খাগড়াছড়ি:- খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় রসালো আনারসের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। রসালো ও সুস্বাদু আনারসে সয়লাব হয়ে গেছে মাটিরাঙ্গা আনারসের বাজার। স্থানীয় বাজার ছাড়িয়ে বাজারজাত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
আনারসের মৌ মৌ গন্ধে ভরপুর হয়ে গেছে বাজার। স্থানীয় হাটবাজারে জমজমাট বিক্রি হচ্ছে আনারস। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ক্রেতা অনেক বেশি। বিক্রিও হচ্ছে আগের বছরের তুলনায় বেশি দামে।
মাটিরাঙ্গা বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, চাহিদা থাকায় প্রতিদিন পাহাড়ি অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার বাগান থেকে চাষিরা আনারস নিয়ে আসছেন বাজারে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা আনারস কিনতে বাজারে ভিড় করেন। পাইকারি ব্যবসায়ীরা তাদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। সারাদেশে মাটিরাঙ্গার আনারসের চাহিদা থাকায় ব্যবসায়ীরা আনারস কিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠান।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ২০২২-২৩ অর্থবছরে আনারসের আবাদকৃত জমির পরিমাণ ৮৫ হেক্টর জমি। উৎপাদন ১৭০০ মেট্রিকটন। এ বছর ২০২২-২৪ অর্থবছরে ৮০ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ করা হয়। আর সম্ভাব্য উৎপাদন ১৮০০ টন। উপজেলার মুসলিম পাড়া, রসুলপুর, বাইল্যাছড়ি, ১০ নম্বর ইসলামপুরসহ মাটিরাঙ্গার বেশকিছু স্থানে বাণিজ্যিকভাবে আনারসের চাষ করা হয়।
পাহাড়ি জনপদ মাটিরাঙ্গার বাজারে কথা হয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পাহাড়ি এক নারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিদিন কয়েকশ আনারস বিক্রি করতে পারি। গরমে আনারসের চাহিদা বেশি হওয়ায় ভালোই বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি আনারস ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা করে বিক্রি করি।
আনারস কিনতে আসা আব্দুর করিম বলেন, পাহাড়ের আনারস রসালো ও সুস্বাদু। তা ছাড়া দাম একটু বেশি হলেও চাহিদা ভালো। আমি পরিবারের জন্য ১০টি আনারস কিনতে আসছি। নিজে খাব একই সঙ্গে প্রতিবেশীর জন্যও দেব।
রসুলপুরের আনারস চাষি রহিম বলেন, আমি এবার তিন একর জমিতে আনারসের চাষ করি। ফলনও আশানুরূপ হয়েছে। তীব্র গরমে এ বছর দামও বেশি তাই আমি এবার লাভবান হবো বলে আশা করছি।
আরেক আনারস চাষি কাজল বলেন, এবার আমি অল্প জমিতে আনারস করেছি। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে শেষে বিক্রি করা যাবে। এবার দাম ভালো, যদি বেশি জমিতে চাষ করতাম তাহলে বেশ লাভবান হতাম।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সবুজ আলী বলেন, আনারস চাষ পাহাড়ে অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করবে। পাহাড়ে উৎপাদিত আনারস বেশ সুস্বাদু ও রসালো হয়ে থাকে। এটি স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে শেষে সমতলের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত হচ্ছে। আনারসের চাষ উদ্ধুদ্ধ করতে কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এটি লাভজনক ফসল বিধায় স্থানীয় কৃষকরা আনারস চাষে ঝুঁকছেন।