বান্দরবানে:- পার্বত্য জেলা বান্দরবানে ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২১৪টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বান্দরবানে সকাল থেকে ঝড়ো বাতাসের সাথে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। রেমাল মোকাবেলায় পৌরসভা ও ফায়ার সার্ভিস এর পক্ষ থেকে জেলার বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।
জেলা শহরের বনরুপা, লাঙ্গি পাড়া, কালাঘাটা, বালাঘাটাসহ বিভিন্ন স্থানে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড়ে পাদদেশে বসবাস করছেন অধিকাংশ মানুষ। যার ফলে ঘূর্ণিঝড় কিংবা অতিবৃষ্টি প্রভাবে পাহাড় ধসে প্রাণ হারাচ্ছেন। গত বছরে জেলা বান্দরবানে ভারী বন্যায় পাহাড় ধসে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ১০ জন। তার আগে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসরত মানুষকে বার বার সরে যেতে মাইকিং ও সতর্ক জারি করা হলেও তাতেও শোনেনি অধিকাংশ মানুষ। গত বছরের মত প্রাণ হারাতে না হয় তার আগে সরে যেতে মাইকিং করছে প্রশাসন।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় ভার্চুয়ালিভাবে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন। সভায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও স্বাস্থ্য বিভাগকে সর্বোচ্চ আগাম প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য সচেতনতামূলক মাইকিং করতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং জেলা তথ্য অফিসারকে নির্দেশন দেন জেলা প্রশাসক শাহ মোহাজিদ উদ্দিন।
প্রশাসন জানিয়েছে, রেমাল ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় বান্দরবানের সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে প্রশাসন। জেলার ৭ উপজেলায় ২শ ১৪টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও শুকনা খাবার, পানি বিশুদ্ধ করন ট্যাবলেট ও ফায়ার সার্ভিস, রেডক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক টিমের কুইক রেসপন্সসহ সাতটি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা এবং মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তর তথ্য মতে, রেমাল ঘূর্ণিঝড়ের বান্দরবানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রামসহ পার্বত্য এলাকায় ভূমিধসে সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া বান্দরবানে টানা ১১ ঘণ্টা বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।
জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন মণ্ডল জানান, বান্দরবানে সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে থেমে থেমে টানা ১১ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। সেই সাথে বৃষ্টির পাশাপাশি হালকা ঝড়ো বাতাস বইবে। তবে পাহাড়ে যারা ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন সেখানে পাহাড় ধসে আশঙ্কা রয়েছে।
বান্দরবান পৌরসভার মেয়র বলেন, জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে আমরা মাঠে কাজ করছি। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।