রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলা নির্বাচনে লড়ছেন ৯ প্রার্থী

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৪ মে, ২০২৪
  • ১৫০ দেখা হয়েছে

রাঙ্গামাটি:- আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে আগামী ২৯ মে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে প্রতীক বরাদ্দ। এখন নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের মন জয়ে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। প্রার্থীদের সাদাকালো আর রঙ্গিন পোস্টার শোভা পাচ্ছে গ্রামের অলিগলি, হাট বাজার, রাস্তা-ঘাটসহ সর্বত্র। প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের গণসংযোগসহ উঠান বৈঠক ও পথসভা চলছে প্রতিদিন। আবার নিয়ম মেনেই গানে গানে ভোট চাওয়া হচ্ছে মাইকের মাধ্যমে।

এদিকে প্রচারণায় ব্যস্ত দিন পার করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে চার প্রার্থী। এর মধ্যে দুই প্রার্থীর মধ্যে বেশ লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

তারা হলেন—বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক সরকার (ঘোড়া), জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও লংগদু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল দাশ বাবু (আনারস), বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মীর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ঝান্টু (দোয়াত কলম) ও এডভোকেট মো. আবছার আলী (মোটরসাইকেল)। প্রতীক নিয়ে প্রার্থীরা রাত-দিন নির্ঘুম প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

অন্যদিকে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ (টিউবওয়েল) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মো. রকিব হোসেন (বই) ও পাহাড়িদের মধ্যে একমাত্র প্রতিনিধিত্ব করছেন কল্যাণ প্রিয় চাকমা (চশমা) প্রতীকে। প্রতীক নিয়ে সবাই উপজেলার নির্বাচনী মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন। পাশাপাশি মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ারা বেগম (ফুটবল) ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফাতেমা জিন্নাহ (কলস) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন।

চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল বারেক সরকার বলেন, অতীতেও বিভিন্ন নির্বাচনে লংগদু উপজেলাবাসী আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছিলেন। আশা করি এবারও উপজেলাবাসী আমাকে নির্বাচিত করবেন।

অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল দাশ বাবু বলেন, লংগদুকে সন্ত্রাস, দখলবাজ, চাঁদাবাজ ও মাদকমুক্ত করে একটি আধুনিক ও মডেল উপজেলায় রূপান্তর করাই হবে আমার উদ্দেশ্য।

দোয়াত কলম প্রতীকে ভোট যুদ্ধে মাঠে থাকা আরেক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মীর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, কোনো প্রকার প্রভাব সৃষ্টি না করলে বা নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক অবাধ নির্বাচন হলে আমি বিজয়ী হবো বলে আশাবাদী। এক্ষেত্রে প্রশাসনের সর্বোচ্চ নজরদারি ও সহযোগিতা কামনা করছি।

সচেতন নাগরিকরা বলেন, আমার দেখেছি বিভিন্ন সময়ে নানা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে এলাকার অনেক মানুষ দুঃখ কষ্ট করেছেন। এবার প্রার্থী বেশি থাকায় আমরা নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে যোগ্য দক্ষ ব্যক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারে বসাবো। তাই আমরা সঠিক মার্জিত ব্যক্তিকে নির্বাচিত করে উপজেলাকে আধুনিক মডেল উপজেলা হিসাবে রূপান্তর করতে চাই।

পুলিশ জানিয়েছে, নির্বাচন ঘিরে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরি করার চেষ্টা করা হলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।

লংগদু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ জানান, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়া। নির্বাচনে নিয়োজিত প্রত্যেক পুলিশ সদস্য শতভাগ পেশাদারিত্বের সাথে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবে।

সহকারী রিটার্নিং অফিসার বুলবুল আহমেদ বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পুলিশ-আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাঠে মোতায়েন থাকবে। আশা করি এবারের নির্বাচনে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।

প্রসঙ্গত, এবার লংগদু উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৭টি ইউনিয়নের ২৩টি ভোট কেন্দ্রে ৬১ হাজার ২৬৩ ভোটার রয়েছে। পুরুষ ভোটার ৩১ হাজার ৮৭৭, মহিলা ভোটার ২৯ হাজার ৩৮৬ জন। ২৩টি ভোট কেন্দ্রে ভোট কক্ষ রয়েছে ১৬১টি, তারমধ্যে স্থায়ী ভোট কক্ষ ১৪৯ টি অস্থায়ী ভোট কক্ষ ১২টি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলায় মোট ভোটার ছিল ৬০ হাজার ২৫৮জন। সংসদ নির্বাচনের তুলনায় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে লংগদু উপজেলায় ভোট বেড়েছে ১ হাজার ৫জন। প্রতিবারের মতো এবারও ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ছাড়াই ভোট গ্রহণ করা হবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions