শিরোনাম
পাকিস্তানের হামলায় ধ্বংসস্তূপ আফগানিস্তানের গ্রাম, ব্যাপক হতাহত আফগানিস্তানের ওপর ক্ষেপেছে পাকিস্তান হাসিনার ক্ষমতার লোভ এবং ইতিহাসের রং বদল দাবি নিয়ে ব্যস্ত গতিহীন প্রশাসন হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল এস আলম গ্রুপের ৬ কারখানা বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আড়াই কোটি টাকা অনুদান রাঙ্গামাটি জোন’র আয়োজনে কাউখালীতে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অগ্রাধিকার, পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য আলাদা চ্যাপ্টার প্রস্তাব করবে কমিশন রাঙ্গামাটির কর্ণফুলী নদীতে নেমে ২ তরুণ নিখোঁজ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে পার্বত্যবাসী অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে-ইউপিডিএফ

সংঘবদ্ধ ধর্ষণ কেন বাড়ছে?

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০২৪
  • ১৪৬ দেখা হয়েছে

তসলিমা নাসরিন:- সংঘবদ্ধ ধর্ষণের সংখ্যা ভয়ংকর বাড়ছে বাংলাদেশে। ঘরে বাইরে, হাটে মাঠে ঘাটে কোথাও নারীরা নিরাপদ নয়। বাসে ট্রেনে কোথাও নয়। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন- ‘বেপরোয়া এই ধর্ষণের কারণ হচ্ছে সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়। দুষ্টচক্রের রাহুগ্রাস সর্বোচ্চ বেড়ে যাওয়ায় অপরাধীরা বেপরোয়া অবস্থান নিয়েছে। মাদকাসক্ত ব্যক্তি, দুর্বল ব্যক্তিত্ব ও হতাশাগ্রস্ত মানুষ এবং ক্ষমতার কারণে অহংকারী ব্যক্তিরা ধর্ষণের মতো অপকর্ম করছে। সমাজে পর্নোগ্রাফির সহজলভ্যতাও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা উসকে দিচ্ছে। এ অপরাধ রোধে দরকার শিক্ষামূলক কার্যক্রম।’

প্রতি মাসে গড়ে দশটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত পাঁচ মাসে মোট ৫০টি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে দুজন মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।
এ পর্যন্ত ৪৫টি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। কিছু ধর্ষককে গ্রেফতারও করা হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য এ নিশ্চয়ই অস্বাভাবিক এবং চমকপ্রদ খবর। যে দেশে ধর্ষণ ঘটলে পরিবারের পক্ষ থেকেই খবরটি লুকিয়ে রাখা হয়, কারণ লোকলজ্জার ভয়ে সিঁটিয়ে থাকে গোটা পরিবার, মামলা তো দূরের কথা, সে দেশে মামলা হচ্ছে এবং ধর্ষক গ্রেফতার হচ্ছে! অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই সচেতনতাকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। কয়েকটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা উল্লেখ করছি, যেগুলোর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং ধর্ষকদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এই খবরগুলো দৈনিক সংবাদপত্র থেকে সংগ্রহ করা।

এক। রাজধানীর খিলক্ষেতে গত ২৮ জুন মধ্যরাতে এক নববধূ সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। নববধূকে নিয়ে তাঁর স্বামী খিলক্ষেতের এক আত্মীয়ের বাসা থেকে ফিরছিলেন। এ সময় সাতটি যুবক তাদের পথরোধ করে। রাতের অন্ধকারে ওই এলাকার ঝোপের মধ্যে নিয়ে সেই নারীর স্বামীকে মারধরের পর মুক্তিপণের টাকা জোগাড় করতে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর সেই নববধূর ওপর সংঘবদ্ধ ধর্ষণ চালায় সাত ধর্ষক। এই ধর্ষকদের সবকটাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে আবুল কাশেম সুমন নববধূর প্রাক্তন প্রেমিক।

দুই। গত ২৫ জুন রাতে সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে এক তরুণী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম জিআরপি থানায় মামলা হওয়ায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা ওই ট্রেনে খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এস এ করপোরেশনের কর্মী।

তিন। ১৪ এপ্রিল তারিখে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে কেরানীগঞ্জের মধুসিটি হাউজিং-এ বেড়াতে যাওয়া এক চাকরিজীবী তরুণী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

চার। রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার নবীনগর হাউজিং এলাকায় প্রেমের ফাঁদ ফেলে এক তরুণীকে শিকলে বেঁধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। ২৫ দিন একটি ফ্ল্যাটে ওই তরুণীকে বেঁধে রেখে ধর্ষণ করে তরুণীর কথিত প্রেমিক ও তার বন্ধুরা।

পাঁচ। গত ১৫ মে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরী নিজের বাড়িতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। গভীর রাতে পাঁচ- ছজন লোক ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে মেয়েটিকে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করে।

সংঘবদ্ধ ধর্ষণ সম্পর্কে নারীনেত্রী ও নারীপক্ষের সদস্য শিরীন হক বলেছেন, ‘আমরা বারবার বলছি, ধর্ষণের সংস্কৃতিকে ভেঙে চুরমার করতে হবে। এ সংস্কৃতি না ভেঙে এর সঙ্গে এক বা দুজন ধর্ষককে ধরে জেলে পুরলেই এ সমস্যার সমাধান হবে না। এ সংস্কৃতির মূলে আঘাত করতে হবে। নারীকে মানুষ হিসেবে সমাজে সম্মান করতে শিখতে হবে। দিল্লিতে স্টিকার দেওয়া বেশ কিছু ট্যাক্সি আছে, যেগুলো নারী যাত্রীদের ভ্রমণের জন্য নিরাপদ। অর্থাৎ এই ট্যাক্সিচালকরা জনসম্মুখে অঙ্গীকার করছে যে, এই ট্যাক্সিটি নারীর জন্য নিরাপদ। আমাদের চালক ও হেলপারদের নিয়ে যদি আমরা এ ধরনের সচেতনতামূলক অঙ্গীকার করাতে পারি যা জনসম্মুখে দেখা যাবে এবং গণপরিবহনে যদি বাসটি নারীর জন্য নিরাপদ এমন স্টিকার লাগানো সম্ভব হয়, তবে এটি ভালো উদ্যোগ হবে। আমরা যাই করি না কেন, তা শিক্ষামূলক হতে হবে। শুধু শাস্তিমূলক কোনো উদ্যোগে এমন অপরাধ বন্ধ করা যাবে না।’

শিরীন হক ভালো কথা বলেছেন যে শুধু শাস্তি দিয়ে অপরাধ বন্ধ করা যাবে না। কিন্তু কী ধরনের শিক্ষা পুরুষকে দিতে হবে, সে ব্যাপারে আমার জানার খুব আগ্রহ। পুরুষেরা কি জানে না ধর্ষণকে একটি গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং এর শাস্তি ভয়াবহ? জানে না যে, ধর্ষণ করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হতে পারে, এমনকী ফাঁসিও হয়ে যেতে পারে? যৌন হেনস্তা করা যে অত্যন্ত গর্হিত কাজ তা কি ধর্ষকেরা না জেনে নারীকে যৌন হেনস্তা করে?

ট্যাক্সিতে বা বাসে ‘নারী যাত্রীদের জন্য নিরাপদ’ লেখা স্টিকার থাকলেই সেই ট্যাক্সি এবং বাস নিরাপদ, এই নিশ্চয়তা আমার মনে হয় না আছে। পুরুষ-চালকরা মেয়েদের ওপর হামলা করবে না এই অঙ্গীকার করলেও অঙ্গীকার ভাঙতে পারে। ধর্মগ্রন্থের ওপর হাত রেখে ‘যাহা বলিব সত্য বলিব’ অঙ্গীকার করেও অনর্গল মিথ্যে বলে লোকেরা। যারা ধর্ষণে বিশ্বাসী নয়, তাদের কিন্তু কোথাও ট্রেনিং নিতে হয় না, ‘ধর্ষণ করিব না’ এই অঙ্গীকার করে সার্টিফিকেট বা স্টিকারও জোগাড় করতে হয় না। গভীর রাতে মেয়েরা একা রাস্তায় হেঁটে গেলেও তাদের মাথায় কোনো মেয়েকে ধর্ষণের কুচিন্তা আসে না। মেয়েরা উলঙ্গ শুয়ে আছে দেখলেও তারা ধর্ষণ করতে এক পা-ও এগোয় না। কিন্তু যারা ধর্ষণে বিশ্বাসী, যারা বিশ্বাস করে মেয়েরা যৌন সামগ্রী ব্যতীত কিছু নয়, তারা ছলে বলে কৌশলে মেয়েদের ধর্ষণ করে। মেয়েদের জন্য শুধু স্টিকার লেখা ট্যাক্সি বা বাস কেন, সব ট্যাক্সি, সব বাসই তো নিরাপদ হওয়া জরুরি। নিরাপদ হওয়া জরুরি, রাজপথ, অলি গলি। নিরাপদ হওয়া জরুরি ঘর এবং বাহির, নির্জন পাহাড়ের চূড়ো আর সমুদ্রতীর। পুরুষদের শুধু ধর্ষণের শাস্তি দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের নয়, পুরুষদের সৎ এবং দায়িত্বশীল মানুষ বানাবার দায়িত্বও সরকারের। সরকার এই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না বলেই মেয়েদের ওপর পুরুষদের যৌন নির্যাতন চলছেই। ‘নারীও মানুষ, নারীকে যৌন হেনস্তা করিও না’, ইত্যাদি বলে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষকে আদৌ পরিবর্তন করা যায় না। তার চেয়ে নারী ও পুরুষের যে সংজ্ঞা মানুষকে জন্মের পর থেকেই ঘরে এবং বাইরে শেখানো হয়, সেটি না শেখালে অনেক উপকার হবে। পুরুষ শক্তিশালী, পুরুষ পেশিবহুল, পুরুষ বীর, নির্ভীক, সাহসী, পরাক্রমশালী, পৌরুষময়, পুরুষ গুরুত্বপূর্ণ। নারী দুর্বল, নারী কোমল, নারী ভঙ্গুর, নারী নির্ভরশীল, নারীর প্রধান সম্পদ তার যৌনাঙ্গ, নারীর কাজ পুরুষকে যৌনসুখ দেওয়া, পুরুষকে সেবা করা, পুরুষকে সন্তান উপহার দেওয়া, পুরুষকে ভালোবেসে জীবন উৎসর্গ করা। এই ধারণাগুলো যেন কোনো শিশুকে শেখানো না হয়।

সমাজে পুরুষ এবং নারীর ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা শৈশব থেকেই শেখা হয়ে যায় সবার। সে কারণে পুরুষেরা প্রভু এবং নারীরা দাসীর ভূমিকায় রোল প্লে করে যায় সারা জীবন। এই রোল প্লে করতে গিয়েই নারীরা নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ে, আর পুরুষেরা তাদের পেশির আর পৌরুষের জোর দেখাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এভাবেই নারীকে ধর্ষণ ক’রে নারীর ওপর ক্ষমতা আর আধিপত্য প্রদর্শন করা পুরুষের জন্য অত্যন্ত স্বাভাবিক বলে মনে হয়। এভাবেই যৌন নির্যাতন ঘটে চলেছে যুগের পর যুগ এবং শাস্তি এমনকী চরম শাস্তিও এর কোনো সমাধান দিতে পারেনি। ধর্ষকদের ফাঁসি দেওয়া হলেও ধর্ষণ বন্ধ হয় না।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা. বিধান রঞ্জন রায় বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ধর্ষকরা অপকর্মটি করে পার পেয়ে যাওয়ায় ধর্ষণের মতো অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আবার ক্ষমতাশালীরা তাদের ক্ষমতার বেপরোয়া ব্যবহার করছে, যা এ ধরনের অপরাধের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর বাইরে দেশে পর্নোগ্রাফির সহজলভ্যতা ধর্ষকদের এ কাজে উদ্দীপ্ত করছে। একজন মানুষ যদি অনবরত পর্নো দেখে তখন তার মনে এ বিষয়গুলোই ঘুরে বেড়ায়। তখন মেয়েদের নিয়ে এসব মানুষ এক ধরনের অবাস্তব সেক্সুয়াল ওরিয়েন্টেড হয়ে পড়ে এবং তার মধ্যে সেই চিন্তাই প্রাধান্য বিস্তার করতে থাকে। এ সাইকোলজিক্যাল আবহ তখন সেই মানুষদের ধর্ষণে উসকে দেয়।’

যারা পর্নো-মুভি দেখে, তারা সবাই কিন্তু ধর্ষণ করে না। আর যারা ধর্ষণ করে তাদের সবাই পর্নো-মুভি দেখে না। সুতরাং দোষটা সম্পূর্ণ পর্নোকে দেওয়া উচিত নয়। যে সব দেশে ধর্ষণের সংখ্যা কম বা নেই বললেই চলে, সেসব দেশে পর্নোগ্রাফি কিন্তু খুব সহজলভ্য। তবে সেসব দেশে নারীর সমানাধিকার অত্যন্ত বেশি। আমি তো মনে করি, যতদিন পুরুষতান্ত্রিক সমাজ টিকে থাকবে, ততদিন মেয়েরা যৌন নির্যাতনের শিকার হবে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ পুরুষকে প্রভু এবং নারীকে দাসী হিসেবে দেখে। প্রভু তার দাসীকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করবেই, বর্বর প্রথাটির এমনই নিয়ম। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বিলুপ্তি চাইলে লোকেরা ভাবে আমরা বুঝি নারীতান্ত্রিক সমাজ চাইছি। একেবারেই তা নয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বিপরীত সমাজ কিন্তু নারীতান্ত্রিক সমাজ নয়, পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বিপরীত সমাজ ‘সমানাধিকারের সমাজ, সমতার সমাজ’। যে সমাজে নারী আর পুরুষের অধিকার সর্ব ক্ষেত্রে সমান। যে সমাজে পেশির জোর, আর গলার জোরকে দশে দশ দেওয়া হয় না। যে সমাজে সহানুভূতি, সহমর্মিতা, সহনশীলতা, সহিষ্ণুতা, সংবেদনশীলতার মূল্য সবচেয়ে বেশি।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ‘গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ ইন্ডেক্স ২০২৪’ অনুসারে, জেন্ডার গ্যাপ কমার যে গতি এখন দেখা যাচ্ছে, তা বজায় থাকলে ১৩৪ বছর লাগবে নারী-পুরুষের সমতা আসতে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্বনির্ভরতায় এবং অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ক্ষেত্রে সমতা আসতে আরও ১৩৪ বছর? মাঝে মাঝে মনে হয় আরও এক হাজার বছরেও সমতার মুখ দেখবে না বাংলার নারীরা। এই একবিংশ শতাব্দীতেও মেয়েদের যৌনাঙ্গ ছাড়া আর কিছু ভাবা হচ্ছে না। এই একবিংশ শতাব্দীতেও পুরুষেরা নারীকে মহাউল্লাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার করছে। মনে রাখতে হবে এই ধর্ষকরা সমাজের বাইরের কেউ নয়। এরাই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের উগ্র প্রতিনিধি।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions