শিরোনাম
আওয়ামী লীগ পাহাড়ে বিভাজনের রাজনীতির জন্য দায়ী : ওয়াদুদ ভূইয়া রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে মোটরসাইকেল-চোলাইমদসহ গ্রেপ্তার ৩ বান্দরবানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কেএনএফের তিন সদস্য নিহত বাণিজ্য সম্ভাবনায় ‘সেভেন সিস্টার্স’ দুবাইয়ে বিপু-কাজলের ২০০ কোটির দুই ভিলা পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে,প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দিকে তাকিয়ে সবাই শিক্ষার্থীদের পরিকল্পিতভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে ঢাকা-দিল্লি পররাষ্ট্রসচিব বৈঠক ডিসেম্বরে, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনা হবে কি এবার মারা গেলেন পরীমণির প্রথম সিনেমার পরিচালক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পরামর্শ

ডিআইজি জামিল হাসান যেন আরেক ভূস্বামী

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শনিবার, ২২ জুন, ২০২৪
  • ১৭৪ দেখা হয়েছে

** রিসোর্ট করতে জমি কিনেছেন ১২০ বিঘা
** ৩০ বিঘা জমির ওপর বাড়ি, ৩৬ বিঘায় গরুর খামার-হাট
** ঢাকায় দুই ফ্ল্যাট, চারটি বিলাসবহুল গাড়ি

ডেস্ক রির্পোট:- পুলিশের বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি জামিল হাসান যেন একালের ভূস্বামী। রিসোর্ট করার জন্য জমি কিনেছেন ৪০ একর (১২০ বিঘা)। নিজের পৈতৃক বাড়িটি নতুন করে গড়েছেন ৩০ বিঘা জমির ওপর। এর পাশেই আছে অন্তত ৩৬ বিঘা জমির ওপর গরুর খামার। এর সঙ্গে আছে গরুর হাট, যে হাট থেকে ইজারা নেন তারাই। তার এসব জমি বরিশালের উজিরপুর উপজেলায়। এর বাইরে ঢাকায় তার আছে দু’টি ফ্ল্যাট, এর একটিতে তার পরিবার বসবাস করে। অন্যটি প্রস্তুত হচ্ছে। গত চার-পাঁচ বছরের মধ্যে তিনি এই সম্পদ করেছেন।

মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে এত সম্পদ কীভাবে অর্জন করা সম্ভব? জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ইত্তেফাককে বলেন, ‘একজন পুলিশ কর্মকর্তার ‘এটুকু’ সম্পদ থাকা অস্বাভাবিক নয়। কারণ তারা কাদের রোল মডেল হিসেবে মনে করেন? সাবেক আইজিপি বা পুলিশ কমিশনারকে? তাদের যদি হাজার হাজার বিঘা জমি থাকতে পারে, তাহলে একজন ডিআইজির কেন কয়েকশ’ বিঘা জমি থাকবে না? এখন এটা সিস্টেমের অংশ হয়ে গেছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যায়, ক্ষমতার অপব্যবহার বা অবৈধ লেনদেন ছাড়া বৈধ উপার্জন দিয়ে এত জমি বা ফ্ল্যাট কেনা সম্ভব নয়। এগুলো বন্ধ করতে হলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সম্পদ কেনার আগে সরকারের পূর্ব অনুমোদন নেওয়ার বিধান করা এখন সময়ের ব্যাপার। এছাড়া এগুলো বন্ধ হবে না।’

গত কয়েক দিন সরেজমিনে বরিশালের উজিরপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তৎকালীন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের আগ্রহে ২০১২ সালে ফরিদপুরের এসপি হিসেবে যোগদান করেন জামিল হাসান। এরপরই মন্ত্রীর সঙ্গে সখ্য বাড়তে থাকে, বাড়তে থাকে ক্ষমতা-প্রভাবও। প্রায়ই তিনি রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকদের অফিসে ডেকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতেন। মূলত ওই সময়ই তিনি পুরোনো বাড়ি সংস্কারের কাজে হাত দেন। তখন সেই বাড়ি নির্মাণে রড-সিমেন্ট দিতে হয়েছে ফরিদপুরের ঠিকাদারদের। একাধিক ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইত্তেফাককে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে ২০তম ব্যাচে এএসপি হিসেবে জামিল হাসান যোগদান করেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় চাকরি করেছেন তিনি। ছিলেন ক্ষমতার সর্বোচ্চ মহলের আশপাশে। চার বছরেরও বেশি সময় তিনি ফরিদপুরের এসপি হিসেবে দাপটের সঙ্গে চাকরি করেছেন। ২০২১ সালে তিনি র‍্যাব-৮ এর (বরিশাল) কমান্ডিং অফিসার হিসেবে চাকরি করার সময় গোপালগঞ্জে সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদের জমি কেনাতে তদারকি করেছেন। সে সময়ের পুলিশ প্রধানের বিশ্বস্ত হওয়ার কারণে তার প্রভাব ছিল অনেক বেশি। অধস্তন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনি চরম দুর্ব্যবহার করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচনের আগে পদোন্নতি পাওয়ার পর দায়িত্ব পান বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে। যদিও তার বাড়ি বরিশাল জেলাতেই। নিজ এলাকায় পোস্টিং হওয়ায় তার দাপট অনেক বেশি। ডিআইজি জামিল হাসানের ডাক নাম শাহীন। এলাকাবাসী তাকে এসপি শাহীন হিসেবেই চেনেন। যদিও সম্প্রতি তিনি ঘন ঘন বাড়িতে যান, ফলে তার নতুন পরিচয়ও এলাকাবাসী জানতে শুরু করেছেন।

রিসোর্ট বানানোর জন্য কিনেছেন একটি মাঠ: উজিরপুরের সাতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের একটি মাঠই কিনে ফেলেছেন জামিল হাসান। সেখানে তিনি একটি রিসোর্ট বানানোর কার্যক্রম শুরু করেছেন। অন্তত ৪০ একর অর্থাৎ ১২০ বিঘার মতো জমি তিনি কিনেছেন গত তিন-চার বছরে। আগে এগুলো ছিল ধানি জমি। বর্তমানে ওই জমির একটা অংশ ভরাট করা হয়েছে। বাকি জমি ভরাটের কাজ চলছে। ভরাট করা জমিতে একটি টিন সেড বানানো হয়েছে। সেখানে মুরগি পালন করেন ওই জমির দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মী।

গতকাল সরেজমিনে ওই জমিতে গিয়ে দেখা গেছে, গেটে তালা দেওয়া। পরে টেলিফোনে কথা হয় নিরাপত্তাকর্মী মো. হারুনের সঙ্গে। তিনি ইত্তেফাককে বলেন, ‘আমি এক মাস হলো এখানে দায়িত্ব পেয়েছি। ফলে কতটুকু জমি কেনা হয়েছে, সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারব না। টিন সেডে আমি দুই হাজার মুরগি পালন করি।’ জমি কেনা শেষ হয়েছে কি না? জানতে চাইলে হারুন জানান, ‘এটা ডিআইজি স্যার বলতে পারবেন।’

পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ রিসোর্ট কাণ্ডে যেভাবে আলোচনায় এসেছেন, ঠিক একইভাবে ডিআইজি জামিল হাসান রিসোর্টের জন্য বিপুল জমি কিনে এলাকার মানুষের মুখে মুখে সরব আলোচনায় আছেন। ওই এলাকার বাসিন্দারা ভয়ে কিছু বলতে চান না। দু-একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানালেন, অনেকে ধানি জমি বিক্রি করতে চাননি, তারপরও বাধ্য হয়ে বিক্রি করেছেন। ডিআইজি তাদের খুবই অল্প দাম দিয়েছেন। তবে জামিল হাসান রিসোর্টের জন্য জমি কেনার পর ওই এলাকার জমির দাম বেড়েছে।

স্থানীয় মৎস্য ও কৃষিজীবীরা জানিয়েছেন, গত চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে তিনি এই বিপুল জমি কিনেছেন। এত জমি কিনে ফেলে রাখার কারণে তাদের পার্শ্ববর্তী জমিতে চাষাবাদ কিংবা মত্স্য চাষ ব্যাহত হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী অনেকেই আবার আতঙ্গে আছেন রিসোর্টের কার্যক্রম শুরু হলে কখন জানি আবার তাদের জমি হাতছাড়া হয়।

রিসোর্টের আদলে বসতবাড়ি: ডিআইজি জামিল হাসানের বাড়ি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের হাবিবপুর গ্রামে। গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে তার বাড়িতে গেলে মেইন গেটে তালা দেখা যায়। আগের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ওই বাড়িতে যাওয়ার পর একজন সিকিউরিটি জানিয়েছিলেন, ভেতরে কেউ নেই। বাইরের লোকের ভেতরে প্রবেশ নিষেধ। অন্তত ৮ থেকে ১০ একর অর্থাৎ ২৪ থেকে ৩০ বিঘার ওপর তার বাড়িটি। চারদিকে বিভিন্ন ধরনের গাছ। মেইন গেট থেকে বেশ খানিকটা ভেতরে বাড়ির ভবন। ফলে দূর থেকে ঠিকভাবে বোঝা যায় না, ভবনটি তিন তলা না চারত লা। এই বাড়ির বাউন্ডারি ও ভবনটি নির্মাণের সময়ই ফরিদপুরের ঠিকাদারদের রড-সিমেন্ট দিতে হয়েছিল। জামিল হাসানের বাবা বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা ছিলেন।

বৃহস্পতিবার ওই বাড়ির সামনে যাওয়ার পরই চার-পাঁচজন যুবক এসে পরিচয় জানতে চায়। এরপর তারা কেন ডিআইজি সাহেবের বাড়ির খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে, এসব বিষয়ে প্রশ্ন করতে থাকেন। সাংবাদিক হলে এ নিয়ে নিউজ না করার জন্যও শাসিয়ে যান তারা। বাড়িটির মেইন গেইট থেকে ভেতরে তাকালে মনে হয়, এটা কোনো বিলাসবহুল রিসোর্ট। সুন্দর করে ঘাস কাটা, সারিবদ্ধভাবে লাগানো হয়েছে নানা প্রজাতির গাছ। তবে প্রতিবেশি একজন জানালেন, প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ডিআইজি সাহেব বাড়িতে আসেন। তার মা এই বাড়িতে থাকেন। কয়েক বছর আগে বাবা মারা গেছেন। পৈত্রিক বাড়ি হলেও আগে অল্প জায়গায় ছিল বাড়িটি। এখন বাড়ির পরিসর বেড়েছে। আশপাশের জমি কিনে তিনি বাড়ির পরিসর বাড়িয়েছেন।

আছে গরুর খামারের সঙ্গে হাটও: হাবিবপুর গ্রামেই বিপুল জায়গায় গড়ে তুলেছেন বিশাল গরুর খামার গড়েছেন। হাবিবপুর গ্রামের মূল রাস্তার পার্শ্বে অন্তত ১০ থেকে ১২ একর জমিতে তার এই বিশাল গরুর খামার। তার জমিতেই বসিয়েছেন গরুর হাট। বিগত পাঁচ বছর ধরে সপ্তাহে রবি ও বুধবার এ হাটে তার খামারের গরু ছাড়াও স্থানীয়রা গরু বিক্রি করেন। তবে গরু বিক্রি হিসেবে প্রতিটি গরু থেকে তাকে ৫০০ টাকা খাজনা দিতে হয়।

হাটের মধ্যের চা দোকানি ইউসুফ আলী এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলছিলেন, ‘এই হাটটি ডিআইজি জামিল স্যারের। তারা এই হাট থেকে হাসিল নেয়। এখানে গ্রামের লোকজন গরু এনে বিক্রি করতে পারেন। এর সঙ্গে ডিআইজি স্যারের খামারের গরুও বিক্রি হয়। আগে ছোট পরিসরে ছিল, এখন হাটের পরিসর বেড়েছে।’

সরেজমিনে ঐ হাটে গিয়ে দেখা গেছে, হাটের জায়গা থেকে খামারের দূরত্ব বেশ খানিকটা। তবে কাউকে খামারের কাছে যেতে দেওয়া হয় না। পুরো এলাকা সিসিটিভি দিয়ে ঘেরা। সেখানে উপস্থিত খামারের একজন পরিচয় না দিয়ে জানালেন, গরুর নানা ধরনের রোগব্যাধি হয়, এ কারণে আমরা কাউকে খামারে যেতে দিই না। দূর থেকে দেখে বোঝা গেল, খামারে এখনো ২০০-এর মতো গরু আছে। কোরবানিতে দুই-তৃতীয়াংশ গরু বিক্রি হয়ে গেছে।

ঢাকায় দুই ফ্ল্যাট ও চার গাড়ি: ঢাকার রামপুরা ও খিলগাঁওয়ে তার রয়েছে দুইটি আলিশান ফ্ল্যাট। আছে চারটি বিলাসবহুল গাড়ি। খিলগাঁও আবাসিক এলাকার খিলগাঁও প্রধান সড়কে সি-৫৯৭ নম্বর বাড়িটির নাম কপোতাক্ষ ফজল গার্ডেন। নয় তলা বিশিষ্ট অ্যাপার্টমেন্টের প্রতিটি ফ্লোরে একটি করে ফ্ল্যাট। ১ হাজার ৬০০ বর্গফুটের প্রতিটি ফ্ল্যাট। সাত বছর আগে অ্যাপার্টমেন্টটি নির্মাণকাজ শেষ হয়। এই ভবনের সাত তলার ফ্ল্যাটটিতে জামিল হাসান সপরিবারে বসবাস করেন। ফ্ল্যাটের মালিক তিনি। বিলাসবহুল এই ফ্ল্যাটটি বছর ছয়েক আগে কেনা হয়। গতকাল ঐ অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে কথা হয় কেয়ারটেকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ডিআইজি স্যার ঈদের আগে সপরিবারে বরিশাল গেছেন। তবে ঢাকায় এলে তিনি এই বাসায় থাকেন। বর্তমানে তার ফ্ল্যাটে তালা দেওয়া।

রামপুরা থানার পূর্ব রামপুরার বনশ্রী আবাসিক এলাকার ১৩ নম্বর রোডে ৩০ কাঠা জমির ওপর ১৬ তলা একটি ভবনে মোট ১২৮টি ফ্ল্যাট। প্রতিটি ফ্ল্যাট ১ হাজার ৮০০ বর্গফুট। ভবনটির নাম পুলিশ পার্ক। ঢাকা পুলিশ পরিবার কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে ভবন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ। এই ভবনের ফ্ল্যাটের মালিকরা পুলিশ সুপার পদমর্যাদা থেকে তদূর্ধ্ব পদের কর্মকর্তা। এই ভবনে জামিল হাসানের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। সমিতির উদ্যোগে নির্মাণ করা হয়েছে বলে ফ্ল্যাট গৃহিতাদের মাথাপিছু খরচ হয়েছে ২ কোটি টাকা। ঐ ভবনটিতে ইতিমধ্যে তিন জন কর্মকর্তা বসবাস করছেন। তবে বেশির ভাগ ফ্ল্যাট পুলিশ কর্মকর্তারা বিক্রি করে দিচ্ছেন। একেকটি ফ্ল্যাট ৩ কোটি টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল পুলিশ পার্ক ভবনে গিয়ে দেখা যায় এর নির্মাণকাজ প্রায় শেষ। এখন বাকি রয়েছে বিভিন্ন ফ্ল্যাটের ইন্টেরিয়র ডিজাইনের কাজ। পুলিশ পার্ক ভবনের অফিসের স্টাফরা ঈদের ছুটিতে বাড়ি গেছেন। কামরুল নামে একজন কেয়ারটেকার বলেন, এই ভবনে ফ্ল্যাটের মালিকরা এসপি, ডিআইজি ও আইজিপি পদমর্যাদার পুলিশ অফিসাররা। এটা তাদের নিজস্ব উদ্যোগে নির্মাণ করছেন। বেশির ভাগ স্যারেরা তাদের ফ্ল্যাট বিক্রি করে দিচ্ছেন। ডিআইজি জামিল হাসানের ফ্ল্যাট আছে কি না জানতে চাইলে বলেন, উনি ফ্ল্যাটে ওঠেননি। তবে বিক্রি করবেন কি না জানি না।

এসব সম্পদের ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিআইজি জামিল হাসান বলেন, ‘হাবিবপুরে বাড়িটি পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া। জমির পরিমাণ ১০ একরের বেশি। বাড়িতে যা কিছু করা হয়েছে, সেগুলো আমাদের বাড়ির সম্পদ দিয়েই। এগুলো আমার বাবা রেখে গেছেন। আর গরুর খামারের জমি আমি ২০০৮ সালে কিনেছি। সেটিরও পরিমাণও খুব সম্ভবত ৬ একরের মতো হবে।’ এত অল্প সময়ে রিসোর্টের এই বিপুল পরিমাণ জমি কীভাবে কিনেছেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার কোনো রিসোর্ট নেই। রিসোর্টের জন্য আমি কোনো জমি কিনিনি।’ ঢাকায় দুটি ফ্ল্যাটের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঢাকায় আমার একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। সেটিও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে। এর বাইরে আমার আর কোনো সম্পদ নেই।’

দুর্নীতি দমন কমিশন কী ব্যবস্থা নেবে?: একজন ডিআইজি পদমর্যাদার কর্মকর্তার এত সম্পদ কীভাবে হয়? তার ব্যাপারে কি দুর্নীতি দমন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেবে? জানতে চাইলে দুদক কমিশনার জহুরুল হক ইত্তেফাককে বলেন, ‘কারো বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এলে আমরা সেটা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করি। কোনো পুলিশ কর্মকর্তার যদি জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ থাকে, আর সেটা যদি আমাদের নজরে আসে তাহলে অবশ্যই আমরা তদন্ত করি। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ মিডিয়াতে যদি সুনির্দিষ্টভাবে তথ্য উল্লেখ করে কোনো রিপোর্ট হয়, সেটা নিয়ে আমরা কমিশন বৈঠকে আলোচনা করে অনুসন্ধানের জন্য প্রেরণ করি। এরপর অনুসন্ধান কমিটি সেই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত হলে তখন আমরা মামলা করার সিদ্ধান্ত নেই। এই ডিআইজি সাহেবের যদি অবৈধ সম্পদ থাকে এবং আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসে বা আমরা কোনো তথ্য পাই তাহলে অনুসন্ধান কমিটিতে পাঠিয়ে অবশ্যই তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ইত্তেফাক

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions