ডেস্ক রির্পোট:- ওয়ান-ইলেভেনের পর থেকে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট ৩৭টি মামলা দায়ের করা হয়। গতকাল বুধবার নাইকো মামলায় খালাস পাওয়ার মধ্য দিয়ে তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া সব মামলায় খালাস পেয়েছেন। মামলামুক্ত হয়েছেন তিনবারের নির্বাচিত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
এসব মামলার মধ্যে ১৩টি মামলা হয় ২০০৭ ও ২০০৮ সালে বিগত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। ২৪টি মামলা করা হয় বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। মামলাগুলোর মধ্যে পাঁচটি দুর্নীতি মামলা, চারটি মানহানির ও একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা। বাকিগুলো হয় হত্যা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, বোমা হামলা, মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে কটাক্ষ, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, ‘মিথ্যা’ জন্মদিন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে। ঢাকায় ২৮টি ও ঢাকার বাইরে ৯টি মামলা হয়। এসব মামলার মধ্যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বাকি মামলাগুলোর বিচার চলমান ছিল।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজার রায় ঘোষণার পর ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা
জিয়াকে পাঠানো হয় কারাগারে।
সাজা ভোগ করেন দুই বছর এক মাস ১৬ দিন। এরপর করোনাকালে বিগত সরকার তার সাজার কার্যকারিতা স্থগিত করে। শর্তসাপেক্ষে কারামুক্তি দিয়ে বাসায় থাকার সুযোগ দেওয়া হয় তিনবারের নির্বাচিত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে। তবে বয়সজনিত কারণে শারীরিক নানা জটিলতায় আক্রান্ত হলেও বারবার আবেদনের পরও তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হয়নি। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এসব রাজনৈতিক মামলা থেকে একে একে খালাস পেতে শুরু করেন তিনি। গত ৭ জানুয়ারি রাতে খালেদা জিয়া চিকিৎসার উদ্দেশে লন্ডনে যান তার বড় ছেলে তারেক রহমানের কাছে। বর্তমানে সেখানেই আছেন ৮০ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ।
খালেদা জিয়ার মামলার তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, এক-এগারো পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বেশি মামলা হয় ২০১৫ সালে। ২০১৩, ’১৪, ’১৬ সালে আরও বেশ কয়েকটি মামলা হয়। ঢাকাসহ কুমিল্লা, খুলনা, নড়াইল ও পঞ্চগড়ে সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা এসব মামলা করেন। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট, নাইকো, গ্যাটকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতির এ চারটি মামলা সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা হয়। অগ্নিসংযোগ ও নাশকতার অভিযোগে কুমিল্লায় তিন মামলা, ঋণখেলাপির অভিযোগে মামলা, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা, গুলশানে বোমা হামলার অভিযোগে মামলা, ২০১৪-১৫ সালে হত্যার অভিযোগে মামলা, রাজধানীর দারুস সালাম থানায় নাশকতার ৮ মামলা, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় ৩ মামলা, ঢাকার বাইরে মানহানির মামলা, খুলনায় অগ্নিসংযোগের মামলা, পঞ্চগড়ে নাশকতার মামলা করা হয়। সব মামলায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে করা বলে দাবি তার আইনজীবীদের।
বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে প্রতিটি মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দায়ের করা হয়। এসব মামলায় আনা অভিযোগের সাপেক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ ছিল না। সব ছিল ভিত্তিহীন। সব মামলায় খালাস পাওয়ার মধ্য দিয়ে সেটাই প্রমাণিত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যক্তিগত আক্রোশ ও প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এসব মামলা করান। দেশে তখন আইনের শাসন ছিল না। আদালত ও দুদককে ব্যবহার করে দুটি মামলায় তাকে সাজাও দেওয়া হয়। বিগত ১৬ বছর বিচারের বাণী নিভৃতে কেঁদেছে। পটপরিবর্তনের পর খালেদা জিয়া এখন ন্যায়বিচার পেয়েছেন।’
‘দণ্ডপ্রাপ্ত দুই মামলায় খালাস’
গত ১৫ জানুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়া, তার ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ চারজনকে খালাস দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। জানা যায়, অনাথ শিশুদের সহায়তার জন্য বিদেশ থেকে পাঠানো প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ টাকা ক্ষমতার অপব্যবহার করে ও দুর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালে দুদক এ মামলা করে। বিচার শেষে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান রায় দেন। রায়ে খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের সাজা ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। ওই দিন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এই মামলায় খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ১০ বছরের সাজা দেওয়া হয়। মামলার অন্য চার আসামিকেও ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ২ কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে একই বছর হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া। এ ছাড়া তার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদক একটি আবেদন করে। অন্য আসামিরাও আপিল করেন। পৃথক আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ আপিল বিভাগে পৃথক দুটি লিভ টু আপিল করেন খালেদা জিয়া।
এদিকে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা করা হয়। ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর রায় দেন বিচারিক আদালত। রায়ে খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করা হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে একই বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া।
দুটি মামলায় খালেদা জিয়াকে দেওয়া সাজা করোনাকালে নির্বাহী আদেশে স্থগিত করে সরকার। দুই বছর এক মাস ১৬ দিন কারাভোগের পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। এরপর থেকে দফায় দফায় তার কারামুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। পরদিন ৬ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দণ্ড মওকুফ করেন রাষ্ট্রপতি। তবে এই দণ্ড মওকুফের সুযোগ নেননি রাজনৈতিক অঙ্গনের ‘আপসহীন নেত্রী’। পরে লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ গত ১৫ জানুয়ারি জিয়া অরফানেজ মামলার সাজার রায় বাতিল ঘোষণা করেন। এ ছাড়া জিয়া চ্যারিটেবল মামলায় আপিলের ওপর শুনানি করে হাইকোর্ট গত বছরের ২৭ নভেম্বর তাকে খালাস দেন।
‘রাষ্ট্রদ্রোহসহ ১১ মামলার কার্যক্রম বাতিল’
গত ৩০ অক্টোবর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের ১টি, নাশকতার অভিযোগে করা ১০টিসহ ১১টি মামলার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। আইনজীবীরা জানান, এসব মামলার মধ্যে যানবাহন ভাঙচুর, পুলিশের কাজে বাধাদানসহ নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর দারুস সালাম থানার ৭টি, যাত্রাবাড়ী থানায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও নাশকতার অভিযোগে ৩টি ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে করা ১টি মামলা রয়েছে। মামলাগুলো ২০১৫ সালের আন্দোলনের সময় দায়ের করা হয়।
‘পাঁচ মামলায় খালাস’
গত ৩ সেপ্টেম্বর পাঁচ মামলা থেকে খালাস পান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর মধ্যে দুটি মামলা জন্মদিন পালন ও মুক্তিযোদ্ধাদের কটূক্তি করার অভিযোগে করা। বাকি তিনটি মানহানির অভিযোগে করা। ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক মাহবুব আলম ও তোফাজ্জল হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
‘গ্যাটকো, নাইকো ও বড়পুকুরিয়া মামলায় খালাস’
গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গত ২৪ অক্টোবর বেকসুর খালাস দেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু তাহের এ আদেশ দেন। ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় দুদক এ মামলা করে।
কানাডার জ্বালানি কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের চুক্তি করে রাষ্ট্রের প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি করার অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুদক। মামলাটি বিচার করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ গতকাল খালেদা জিয়াকে খালাস দিয়েছেন।
এ ছাড়া গত ২৭ নভেম্বর দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ায় কয়লা খনি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে খালাস দেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২ এর বিচারক আবু তাহের এ আদেশ দেন। ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা করে দুদক। শাহবাগ থানায় মামলাটি করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. সামছুল আলম। একই বছরের ৫ অক্টোবর ১৬ আসামির বিরুদ্ধে দুদকের উপপরিচালক মো. আবুল কাসেম ফকির অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
‘নড়াইলে মানহানির দুই মামলা খারিজ’
নড়াইলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামে করা দুটি মানহানির মামলা খারিজ করে দেন আদালত। গত ২৪ সেপ্টেম্বর একটি মামলা খারিজ করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ও শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে খালেদা জিয়া মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন—এমন অভিযোগে ২০১৫ সালে এ মামলাটি করেছিলেন নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাপাইল গ্রামের ইউসুফ ফারুকীর ছেলে রায়হান ফারুকী। এ ছাড়া গত ২৯ আগস্ট নড়াইলে খালেদা জিয়ার নামে করা আরেকটি মানহানির মামলা খারিজ করা হয়। ওই মামলাও নড়াইল সদর আমলি আদালতে ছিল এবং বাদী দীর্ঘদিন হাজির না হওয়ায় খারিজ করে দেওয়া হয়।
‘কুমিল্লার ৩টি মামলায় খালাস’
২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামের হায়দারপুল এলাকায় একটি কাভার্ডভ্যানে অগ্নিসংযোগ ও আশপাশের বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি চৌদ্দগ্রাম থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে এবং নাশকতার অভিযোগে দুটি মামলা হয়। একই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এ ঘটনার পরদিন (৩ ফেব্রুয়ারি) চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান বাদী হয়ে ৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এসব মামলার মধ্যে ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি দায়ের করা মামলার বিচার করে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১নং আদালতের বিচারক আফরোজা শিউলি গত ২০ জানুয়ারি তাকে খালাস দেন। পটপরিবর্তনের পর অন্য মামলাটিতেও খালাস পান।
‘গুলশানে বোমা হামলার মামলায় অব্যাহতি’
২০১৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের মিছিলে হামলার ঘটনায় খালেদা জিয়াকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতা ইসমাইল হোসেন। গত ৪ ডিসেম্বর এ মামলা থেকে অব্যাহতি পান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব আসামি।
‘৪২ জনকে পুড়িয়ে হত্যার মামলা খারিজ’
দশম সংসদ নির্বাচনের পর সারা দেশে অবরোধ ও হরতালে পেট্রোলবোমা হামলায় ৪২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার হাকিম আদালতে একটি মামলা করেন। এতে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। তদন্ত শেষে পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমান গত ২৪ অক্টোবর এ মামলা থেকে সবাইকে অব্যাহতি দেন।
‘ভুয়া জন্মদিন পালনসহ ৫ মামলায় অব্যাহতি’
পটপরিবর্তনের এক মাসের মধ্যে ঢাকার আদালত থেকে ৫টি মামলায় অব্যাহতির আদেশ পান খালেদা জিয়া। খালাস পাওয়া ৫টি মামলার মধ্যে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত চারটি এবং অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালত একটি মামলা খারিজ করে তাকে খালাসের আদেশ দেন।
এই পাঁচ মামলার মধ্যে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালনের অভিযোগে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। বাকি চারটি মামলা করেন বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী। স্বীকৃত স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকার মানহানি ঘটানো, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে মানহানিকর মন্তব্যের অভিযোগে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিয়ে কটূক্তিসহ পৃথক অভিযোগে ২০১৬ সালে মামলাগুলো করা হয়।কালের কন্ঠ