বিএনপিতে এরপর কী?

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২১ জুন, ২০২৪
  • ১০৪ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- দলীয় কার্যক্রম জোরদার ও ভবিষ্যৎ আন্দোলন কর্মসূচি সামনে রেখে একের পর এক ভেঙে দেয়া হচ্ছে বিএনপিসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটি। রদবদল করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে। এ নিয়ে বিএনপি’র ভেতরে-বাইরে চলছে নানা আলোচনা। সূত্র বলছে, দ্রুতই বিএনপি’র মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা কমিটি, অঙ্গ-সংগঠনগুলোর কমিটিও পুনর্গঠন করা হবে। দলটির স্থায়ী কমিটির শূন্যপদগুলোও পূরণ করা হতে পারে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু পদে রদবদল করার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েকজন নেতা পদোন্নতি পাওয়ার আশ্বাসও পেয়েছেন।

সূত্র জানায়, সম্প্রতি বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সরকার পতনের আন্দোলনের ব্যর্থতার অভিযোগ এনে দলটির বিভিন্ন স্তরে এবং অঙ্গসংগঠনগুলোর কমিটি ভেঙে দেয়ার প্রস্তাব করেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। পাশাপাশি বৈঠকে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের বিষয়েও আলোচনা হয়। এরই প্রেক্ষিতে কমিটিগুলো বিলুপ্ত ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে রদবদল করার সিদ্ধান্ত হয়। বিএনপি’র একজন সিনিয়র নেতা মানবজমিনকে বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেয়া এবং শূন্যপদ পূরণ একটা সাংগঠনিক প্রক্রিয়া।

এর অংশ হিসেবেই এসব কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এই প্রক্রিয়া সামনেও চলবে। কারণ দলে এই রদবদলের প্রয়োজন রয়েছে।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটিতে বাকি শূন্যপদগুলোও সামনে পূরণ করা হবে। পাশাপাশি সদ্য বিলুপ্ত হওয়া ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং যুবদলের কমিটিও শিগগিরই দেয়া হবে।

বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটিতে আরও রদবদল হবে কিনা, সেটা বিএনপি’র হাইকমান্ড সিদ্ধান্ত নিবেন। দলের গঠনতন্ত্রেও সেই নিয়ম রয়েছে।

কাউন্সিল কবে: আট বছর আগে ২০১৬ সালের মার্চে বিএনপি’র জাতীয় সম্মেলন হয়েছিল। দলটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পর কাউন্সিল করার বিধান রয়েছে। সেটা আট বছরেও হয়নি। তবে কাউন্সিল না হলেও মাঝে মাঝে শূন্য পদ পূরণ করা হয়েছে। সম্প্রতি বড় রদবদল হয়। গঠনতন্ত্রে দলের চেয়ারম্যানকে যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, সেই ক্ষমতাবলেই চেয়ারম্যান এটা করেছেন। আর বিএনপি’র কাউন্সিল শিগগিরই হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়া চলবে। পাশাপাশি সারা দেশে মেয়াদোত্তীর্ণ ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা কমিটিগুলো এবং অঙ্গসংগঠনগুলো পুনর্গঠন করা হবে। এরপর পরিবেশ ও পরিস্থিতির উপর দলের কাউন্সিল করার কথা ভাবা হচ্ছে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, কাউন্সিলের জন্য আমরা কাজ করছি এবং চেষ্টাও করেছি। কিন্তু জাতীয় কাউন্সিলের আগে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা, উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ের কমিটিগুলো গঠন করতে হবে। এটা না হলে তো কাউন্সিল করা যাবে না। যেটা সরকারের নির্যাতন ও নিপীড়নের কারণে হয়নি, এক জায়গায় আমরা একত্রিত হতে পারি নাই। পরিবেশ ও পরিস্থিতি হলে অবশ্যই কাউন্সিলে হবে।

সদ্য পদোন্নতি পাওয়া বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, জাতীয় কাউন্সিলের জন্য দেশে বিদ্যমান পরিবেশ ও পরিস্থিতি নেই। একটা সভা করতেও অনুমতির জন্য বারবার প্রশাসনের কাছে যেতে হয়। তারপরও অনুমতি পাওয়া যায় না। যেকারণে কাউন্সিল করা সম্ভব হয়নি।

গত ১৫ই জুন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটিতে ৪৫টি পদে রদবদল করা হয়। একই দিন বিদেশ বিষয়ক দুটি (চেয়ারপার্সনস ফরেন অ্যাফেয়ার্স এডভাইজরি কমিটি এবং স্পেশাল এসিস্ট্যান্ট টু দ্য চেয়ারপার্সনস ফরেন অ্যাফেয়ার্স এডভাইজরি) কমিটি গঠন হয়। এতে প্রধান করা হয় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে। এদিনই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫৭ সদস্যবিশিষ্ট আংশিক পূর্ণাঙ্গ কমিটিও ঘোষণা করা হয় এবং বিএনপি’র মিডিয়া সেলের সদস্য অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেলকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক থেকে পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়কের দায়িত্ব দেয়া হয়। এর আগে গত ১৩ই জুন সরকার পতনের একদফার আন্দোলনে ব্যর্থতার অভিযোগে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বরিশাল মহানগর বিএনপি’র চারটি আহ্বায়ক কমিটি এবং কেন্দ্রীয় যুবদলের কমিটি ভেঙে দেয়া হয়। একই দিন ছাত্রদলের ঢাকা মহানগরের চারটি কমিটিও বিলুপ্ত করা হয়। যেকোনো সময় যুবদল, ঢাকা মহানগর ছাত্রদলসহ বিএনপি’র চার ইউনিটে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তরে আলোচনায় যারা: উত্তরে আহ্বায়ক কমিটি কিংবা আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। নতুন এই কমিটিতে সভাপতি কিংবা আহ্বায়ক পদে আলোচনায় রয়েছেন সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সদস্য সচিব আমিনুল হক এবং যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব। সদস্য সচিব কিংবা সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন সাবেক যুবদল নেতা এসএম জাহাঙ্গীর এবং বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণে আলোচনায় যারা: দক্ষিণেও আহ্বায়ক কমিটি কিংবা আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। নতুন কমিটিতে সভাপতি পদে আলোচনায় রয়েছেন সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু। আর সদস্য সচিব কিংবা সাধারণ সম্পাদক পদে সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর আহমেদ রবিন এবং ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব আলোচনায় রয়েছেন।

এদিকে ঘোষণার অপেক্ষায় আছে জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি। যেকোনো মুহূর্তে কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

বিলুপ্ত হওয়া কমিটিগুলো গঠনের প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, নিশ্চয় নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। এটা খুব তাড়াতাড়ি হবে। এটা নিশ্চিত। তবে কবে নাগাদ হবে, এটা একমাত্র বিএনপি’র হাইকমান্ড বলতে পারবেন।মানবজমিন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions