স্পোর্টস ডেস্ক:- নবম আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অপরাজেয় যাত্রা অব্যহত রেখেছে দক্ষিণ অফ্রিকা। আসরের প্রথম সেমিফাইনালে আফগানিস্তানকে সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে বড় জয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে প্রটিয়ারা।
দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিং তোপে ১১.৫ ওভারে স্রেফ ৫৬ রানে গুটিয়ে যায় আফগানিস্তানের ইনিংস। টি-টোয়েন্টিতে যা তাদের সর্বনিম্ন সংগ্রহ। ৬৭ বল হাতে রেখে ৯ উইকেটের বড় জয় নিশ্চিত করে দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজেদের ইতিহাসে যে কোনো সংস্করণের বিশ্বকাপে প্রথমবার ফাইনালে উঠল তারা।
আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে টানা ছক্কা ও চার হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন রেজা হেনড্রিক্স। প্রথম ওভারে কুইন্টন ডি কককে হারানোর পর এইডেন মার্করামকে নিয়ে ৪৩ বলে তিনি গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৫৩ রানের জুটি। হেনড্রিকস ২৫ বলে ২৯ ও মার্করাম ২১ বলে ২৩ রান করে ঐতিহাসিক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন।
ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্ট্রেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার সকালে টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নেন আফগান অধিনায়ক রশিদ খান। ব্যাটসম্যানদের জন্য এই পিচ দুঃস্বপ্নের। অসম বাউন্স, সিম মুভমেন্টে স্পিনাররাও পেয়েছেন সহায়তা।
রশিদের সিদ্ধান্তটি হোঁচট খায় প্রথম ওভারেই। রহমানউল্লাহ গুরবাজকে স্লিপে ক্যাচ বানান মার্কো ইয়েনসেন। এরপর আর উঠে দাড়াতে পারেনি এশিয়ার দলটি। ২৮ রানে তারা হারায় ষষ্ঠ উইকেট।
সপ্তম উইকেটে রশিদ খান আর নূর আহমেদ মিলে গড়েন ২২ রানের সবচেয়ে বড় জুটি। ৫০ রানে দাঁড়িয়েই হারায় ৩ উইকেট। শেষ ব্যাটার হিসেবে নাভিন-উল-হককে এলবিডব্লিউ করে আফগান ইনিংস গুটিয়ে দেন তাবরাইস শামসি।
৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে শামসিই দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা বোলার। তবে বোলিংয়ের শুরুতে সুর বেধে দেওয়া মার্কো ইয়েনসেন নেন ১৬ রানে ৩ উইকেট। দুটি করে শিকার ধরেন অন্য দুই পেসার কাগিসো রাবাদা ও আনরিক নরকিয়া।
ব্যাট হাতে দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পেরেছেন কেবল একজন, আজমতউল্লাহ ওমরজাই (১২ বলে ১০)। সর্বোচ্চ ১৩ রান এসেছে ‘মিস্টার এক্সট্রা’ থেকে।
আফগানিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশিবার শূন্য রানে আউট হওয়া ব্যাটার এখন মোহাম্মদ নবি (৮ বার)। তিনি ছাড়িয়ে গেছেন রশিদ খানকে। বিশ্বকাপেও আফগানিস্তানের হয়ে সবচেয়ে বেশিবার শূন্য রানে আউট হওয়া ব্যাটার এখন নবি (৪ বার)। এখানে তিনি ছাড়িয়ে গেছেন গুলবাদিন নাইবকে।
এতেই হয়ে গেছে দুটি রেকর্ড- আফগানরা গুটিয়ে গেছে নিজেদের সর্বনিম্ন রানে, আর ছেলেদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের নকআউট স্টেজে এটিই সর্বনিম্ন রানের ইনিংস। আগের রেকর্ডটি ২০২৩ এসিএ কাপের সেমিফাইনালে। উগান্ডার বিপক্ষে ৬২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল বতসোয়ানা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ১১.৫ ওভারে ৫৬ (গুরবাজ ০, জাদরান ২, নাইব ৯, ওমারজাই ১০, নাবি ০, খারোটে, জানাত ৮, রাশিদ ৮, নুর ০, নাভিন ২, ফারুকি ২*; ইয়ানসেন ৩-০-১৬-৩, মহারাজ ১-০-৬-০, রাবাদা ৩-১-১৪-২, নরকিয়া ৩-০-৭-২, শামসি ১.৫-০-৬-৩)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৮.৫ ওভারে ৬০/১ (ডি কক ৫, হেনড্রিকস ২৯*, মার্করাম ২৩*; নাভিন ৩-০-১৫-০, ফারুকি ২-০-১১-১, রাশিদ ১-০-৮-০, ওমারজাই ১.৫-০-১৮-০, নাইব ১-০-৮-০)
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৯ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মার্কো ইয়ানসেন