রাঙ্গামাটিতে বৈসাবি উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী বলী খেলা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৮৬ দেখা হয়েছে

রাঙ্গামাটি:- পাহাড়ের রঙিন সংস্কৃতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু ও বিহু। এই সম্মিলিত উৎসবকে কেন্দ্র করে রাঙ্গামাটির মারি স্টেডিয়ামে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হলো বর্ণাঢ্য ও ঐতিহ্যবাহী বলী খেলা। এই খেলা শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়, এটি পার্বত্য চট্টগ্রামের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির ধারক ও বাহক।

‎বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিষু-বিহু উদযাপন কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এই বলী খেলায় অংশগ্রহণ করেন, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ির বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ২২ জন বলী।

‎বড় বলির মধ্যে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার বাবু মারমা ও খাগড়াছড়ি সদরের সৃজন চাকমার মধ্যকার প্রতিযোগিতা ছিল দর্শকদের সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করা মুহূর্ত। এই চূড়ান্ত লড়াইয়ে বাবু মারমাকে পরাজিত করে সৃজন চাকমা চ্যাম্পিয়নের হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।

‎অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু)। তিনি বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণকালে বলেন, এই ধরনের আয়োজন পাহাড়ি সংস্কৃতিকে জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

‎বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি-২৯৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার এবং উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব গণমানুষের সেবা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান উ অংচিনু মারমা।

‎অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা। তিনি বলেন, এই বলী খেলা আমাদের শত বছরের সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা বহন করে। এই আয়োজনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত হবে।

‎রাঙ্গামাটি শহরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে শত শত দর্শক স্টেডিয়ামে এসে উপভোগ করেন এই বলী খেলা। চারপাশে ছিল উৎসবের আমেজ, পাহাড়ি বাদ্যযন্ত্রের তাল, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত মানুষ, আর মাঠের প্রতিটি বলীর সঙ্গে দর্শকদের উদ্দীপনায় ছিল প্রাণের সংযোগ।

‎বলী খেলা পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি গৌরবময় ঐতিহ্য। মূলত চট্টগ্রাম ও পার্বত্য অঞ্চলে নববর্ষ উদযাপন ও সামাজিক সংহতির প্রতীক হিসেবে এই খেলার প্রচলন রয়েছে। বিজু বা সাংগ্রাইয়ের মতো উৎসবের সময় এই খেলার আয়োজন স্থানীয় জনগণের আনন্দ-উৎসবকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তোলে।

‎এই আয়োজন প্রমাণ করেছে, সংস্কৃতি শুধু অতীতের ঐতিহ্য নয়, তা বর্তমানেরও শক্তি এবং ভবিষ্যতের পরিচয়।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions