শিরোনাম
রাঙ্গামাটিতে বিচারকের স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু বাসায় মৃতদেহ উদ্ধার আদালতে সাবেক সিইসি নুরুল হুদার দায় স্বীকার মুক্তি পেলেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ৫৬ বন্দি রাঙ্গামাটিতে দুই অটোরিকশার সংঘর্ষে মাছ ব্যবসায়ী নিহত শব্দনিরোধক কক্ষে যমটুপি পরিয়ে ১০ কায়দায় চলত নির্যাতন—গুম কমিশনের প্রতিবেদন পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা ও যুগ্ম সচিব কংকন চাকমার যেসব অভিযোগে অপসারণ চাইছে পার্বত্যবাসী জুলাই অভ্যুত্থান ছিল রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেয়া–প্রধান উপদেষ্টা আরও উত্তপ্ত হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্ক দুদকের জালে তানভীরসহ ৩৬ প্রেস মালিক চেতনার মানচিত্রে রক্তাক্ত গণ-অভ্যুত্থান

একীভূত হচ্ছে ঘুণে ধরা ১১ আর্থিক প্রতিষ্ঠান

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫
  • ৭৯ দেখা হয়েছে

২২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন করার চিন্তা
১১ প্রতিষ্ঠানের মোট ঋণের ৭৫ থেকে ৯৯ শতাংশ খেলাপি
মোট ঋণের অর্ধেকের বেশি খেলাপি ২২ প্রতিষ্ঠানের

ডেস্ক রির্পোট:- ব্যাংকবহির্ভূত কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন মৃতপ্রায়। তারা অনেক দিন ধরে আমানতকারীর অর্থ ফেরত দিতে পারছে না। পাচ্ছে না নতুন আমানতও। এমন পরিস্থিতিতে এই খাতকে বাঁচাতে ধাপে ধাপে মোট ২২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন করার চিন্তা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর মধ্যে প্রথম ধাপে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে থাকা ১১ আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে একীভূত করা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক মতে, দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন সময়ে দেওয়া ঋণের বড় অংশ অনাদায়ি হয়ে গেছে। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হিসাবে দেশের মোট ৩৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১টির বিতরণ করা ঋণের ৭৫ থেকে ৯৯ শতাংশ খেলাপি।
এর মধ্যে পাঁচ প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ৯৫ শতাংশের বেশি। আর মোট ঋণের অর্ধেক বা এর বেশি খেলাপি ২২ প্রতিষ্ঠানের। সব মিলিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট ঋণের প্রায় ৩৬ শতাংশ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।

জানা যায়, ২০১৭ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার পতন হওয়ার আগ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের ব্যাংক খাত লুট হয়।
একই সময়ে লুট হয় দেশের ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এর মধ্যে পিপলস লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, আভিভা ফাইন্যান্সসহ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান লুট করে পি কে হালদার ও চট্টগ্রামভিত্তিক বিতর্কিত শিল্প গ্রুপ এস আলম। এ জন্য সরকার পরিবর্তনের পর ২৪টি ব্যাংক ও ২২ আর্থিক প্রতিষ্ঠান সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রাথমিক ধাপে ২২ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১টিকে একীভূত করাসহ পুনর্গঠন করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রথম ধাপে ব্যাংক খাত সংস্কারে হাত দেয়।
এখন নতুন করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে আদালতের মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

আর বাংলাদেশ ব্যাংক আভিভা ফাইন্যান্স, এফএএস ফাইন্যান্সসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে। এ ছাড়া লুটপাট হওয়া খারাপ প্রতিষ্ঠানগুলোর পর্ষদও ধীরে ধীরে পুনর্গঠন করে দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, প্রথম ধাপে ১১ আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে পুনর্গঠন করা হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ দেওয়া হবে। এরপর যদি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অবস্থার উন্নতি না হয়, তাহলে একীভূত করা হতে পারে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে কথা বলেছি। এই খাতকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কারের আওতায় আনা হবে। একই সঙ্গে দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে একীভূত করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমিয়ে আনা হবে। এ জন্য গভর্নর স্যারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হচ্ছে। আশা করি দ্রুতই কোনো সিদ্ধান্তের মধ্যে আমরা যেতে পারব।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্য একজন কর্মকর্তা বলেন, দেশের ৩৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই রুগ্ণ। বাংলাদেশ ব্যাংক পিপলস লিজিংসহ কময়কটি এরই মধ্যে অবসায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্ট থেকে তা আটকে দেওয়া হয়েছে। এখন নতুন আইনের আওতায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে একীভূত করা হবে। অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের মালিকানায় নিয়ে পুনর্গঠন করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, দেশের ব্যাংক খাতের তুলনায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবস্থান খুবই নগণ্য। এ জন্য আমরা আগে ব্যাংক খাত সংস্কার করব। এরপর এনবিএফআইগুলোর দিকে নজর দেওয়া হবে। তবে এখনো এনবিএফআইগুলোর সংস্কার চলমান।

প্রসঙ্গত, ঋণ জালিয়াতিসহ নানা অনিয়মের কারণে সাধারণ মানুষ এখন আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আগের মতো আমানত রাখতে ভরসা পাচ্ছে না। তাই ক্রমেই কমছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের সংখ্যা। প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের নাম আর্থিক খাতে খুবই সুপরিচিত। কারণ আর্থিক প্রতিষ্ঠান লুটের শীর্ষে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের ক্যাপ্টেন ছিলেন পি কে হালদার। যদিও তিনি এখন ভারতের কারাগারে বন্দি। কাগুজে কম্পানি খুলে সুকৌশলে অর্থ লুট করে ভারতে পালিয়ে যান তিনি। অস্তিত্বহীন কাগুজে প্রতিষ্ঠান তৈরি করে কিভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অর্থ লোপাট করে সেগুলোর মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া যায়, তা দেখিয়ে দিয়েছেন পি কে হালদার।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions