ডেস্ক রির্পোট:_চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৫৯ সালে। এরপর চট্টগ্রামে আর কোনো হাসপাতাল নির্মিত হয়নি। এ হাসপাতালটির ওপরই নির্ভরশীল চট্টগ্রাম বিভাগের প্রায় ৪ কোটি মানুষ। ফলে চমেক হাসপাতালের ওপর চাপ থাকে ধারণ ক্ষমতার তিন গুণ বেশি। ভোগান্তি পোহাতে হয় রোগীদের। তবে দেরিতে হলেও সরকার চট্টগ্রামে আরেকটি ৫০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে শুরু করেছে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া। হাসপাতালটি নির্মাণ হলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বান্দরবানের মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় নতুন করে সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সরকার দক্ষিণ চট্টগ্রামে একটি হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে গত ১৬ মার্চ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম পটিয়া উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের হরিণখাইন এলাকায় আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশের জায়গাটি তিনি পরিদর্শন করেন। এ সময় আইডিয়াল স্কুল ১ একর এবং স্থানীয় ব্যক্তি পর্যায়ে ১ একর জায়গা প্রদানের কথা বলা হয়। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ হাসপাতালের জন্য খুঁজছে ১০ একর জায়গা।
স্থানীয়রা জানান, পটিয়ায় হাসপাতালটি নির্মাণ হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের লাখো মানুষ স্বাস্থ্যসেবা পাবে। এটি হবে একটি মাইলফলক। কারণ দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, চন্দনাইশ, বোয়ালখালী, পটিয়া ও কর্ণফুলীসহ কক্সবাজার এবং বান্দরবান জেলার রোগীদের জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় একমাত্র আশ্রয়স্থল চমেক হাসপাতাল। কিন্তু নানা সমস্যা-সংকট মাড়িয়ে চমেক হাসপাতালে পৌঁছা অনেক সময়সাপেক্ষ। তাই এখানে একটি হাসপাতাল নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সরকারি নির্দেশনা মতে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ১০ একর জায়গা দরকার। গত রবিবার স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সম্ভাব্য জায়গাটি পরিদর্শন করেছেন। ইতোমধ্যে ২ একর জায়গা মিলেছে। দরকার আরও ৮ একর। সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতেই হাসপাতালটি নির্মাণে আগ্রহী। তাই কাজটি দ্রুত শুরু করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালটি নির্মিত হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের লাখো মানুষ আধুনিক ও সহজেই উন্নত চিকিৎসাসেবা নিতে পারবে।
জানা যায়, ১৮৪০ সালে নগরের আন্দরকিল্লা রংমহল পাহাড়ের ওপর ডিসপেনসারি হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে। ১৯০১ সালে অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে এটিকে জেনারেল হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়। ১৯৮৭ সালে এটিকে ৮০ শয্যায় এবং পরে ১৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ২০১২ সালে এটিকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও এটি চলছে ১৫০ শয্যার জনবল দিয়ে। অন্যদিকে ১৯৫৭ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এবং ১৯৫৯ সালে চমেক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯০ সালে ডেন্টাল ইউনিট চালু হয়। বর্তমানে এ হাসপাতালে ২ হাজার ২০০টি শয্যা থাকলেও জনবল আছে ৫০০ শয্যার। কার্যত চট্টগ্রামে সরকারি স্বাস্থ্যসেবায় আছে এ দুটি হাসপাতাল।