদ্ধ করতে পারবেন এমন নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বরিশাল মহানগরেও অতীতের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করেই কমিটি হয়েছে।

চার মহানগরে নতুন কমিটি সম্পর্কে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘রাজপথের কর্মীদের আস্থার প্রতিফলন ঘটেছে, মাঠের নেতাদের উপযুক্ত মূল্যায়ন হয়েছে। যারা দায়িত্ব পেয়েছেন তারা দলের লক্ষ্য অর্জন এবং নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা পূরণে ভূমিকা রাখবেন বলে বিশ্বাস করি।’

৪ মহানগরে দায়িত্ব পেলেন যারা: চার মহানগরে বিএনপির নতুন কমিটির নেতারা হলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু এবং সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন। ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব এবং সদস্য সচিব মো. আমিনুল হক। চট্টগ্রাম মহানগরীর আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ এবং সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান। বরিশাল মহানগরের আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুক, সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া এবং ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন। এদের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নতুন আহ্বায়ক মজনু গত কমিটির সদস্য সচিব এবং তানভীর আহমেদ রবিন যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। উত্তরের নতুন আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব আগে যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন। আমিনুল হক মহানগর উত্তরের গত কমিটিতেও সদস্য সচিব ছিলেন। এ ছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরের নতুন আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ গত কমিটির সহসভাপতি এবং সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন।

বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, চার মহানগরের নতুন কমিটি নিয়ে খুব বেশি সমালোচনা শোনা যাচ্ছে না। দুই কমিটির মধ্যে উত্তরের আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব ছাড়া বাকি তিনজনই আগের কমিটিতে ছিলেন।

কারও কারও মতে, ঢাকা মহানগর উত্তরের কমিটিতে ভারসাম্য আনা হলেও দক্ষিণের কমিটি অপেক্ষাকৃত জুনিয়রদের দিয়ে করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সিনিয়ররা যাতে তাদের রাজনীতি ঠিকমতো করতে পারেন সেটি নগর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। নতুন কমিটির শীর্ষ নেতারা বলছেন, তারা যত দ্রুত সম্ভব সবার সঙ্গে কথা বলে সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড ও থানা কমিটিগুলো গঠন করবেন।

নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা, যত দ্রুত সম্ভব বিগত আন্দোলনে যারা রাজপথে সক্রিয় ছিলেন, তাদের সমন্বয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হোক। ত্যাগীদের মূল্যায়ন না হলে আগামীর আন্দোলনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান মিন্টু বলেন, ‘যারা নতুনভাবে দায়িত্বে এসেছেন, তারা সবাই রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিত। বিগত কমিটিতেও তারা ছিলেন। নিশ্চয়ই আন্দোলনে তাদের ভূমিকা দলের হাইকমান্ড মূল্যায়ন করেছেন। সুতরাং কমিটি খারাপ হয়েছে তা বলার সুযোগ নেই।’

এর আগে গত ১৩ জুন মধ্যরাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই মহানগরগুলোর আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে দেয় বিএনপি। সে সময় এ নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছিল। সে সময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছিলেন, যেসব কমিটির মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে, সেগুলো বিলুপ্ত করা হয়েছে। তবে বিএনপির অন্য একাধিক নেতার মতে, সরকার বিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থতা ও কিছু ক্ষেত্রে নেতাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই ঢাকাসহ চার মহানগর কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া একই দিনে জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। অদ্যাবধি যুবদলের নতুন কমিটি হয়নি। তবে যে কোনো সময় তা ঘোষণা করা হবে বলে সূত্রের দাবি।

ঢাকায় শক্তিশালী সংগঠন গড়ার প্রতাশ্যা: আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য ঢাকা মহানগরীকে সাংগঠনিকভাবে দুর্গ হিসেবে গড়ে তুলতে চান দুই মহানগরীর দায়িত্বপ্রাপ্ত নতুন নেতারা। তারা বলছেন, যত দ্রুত সম্ভব তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মতামত নিয়ে সবার সমন্বয়ে থানা এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব বলেন, ‘ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপিকে সুসংগঠিত করা হবে। এ জন্য শিগগিরই বিভিন্ন মোয়দোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করে নতুনভাবে কমিটি ঘোষণা করা হবে। ত্যাগী, দক্ষ, যোগ্যদের দিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হবে।’

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মো. আমিনুল হক গতকাল বলেন, ‘বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে মহানগর উত্তর বিএনপি রাজপথে থেকে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। আমাকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে কারাগারে বন্দি রাখলেও আন্দোলন অব্যাহত ছিল। জেল-জুলুম নির্যাতন উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা কর্মসূচি সক্রিয়ভাবে পালন করে গেছেন।

তিনি বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিট কমিটি পুনর্গঠনের মাধ্যমে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপিকে আরও শক্তিশালী করা হবে।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু বলেন, ‘সবার সঙ্গে আলোচনা করে যত দ্রুত সম্ভব আন্দোলনমুখী নেতৃত্ব বাছাই করব। মহানগর দক্ষিণ বিএনপি হবে দলের অতন্দ্র প্রহরী।’

ঢাকা দক্ষিণের নতুন সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন বলেন, ‘দলের আস্থা অর্জনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব।’

নয়াপল্টনে দিনভর উল্লাস : এদিকে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর গতকাল রোববার নয়াপল্টনে দিনভর উল্লাস করেছেন দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। সকাল থেকেই মহানগর বিএনপিসহ যুবদলের পদপ্রত্যাশী ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে ভিড় জমান। ছুটে যান নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দ। এ সময় তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। অনেককে কুশল বিনিময় ও ছবি তুলতে দেখা গেছে। এ সময় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহানগর বিএনপির সাবেক নেতা ইউনুস মৃধা, মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, সাইদুর রহমান মিন্টু, লতিফ উল্লাহ জাফরু, আরিফা সুলতানা রুমা, নাদিয়া পাঠান পাপনসহ বিএনপি ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।কালবেলা

 

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions