শিরোনাম
পাকিস্তানের ধাওয়া খেয়ে পালালো ভারতীয় ৪ যুদ্ধবিমান ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ কী অত্যাসন্ন? জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন সাড়ে ২৭ বিলিয়ন ডলার নির্বাচনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলে, সেটা হবে আমাদের প্রতি অবিচার : থানজামা লুসাই কাল থেকে চালু হচ্ছে ‘নাগরিক সেবা’এক ঠিকানায় নাগরিকদের সব সেবা রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে ধরা পড়লো ২৬ কেজির কোরাল মাছ ১৭ শিল্পীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা ডিসেম্বর-জুনের মধ্যে নির্বাচন, সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান দীপ্ত টিভির সংবাদ প্রচার বন্ধ, ৩ সাংবাদিক চাকরিচ্যুত দেশে ফিরবেন খালেদা জিয়া, প্রস্তুত হচ্ছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স

নির্বাচনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলে, সেটা হবে আমাদের প্রতি অবিচার : থানজামা লুসাই

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫
  • ২৭ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন তাদের সংস্কার প্রস্তাবে বান্দরবান জেলা পরিষদ আইনের সংশোধনী সুপারিশ করে লুসাই, পাংখোয়া এবং উচাই জনগোষ্ঠির নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকার বাতিল করেছে। বিষয়টিকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠির সদস্যরা।

তারা বলছেন, সংখ্যায় তারা যত ক্ষুদ্রই হোক, তবু তাদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করার এখতিয়ার কারো নেই। কেউ এটা করতে চাইলে সেটা হবে তাদের প্রতি অন্যায় এবং অবিচার।

গত ২০ এপ্রিল ২০২৫ রোববার স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে। সেখানে বান্দরবান জেলা পরিষদ আইনের কতিপয় ধারা-উপধারার সংশোধনীর জন্যও সুপারিশ করা হয়েছে।

কমিশনের সুপারিশে বান্দরবান জেলা পরিষদের আইনের যেসব ধারার সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে তার মধ্যে আইনের ৪ নং অনুচ্ছেদে উল্লেখিত জেলা পরিষদের জাতিগত সদস্য সংখ্যা বণ্টনের যে রীতি আছে তা-ও সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনের ধারা ৪ অনুসারের পরিষদের মোট ৩৩ জন সদস্যের মধ্যে ১৯ জন উপজাতীয়, ১১ জন অ-উপজাতীয় (বাঙালি) এবং তিনজন (দুই জন উপজাতীয় ও একজন অ-উপজাতীয়) নারী সদস্য নির্বাচিত হবেন।

উপজাতীয় ১৯ সদস্যের মধ্যে মারমা ১০, ম্রো ৩, ত্রিপুরা ও উচাই থেকে ১, তঞ্চঙ্গা ১, বম, লুসাই ও পাংখোয়া থেকে ১, চাকমা ১, খুমী ১ এবং চাক জনগোষ্ঠি থেকে ১ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন।

স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন জেলা পরিষদের সদস্য সংখ্যা বণ্টনের ক্ষেত্রে যে সংশোধনী প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে দেখা যায় উচাই, পাংখোয়া এবং লুসাইদের নাম বাদ দিয়ে অপর জনগোষ্ঠিগুলোর মধ্যে সদস্য সংখ্যা বণ্টনের সুপারিশ করা হয়েছে।

এ ক্ষেত্রে আইনের ৪। (৩) (গ) অনুচ্ছেদ: ‘এক জন নির্বাচিত হইবেন ত্রিপুরা ও উচাই উপজাতি হইতে’ সংশোধন করে প্রস্তাব করা হয়েছে, ‘১ জন ত্রিপুরা উপজাতি হইতে নির্বাচিত হইবেন’। এর কারণ হিসেবে প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু উচাই, ত্রিপুরা উপজাতিরই একটি গোত্র, তাই উচাই শব্দটি উক্ত ধারা থেকে বাদ দেয়া যেতে পারে।’

অপরদিকে, আইনের ৪৷ (৩) (ঙ) অনুচ্ছেদ: ‘এক জন নির্বাচিত হইবেন 4[বম], লুসাই ও 5[পাংখোয়া] উপজাতি হইতে (জেলা পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হবেন)’ পরিবর্তন করে সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে,

‘১ জন বম উপজাতি হইতে নির্বাচিত হইবেন’। এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, ‌‌’যেহেতু আদিকাল থেকে বান্দরবান জেলাতে লুসাই ও পাংখোয়া বসবাস করত না এবং তাদের আদি বাসস্থান রাঙামাটি। রাঙামাটি জেলা পরিষদে তাদের জন্য আসন সংরক্ষিত আছে। কিন্তু বম জনগোষ্ঠী আদিকাল থেকেই বান্দরবানে বসবাস করে আসছে। তাই বান্দরবান জেলা পরিষদের আসনটি শুধু বম জনগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত থাকা উচিত। লুসাই ও পাংখোয়াদের জন্য বান্দরবানের আসন বরাদ্দের প্রয়োজনীয়তা নেই।’

কমিশনের এই সংস্কার প্রস্তাব গৃহীত হলে আগামীতে বান্দরবানে উচাই, লুসাই এবং পাংখোয়া জনগোষ্ঠির কোনো ব্যক্তি জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকার পাবেন না। অথচ, জেলা পরিষদ আইন ১৯৮৯, পার্বত্য চুক্তি ১৯৯৭ এবং চুক্তির আলোকে সংশোধিত জেলা পরিষদ আইনে বান্দরবানে উচাই, লুসাই এবং পাংখোয়াদের অস্তিত্ব স্বীকার করা হয়েছে।

এমনকি লুসাই জনগোষ্ঠির সদস্য অধ্যাপক থানজামা লুসাই বর্তমানে বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। শুধু তাই নয় এর আগেও ২০০৭ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত মেয়াদে আরো একবার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

এখন কমিশনের সংশোধনী প্রস্তাব গৃহীত হলে আগামীতে উচাই, লুসাই এবং পাংখোয়াদের মধ্য থেকে সদস্য পদেও নির্বাচন করার অধিকার থাকবে না। আর সদস্য পদে নির্বাচনের অধিকার না থাকলে চেয়ারম্যান পদেও নির্বাচিত কিংবা মনোনীত হওয়ার অধিকারও থাকবে না।

এই প্রসঙ্গে বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থানজামা লুসাই এর অভিমত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‌’এটা সত্য যে বান্দরবানে লুসাই-পাংখোয়াদের জনসংখ্যা খুবই কম। সেই দিক থেকে হয়তো তাদের মধ্য থেকে প্রার্থী হওয়া বা নির্বাচনে অংশ নেয়ার সম্ভাবনাও কম।

কিন্তু আমরা সংখ্যায় যতই ক্ষুদ্র হই না কেন, তাই বলে আমাদের নির্বাচনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার এখতিয়ার কারো নেই। কেউ সেই প্রস্তাব করে থাকলে সেটা আমাদের প্রতি অবিচার করেছেন, আমাদের প্রতি অন্যায় করেছেন।’পার্বত্যনিউজ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions