হতাহতের তালিকা নিয়ে কেন এত বিভ্রান্তি

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫
  • ৩৮ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট: উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর যুুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় হতাহতদের তথ্য নিয়ে বিভ্রান্তি কাটছেই না। নিহত ও আহতদের চূড়ান্ত তথ্য প্রকাশ না হওয়ায় নানা পক্ষ এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুর্ঘটনা ঘটায় এখানে হতাহতের তথ্য লুকানোর সুযোগ নেই। তবে ঘটনার তিনদিন পরও নিহত এবং আহতদের পুরো তালিকা প্রকাশ করতে না পারায় প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এছাড়া দুর্ঘটনার উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রমে যুক্ত সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দেয়াও বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে বলে কেউ কেউ মনে করছেন। এছাড়া পতিত ফ্যাসিবাদের সমর্থক গোষ্ঠীও দুর্ঘটনা নিয়ে নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে বলে সরকারের তরফে মনে করা হচ্ছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) শুরু থেকেই আহত ও নিহতের বিষয়ে তথ্য দিয়ে আসছে গণমাধ্যমে। তাদের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী নিহতের সংখ্যা ৩১ জন। কিন্তু গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক হিসাবে নিহতের সংখ্যা দেয়া হয়েছে ২৯ জন। গতকাল বাংলাদেশ বিমান বাহিনী তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে নিহতদের নাম-পরিচয় দিয়ে শোকবার্তা জানিয়েছে। সেখানেও তারা ২৯ জন নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছে। আর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকেও ২৯ জন নিহতের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে ৬৯ জন আহতের হিসাব দেয়া হয়েছে। আর আইএসপিআর’র সর্বশেষ তালিকায় ১৬৫ জন আহত কোন কোন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে সেই হিসাব দিয়েছে। তবে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী হাসপাতালে এখন ৫৭ জন চিকিৎসাধীন আছেন। এদিকে, আহত-নিহতদের পরিসংখ্যান নিয়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঘটনার তিন দিনেও কোনো তালিকা তৈরি করেনি। তবে তালিকা করার জন্য তারা একটি কমিটি গঠন করেছে। তালিকা নিয়ে সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায় থেকেও বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য আসছে। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তথ্য গোপন করার ইচ্ছা বা প্রয়াস সেনাবাহিনীর নেই।
গতকাল সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে আহত-নিহতদের সর্বশেষ আপডেট পাঠিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে বলা হয়, ৫৭ জন আহত হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন আর নিহতের সংখ্যা ২৯। বার্তায় বলা হয় এ ঘটনায় ১৩ জনকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হয়েছে এবং নতুন করে একজন ভর্তি হয়েছে। এই হিসাবে, জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি আছেন ৪৫। হাসপাতালটিতে মারা গেছেন ১১ জন। সিএমএইচ ঢাকায় চিকিৎসাধীন ৯, নিহত ১৫। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১, নিহত নাই। শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১, নিহত নাই। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রোগী নাই, নিহত ১ জন। লুবানা জেনারেল হাসপাতাল ও কার্ডিয়াক সেন্টারে ভর্তি রোগী নাই, নিহত অজ্ঞাত ১ জন। উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও নিহত নাই। ইউনাইটেড হাসপাতালেও কোনো রোগী ভর্তি নাই, তবে হাসপাতালটিতে ১ জন নিহত। হিউম্যান এইড রিসার্স ল্যাব এন্ড হাসপাতালে ১ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (ক্লিনিক ও হাসপাতাল) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান স্বাক্ষরিত এক বার্তায় গতকাল বলা হয়, নিহত ২৯ জনের মধ্যে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মোট ১১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলো- তানভীর (১৪), আফনান ফাইয়াজ (১৪), মেহরীন চৌধুরী (৪৬), বাপ্পী (৯), মাসুকা (৪৬), এবি শামীম (১৪), সায়ান ইউসুফ (১৪), এরিকসন (১৩), আরিয়ান (১৩), নাজিয়া (১৩) ও নাফি (৯)। নিহত ১১ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিএমএইচ হাসপাতালে ১৫ জন নিহতের তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নিহতরা হলেন- রজনী ইসলাম (৩৭), শামীমুল করিম (৯), ফাতেমা আক্তার (৯), মেহনাজ আফরিন হুমায়রা (৯), সারিয়া আক্তার (১৩), নুসরাত জাহান আনিকা (১০), সাদ সালাউদ্দিন (৯), সায়মা আক্তার (৯), পাইলট তৌকির ইসলাম। এই ৯ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। হাসপাতালটিতে আগুনে পুড়ে অবয়ব হারানো ৬ জনের পরিচয় শনাক্ত না হওয়াতে মরদেহগুলো এখনো মর্গে পড়ে আছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জুনায়েদ (৯) নামের একজন শিক্ষার্থী মারা গেছে। তার মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। উত্তরার লুবানা জেনারেল হাসপাতাল ও কার্ডিয়াক সেন্টারে একজন মারা গেছেন। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তার নাম- পরিচয় দিতে পারেনি। এই মরদেহটি এখনো হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। ইউনাইটেড হাসপাতালে নুর আশফিক (১১) নামের এক শিক্ষার্থী মারা গেছেন। তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অধিদপ্তর জানিয়েছে, নিহত ২৯ জনের মধ্যে ২১ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিদের মরদেহ মর্গে রাখা আছে। এরমধ্যে ৬ জনের মরদেহ শনাক্ত করা যায়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৬৯ জনের একটি তালিকা দিয়েছে। এরমধ্যে ৫ জন শিক্ষক, ৪১ জন শিক্ষার্থী, ১ জন স্কুল স্টাফ, ১ জন ফায়ার ফাইটার, ১ জন পুলিশের এসআই, ১৪ জন সেনা সদস্য, ১ জন ইলেকট্রিশিয়ান, ১ জন আয়া ও অন্যান্য পেশার ৪ জন রয়েছেন। অধিদপ্তর জানিয়েছে, জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ৪৪ জন চিকিৎসাধীন আছেন। ভর্তি রোগীদের মধ্যে ৩৫ জন শিক্ষার্থী, ৪ জন শিক্ষক, ১ জন ইলেকট্রিশিয়ান, ১ জন আয়া। তারা হলেন- মাহতাব (১৪), মাসুমা (৩২), মাহিয়া (১৫), আয়ান (১৪), তাসনুভা মাবিন (১১), ফারজানা ইয়াসমিন (৪৫), নিশি (২৮), সুমাইয়া লরিন (৩০), মাহফুজা খাতুন (৪৫), তাসনিয়া (১০), শ্রেয়া (৯), রাইসা (১১), পায়েল (১২), নুসরাত (১২), তৌফিক (১৩), ইউশা (১১), জাকির (৫৫), সাহেবা (৯), আলবিনা (১০), মুনতাহা (১০), রুপী বড়ুয়া (১০), জাহানা (১৩), নিলয় (১৩), আশরাফুল ইসলাম (৩৭), কাব্য (১৩), কাফি আহমেদ (১০), মাকিন (১৫), আরিয়ান আফিফ (১২), রোহান (১৪), আবিদুর রহমান (১০), সামিয়া (৯), সাবিহা জাহান (১০), তাসনিয়া (১৫), মেহরিন (১১), আইমান (১০), সাইরা (১০), হাফসা খান (১১), আয়ান খান (১২), কাজী আমজাদ সাঈদ (২০), রায়হান (১৪), জারিফ (১২), সেবুজা বেগম (৪০), নাবিদ নেওয়াজ (১২), সায়মন (১৮)।

ঢাকা সিএমএইচে ২১ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জন সেনা সদস্য, ১ জন পুলিশ সদস্য, ১ জন ফায়ার ফাইটার, ১ জন স্কুল স্টাফ, ১ জন শিক্ষক, ৩ জন শিক্ষার্থী। হাসপাতালটিতে মোট ২৮ জন ভর্তি ছিলেন। এরমধ্যে ৫ জন ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন, ২ জনকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসাধীনরা হলেন- আকিব (১২), আনোয়ার (৩৪), আতিক (২১), বিল্লাল হোসেন (১২), আহসান (৪৫), হাবিবুল্লাহ (২৪), আব্দুল্লাহ (২৪), মোত্তাকিন (২৪), শাকিল (২৬), নাফিস (২২), হযরত (২২), এসআই মানিক (৪৬), ফায়ার ফাইটার সোহাগ (২৭), ফারহান শাফি (১৭), কামরুজ্জামান (২৫), শাহরিয়ার (২৪), রাকিবুল (২৩), বাবুল (২২), রবিউল (২২), কামাল (২১), তাহসান (২৪)। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে জান্নাতুল মাওয়া (১১) নামের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী সার্জারি ইউনিটে ভর্তি। শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেহেরুন নেসা (১৪) ভর্তি আছে। উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ জন ভর্তি থাকলেও তার নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া হিউম্যান এইড রিসার্স ল্যাব অ্যান্ড হাসপাতালে তাকরিম হক (১৬) নামের এক শিক্ষার্থী ভর্তি।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তর (আইএসপিআর) তাদের সর্বশেষ তথ্যে (২২শে জুলাই দুপুর ১২টা) জানিয়েছে, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতের সংখ্যা ১৬৫ জন। আর নিহতের সংখ্যা ৩১ জন। আইএসপিআর জানিয়েছে, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে আহত ৮ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই হাসপাতালেও এখন কেউ নিহত হননি। জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪৬। হাসপাতালটিতে ১০ জন নিহত হয়েছেন। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন ৩ জন, নিহত হয়েছেন ১ জন। ঢাকা সিএমএইচে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২৮ জন। এই হাসপাতালে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। উত্তরা লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৩ জন। নিহত হয়েছেন ২ জন। উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬০ জন। হাসপাতালটিতে নিহত হয়েছেন ১ জন। উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে একজন আহত চিকিৎসাধীন আছেন। এ ছাড়াও শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত ১ জন, ইউনাইটেড হাসপাতালে আহত দু’জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। ইউনাইটেড হাসপাতালে ১ জন নিহত হয়েছেন। আর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আহত তিনজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতালটিতে কেউ মারা যাননি।

তথ্য গোপন করার ইচ্ছা বা প্রয়াস সেনাবাহিনীর নেই: আইএসপিআরের পরিচালক লে. কর্নেল সামি উদ দৌলা চৌধুরী গতকাল এক বার্তায় বলেছেন, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় কোনো তথ্য গোপন করার ইচ্ছা বা প্রয়াস সেনাবাহিনীর নেই। সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। অনেকেই না বুঝে এসব গুজবে বিশ্বাস করছেন। ঘটনার পরপরই কোনো পূর্বনির্দেশনা ছাড়াই সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ চেষ্টার মাধ্যমে দ্রুত সাড়া দিয়েছে, যেমনটি সবসময় করে। এ বিষয়ে কোনো তথ্য গোপন করার ইচ্ছা বা প্রয়াস আমাদের নেই। আমি নিজে ও আইএসপিআর টিম সরাসরি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। তিনি আরও বলেন, অতএব, আইএসপিআরের পরিচালক হিসেবে আমি স্পষ্টভাবে ঘোষণা করছি, যেকোনো গণমাধ্যম চাইলেই এ বিষয়ে তদন্ত করতে পারে, সেনাবাহিনীসহ যে কাউকে ইন্টারভিউ করতে পারে বা সংশ্লিষ্ট যেকোনো স্থান পরিদর্শন করতে পারে। আমরা সর্বোচ্চ সহায়তা দিতে প্রস্তুত এবং আপনাদের যেকোনো প্রয়োজনে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করা হবে।

এর আগে মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেছিলেন, নিহতদের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি নিরসন হতে আরও সময় লাগবে। উত্তরা আধুনিক মেডিকেল থেকে একজনের মৃতদেহ সিএমএইচে পাঠানো হয়েছে। সেই সংখ্যাটি নিয়ে আমাদের তথ্যের পার্থক্য দেখা দিয়েছে। আমরা বলেছি ১৫ জন। যদিও আইএসপিআরের তথ্যে ১৬ জন বলা আছে। তথ্যের পার্থক্যগুলো দূর হতে সময় লাগবে। যেহেতু মৃতদেহ আর দেহাবশেষ নিয়ে কিছু পার্থক্য আছে, তাই বিষয়টি নিয়ে আরেকটু সময় নিয়ে জানাতে পারবো।

হতাহতের তালিকা প্রস্তুত করতে স্কুল কর্তৃপক্ষের কমিটি গঠন: মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দিয়াবাড়ি স্থায়ী ক্যাম্পাসের বিদ্যালয় ভবনে আকস্মিকভাবে বিমান বাহিনীর বিমান ভূপাতিত হওয়ার ঘটনায় হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করে ঠিকানাসহ তালিকা প্রস্তুত করতে একটি কমিটি গঠন করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার এ কমিটি গঠন করা হয়। এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এতে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনায় আহত, নিহত ও নিখোঁজ শিক্ষার্থী ও অন্যান্যদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করে ঠিকানাসহ তালিকা প্রস্তুত করার জন্য নিম্নবর্ণিত কর্মকর্তা, অনুষদ সদস্য, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলম। এ ছাড়া সদস্য হিসেবে আছেন মো. মাসুদ আলম, উপাধ্যক্ষ (প্রশাসন), খাদিজা আক্তার, প্রধান শিক্ষিকা লুৎফুন্নেসা লোপা, কো-অর্ডিনেটর মনিরুজ্জামান মোল্লা, অভিভাবক (শিক্ষার্থী: যাইমা জাহান, শ্রেণি: চতুর্থ, ক্লাস কোড: ২২৭৪); মারুফ বিন জিয়াউর রহমান, শিক্ষার্থী, বিজ্ঞান বিভাগ, দ্বাদশ শ্রেণি, মো. তাসনিম ভূঁইয়া প্রতীক, শিক্ষার্থী, বিজ্ঞান বিভাগ, দ্বাদশ শ্রেণি)। এ কমিটি আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাদের কাজ সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দেবেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গতকাল তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, বড় বড় দুর্যোগ নিয়ে রিপোর্ট করা একজন হিসেবে আমি বলে দিতে পারি যে, বাংলাদেশে হতাহতের সংখ্যা গোপন করা কার্যত অসম্ভব। পোস্টে তিনি বলেছেন, ২০০২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে অসংখ্য বড় বড় দুর্যোগ নিয়ে রিপোর্ট করা একজন হিসেবে আমি বলে দিতে পারি যে, বাংলাদেশে হতাহতের সংখ্যা গোপন করা কার্যত অসম্ভব। প্রাথমিকভাবে, পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জনদের নিখোঁজ হিসেবে রিপোর্ট করে। তবে হাসপাতাল এবং কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া গেলে তারা সাধারণত তাদের আত্মীয়দের শনাক্ত করতে পারে। এক্ষেত্রে মাইলস্টোন কলেজ প্রতিদিনের উপস্থিতির রেকর্ড ক্রস-রেফারেন্স করে হিসাব বহির্ভূতদের শনাক্ত করতে পারে। পোস্টে তিনি জানান, গতকাল স্কুল পরিদর্শনের সময় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দু’জন উপদেষ্টা স্কুল ক্যাম্পাসে একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপনের নির্দেশ দেন। এই সুবিধাটি আহত এবং মৃতদের সংখ্যা সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট সরবরাহ করবে, স্কুলের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে পরিসংখ্যান মেলাবে। গুরুত্বপূর্ণভাবে, উপদেষ্টারা কন্ট্রোল রুমের কার্যক্রমে বর্তমান শিক্ষার্থী এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছিলেন। আমরা আশা করছি আজ এটি পুরোপুরি কার্যকর হবে। তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণকারীদের অবস্থা সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট সরবরাহ করছে এবং সেনাবাহিনী এই প্রচেষ্টায় অবদান রাখছে। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি যে, হতাহতের পরিসংখ্যান কম করে দেখানোর কোনো কারণ সরকারের নেই।মানবজমিন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions