শিরোনাম
খাগড়াছড়ি থমথমে,এলাকাজুড়ে আগুনের ক্ষত,তিনজনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর ভারতের মদদে পাহাড়ে ইউপিডিএফের তাণ্ডব ইসলামী ব্যাংকের ৪৯৭১ কর্মী ওএসডি, পরে চাকরিচ্যুত ২০০ গাজায় যুদ্ধ বন্ধে সম্মত নেতানিয়াহু ট্রাম্পের ‘হামাসবিহীন গাজা’ প্রস্তাবে যুদ্ধ বন্ধে সম্মত ইসরাইল ৫ আগস্টই মুছে ফেলা হয় শেখ হাসিনার ১ হাজার কল রেকর্ড জুলাই অভ্যুত্থানে ৩ লাখ গুলি ছোড়ে পুলিশ, ঢাকায় ৯৫ হাজার রাউন্ড মাদাগাস্কারে জেন জি বিক্ষোভের মুখে সরকার ভেঙে দিলেন প্রেসিডেন্ট থমথমে খাগড়াছড়ি চলছে ১৪৪ ধারা,সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট গাজায় জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস সবকিছুই,বাদ যাচ্ছে না হাসপাতাল আশ্রয় কেন্দ্র

২০৩৫ সালের মধ্যে দেশের ১১ শতাংশ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১৮৫ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ক্যান্সার শতাব্দীর অব্যাহত এক চিকিৎসা চ্যালেঞ্জ। এটি জাতি বা ধর্ম নির্বিশেষে লাখ লাখ মানুষকে প্রভাবিত করছে। বিশ্বব্যাপী ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।

ক্যান্সার শতাব্দীর অব্যাহত এক চিকিৎসা চ্যালেঞ্জ। এটি জাতি বা ধর্ম নির্বিশেষে লাখ লাখ মানুষকে প্রভাবিত করছে। বিশ্বব্যাপী ক্যান্সার আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার প্রায় ১১ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে।

গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী ষষ্ঠ ‘স্বাস্থ্য ও কৃষিতে জৈবপ্রযুক্তি’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন ডা. তাসনিম আরা। ‘টেকসই স্বাস্থ্য ও কৃষির জন্য পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকার’ স্লোগানে সম্মেলনটি যৌথভাবে আয়োজন করে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশী বায়োটেকনোলজিস্টস (জিএনওবিবি)।

সম্মেলনে সায়েন্টিফিক সেশনে ‘টার্গেটেড থেরাপি এবং ইমিউনোথেরাপির মাধ্যমে নির্ভুল অনকোলজি ও ক্যান্সার নিরাময়’ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নিয়ে ডা. তাসনিম আরা বলেন, ‘ক্যান্সার সৃষ্টি হয় জেনেটিক অস্থিতিশীলতার মাধ্যমে, যা ধীরে ধীরে কোষের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি ঘটায় এবং ম্যালিগন্যান্ট কোষে রূপান্তরিত করে। ফলে কোষগুলো শরীরের স্বাভাবিক কোষের মতো আচরণ না করে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভাজিত হতে থাকে এবং আশপাশের টিস্যুতে ছড়িয়ে পড়ে। এ জেনেটিক পরিবর্তনগুলো ডিএনএ, আরএনএ বা প্রোটিন স্তরে ঘটতে পারে। এসব পরিবর্তন জিনগত, পরিবেশগত ও জীবনযাত্রার কারণগুলোর সংমিশ্রণে ঘটে থাকে।’

এ সময় ব্লাড ক্যান্সার নির্ণয়ে লিকুইড বায়োপসির বিষয় তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক নাদিম মাহমুদ বলেন, ‘লিকুইড বায়োপসি এমন একটি পরীক্ষা, যেটি রক্ত বা মূত্র থেকে ক্যান্সার শনাক্ত করতে পারে। মূত্রথলি ক্যান্সার নির্ণয় এখন সাধারণত সিস্টোস্কোপি দিয়ে করা হয়, যা রোগীর জন্য অস্বস্তিকর। লিকুইড বায়োপসি এ সমস্যা দূর করতে পারে। এটি রোগীর শরীরে কোনো জখম ছাড়াই মূত্রথলি ক্যান্সার শনাক্ত করতে সাহায্য করে, নির্ভুলতা বাড়ায় ও সিস্টোস্কোপির ওপর নির্ভরতা কমায়।’

আরেকটি সেশনে অ্যান্টোবায়োটিক-প্রতিরোধী জীবাণু বাড়ছে বলে জানানো হয়। এতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী জীবাণুর বৃদ্ধিতে বিকল্প চিকিৎসার ব্যবস্থা অনুসন্ধান জরুরি হয়ে পড়েছে। এ প্রেক্ষাপটে ব্যাকটেরিয়াফেজ উৎপন্ন এন্ডোলাইসিন প্রতিশ্রুতিশীল চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে দেখা দিচ্ছে। এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে—নির্দিষ্ট লক্ষ্যে কাজ করে, দ্রুত জীবাণু ধ্বংস করে ও জীবাণুতে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।

বাংলাদেশের ‍কৃষিতে লবণাক্ততা আগামীর জন্য বড় চ্যালেঞ্জে হয়ে দাঁড়াবে বলে প্রবন্ধ তুলে ধরেন ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর আনোয়ারুল আবেদীন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জলবায়ুসৃষ্ট ঝুঁকির কারণে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে, বিশেষ করে খরা ও লবণাক্ততার কারণে। এগুলো কৃষি উৎপাদনশীলতা ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। দেশের উত্তরাঞ্চলে খরা মাটির আর্দ্রতা কমাচ্ছে, এতে ফলন কমে যাচ্ছে। আবার উপকূলীয় এলাকায় সমুদ্রস্তরের বৃদ্ধি, জোয়ার প্রবেশে মাটি ও পানির লবণাক্ততা বাড়ছে। এ দুই ধরনের চাপ ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিস্থিতিতে আরো তীব্র হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এটি হলে ফসল উৎপাদন, টেকসই কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তা বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়বে। এজন্য খরা ও লবণাক্ততার প্রতি ফসলের সহনশীলতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। যেটি টেকসই খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করতে এবং জলবায়ু সহনশীলতা অর্জনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আলিমুল ইসলামের প্রবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রাণিসম্পদ ও মৎস্যের রোগ প্রতিরোধে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যাপক ব্যবহার উদ্বেগজনক পর্যায়ে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) সৃষ্টি করেছে। এসব মোকাবেলায় এখনই কৌশল গ্রহণ করতে হবে। এজন্য রোগের ডায়াগনস্টিক পদ্ধতির উন্নয়ন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অধিকসংখ্যক ভেটেরিনারি ও মৎস্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের দক্ষতা বৃদ্ধি, সহযোগিতার মাধ্যমে উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সম্প্রসারণ, রোগ প্রতিরোধে গবেষণা, জিনোমিক উন্নয়ন, নারী ও পুরুষ উভয় উদ্যোক্তার বিকাশ ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

এর আগে সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে দুদিন ব্যাপী এ সম্মেলনের ‍উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সিআর আবরার। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমাদের তরুণ বিজ্ঞানীরা প্রতিভাবান। তবে তারা সেকেলে পাঠ্যক্রম ও উন্নত ল্যাবে প্রবেশাধিকার না থাকা, বায়োইনফরমেটিকস, ন্যানোটেকনোলজি ও এআই-এর অপ্রতুলতার কারণে নিজেদের প্রমাণের সুযোগ পাচ্ছে না। তবে একটি ‘ডিপ-টেক’ জাতি হতে চাইলে আমাদের মানবসম্পদ ও অবকাঠামো উভয় খাতেই বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।’

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশ শুধু উন্নয়ন-সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি নয় বরং অস্তিত্বের হুমকিরও সম্মুখীন। জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ অবক্ষয়ের সংকট স্বাস্থ্য, খাদ্যনিরাপত্তা ও টেকসই ভবিষ্যতের ওপর সরাসরি হুমকি সৃষ্টি করছে। তবু এ চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যেই নিহিত রয়েছে বিশাল সম্ভাবনা—যেখানে মানুষ ও পৃথিবী উভয়ের সুরক্ষায় বায়োটেকনোলজিকে কাজে লাগানো যেতে পারে।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল লতিফ, জিএনওবিবির সভাপতি অধ্যাপক জেবা ইসলাম সিরাজ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবিদুর রহমান, মাল্টিমোড গ্রুপের সিইও আবদুল আউয়াল মিন্টু। পরে কয়েকটি সেশনে দিনব্যাপী সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভিন্ন বিষয়ে দেশ-বিদেশের গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা তাদের বক্তব্য ও প্রবন্ধ তুলে ধরেন।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions