আজ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫
  • ২৪ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আজ। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল সূচনার দিন। এদিন পৃথিবীর মানচিত্রে যুক্ত হয়েছিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের নাম। ১৯৭১ সালের এইদিনে স্বাধীনতার ঘোষণায় উদ্দীপ্ত হয়ে মুক্তির লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছিল মুক্তিকামী জনতা। স্বাধীন বাংলাদেশের ঘোষণা হয়েছিল এদিন। যাদের ত্যাগ আর রক্তে অর্জিত এই স্বাধীন ভূখণ্ড সেই বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন আজ। স্বাধীনতার আনন্দে সমৃদ্ধির শপথে মুষ্টিবদ্ধ হওয়ার দিন। আজ সারা দেশে নানা আয়োজনে পালিত হবে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। পুরো জাতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করবে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর শহীদদের। দিবসটি উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এবার ভিন্ন এক পরিবেশে পালিত হচ্ছে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্রথম স্বাধীনতা দিবস পালন হচ্ছে। দ্রুত গণতান্ত্রিক পরিবেশে ফেরা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তোলার শপথ উচ্চারিত হবে এবারের স্বাধীনতা দিবসে।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্‌যাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এদিন ঢাকাসহ সারা দেশে প্রত্যুষে তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও রঙিন পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে।
দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র, নিবন্ধ ও সাহিত্য সাময়িকী প্রকাশ করছে।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা; সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান; শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা; মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র এবং চলচ্চিত্র প্রদর্শনের আয়োজন এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ফুটবল, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন করবে।

এ ছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে। দেশের সকল হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু পরিবার, বৃদ্ধাশ্রম, ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রসমূহে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।

দেশের সকল শিশুপার্ক ও জাদুঘরসমূহ বিনা টিকিটে উন্মুক্ত রাখা হবে। চট্টগ্রাম, খুলনা, মোংলা ও পায়রা বন্দর এবং ঢাকার সদরঘাট, নারায়ণগঞ্জের পাগলা, বরিশাল ও চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের জাহাজসমূহ ঐদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ কর্মসূচি পালন করা হবে।
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে অপারেশন সার্চলাইটের নামে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলার মাধ্যমে বাঙালি জাতির জীবনে যে বিভীষিকাময় যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল- দীর্ঘ ৯ মাসে মরণপণ লড়াইয়ের মাধ্যমে দামাল বাঙালি এক সাগর রক্তের বিনিময়ে সে যুদ্ধে বিজয় লাভ করে স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনে। ২৫শে মার্চ রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পাক বাহিনী। ২৬শে মার্চ থেকে শুরু হয় মুক্তিকামী জাতির মুক্তির লড়াই। দেশের সব শ্রেণি- পেশার মানুষের অকুতোভয় লড়াইয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর আসে চূড়ান্ত বিজয়।
দিবসটি উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এক বাণীতে বলেছেন, দেশকে আরও উন্নত ও শক্তিশালী করতে এবং স্বাধীনতার পূর্ণ সুফল জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে অন্তর্বর্তী সরকার বদ্ধপরিকর। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সকল বাংলাদেশিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আসুন, স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসের এ মাহেন্দ্রক্ষণে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে দেশের উন্নয়ন, শান্তি এবং সমৃদ্ধির পথে কাজ করার শপথ গ্রহণ করি।
গত ১৬ বছর দেশের মানুষ এই স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারে নাই’- উল্লেখ করে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, স্বৈরাচারী শাসক জগদ্দল পাথরের মতো জনগণের ঘাড়ে চেপে বসে তাদের স্বাধীনতা ও মৌলিক সব অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার সফল গণ-অভ্যুত্থান দেশের মানুষকে স্বৈরাচারের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত করেছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions