শিরোনাম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে থাকছে না সরকারি সাত কলেজ স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন: চিকিৎসক নিবন্ধনে পরীক্ষা বান্দরবানে ডাকাত চক্রের ৭ সদস্য গ্রেফতার বিএনপি-জামায়াত দূরত্ব,কার ক্ষতি কার লাভ গাজীপুরে বন্ধ ৫১ কারখানা, কর্মহীন অর্ধলক্ষাধিক শ্রমিক অনলাইনে আয়কর রিটার্ন সারাবছর, বকেয়ার ওপর মাসে ২% চার্জ খাগড়াছড়ি থেকে ছাদের কার্নিশে ঝুলে থাকা শিক্ষার্থীকে গুলি করা সেই এসআই গ্রেফতার কক্সবাজারের সাবেক ডিসি-জজসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা,২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় বাদীর স্বাক্ষর ও নথি জালিয়াতি সামরিক বাহিনীর সংস্কারে কমিশন গঠনের প্রস্তাব সুদানে হাসপাতালে ভয়াবহ ড্রোন হামলায় ৬৭ জন নিহত

বিএনপি-জামায়াত দূরত্ব,কার ক্ষতি কার লাভ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ১৫ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর টানাপোড়েন বেড়েই চলেছে। দিন দিন দূরত্ব দীর্ঘ হচ্ছে পুরনো দুই মিত্র দলে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন এককভাবে করার সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে উভয় দলই। জামায়াতের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী বৈঠকে এ কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিও তার নিজের মতো করে প্রস্তুতি নিচ্ছে সারা দেশের সব আসনে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকায় কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি অংশ নিচ্ছেন দলের শীর্ষনেতা তারেক রহমান। তাঁরাও এককভাবেই জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। উভয় দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

দুই দলের নির্বাচন প্রস্তুতির শুরুতেই হঠাৎ করে দূরত্ব বাড়তে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে অনেকের মধ্যে প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে- দুই দলের মধ্যে এমন দূরত্ব, অবিশ্বাস, আস্থাহীনতা তৈরি হলে কার ক্ষতি কার লাভ!

জানা যায়, নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর আমির ও সেক্রেটারি জেনারেল দুজনই টানা ছয় মাসের ম্যারাথন প্রোগ্রাম নিয়ে মাঠে নেমেছেন। সারা দেশে পৃথকভাবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন উভয় দলের নেতারা। প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি চায় নির্বাচনসংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো শেষ করে দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচন। দলটির মতে, এ ছাড়া দেশের সার্বিক সংকট মোকাবিলা সম্ভব হবে না। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথ আরও প্রলম্বিত হবে। এ কথা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলে এসেছেন।
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী চায় সংস্কার শেষ করে ধীরেসুস্থে একটা জাতীয় নির্বাচন। অন্যথায় পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সাজানো (প্রশাসনের) বাগানের মালিদের দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন কখনোই সম্ভব নয়। এই ইস্যুতে তারা আরেকটু বেশি সময় দিতে চায় অন্তর্বর্তী সরকারকে। দলটির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে এই বার্তা দিয়ে এসেছেন আমিরে জামায়াত নিজেই। ফলে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ক্রমবর্ধমান দূরত্ব দিন দিন আরও প্রকট হচ্ছে। এতে দুই মেরুতে চলে যাচ্ছে দল দুটি। এর ফলে রাজনৈতিক মিত্র দুটির কার কত ক্ষতি কিংবা কার কত লাভ হবে? এই হিসাব মেলাতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া দুই দলের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকা, সংস্কার ও নির্বাচন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক, প্রশাসন ও পুলিশে দলীয় অনুগত লোকদের নিয়োগ প্রদানসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে বাগ্যুদ্ধ চলছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে দল দুটির বিপরীত মেরুতে মুখোমুখি অবস্থান দেখতে পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

স্বৈরাচার এরশাদ পতন আন্দোলনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী ছিল এককাট্টা। বিএনপির নেতৃঅ¡ সাতদলীয় জোটে জামায়াতে ইসলামী না থাকলেও দুই দল ছিল সমমনা। ’৯১-এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করে। বিএনপি সরকার গঠনের পর একপর্যায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে জামায়াত কৌশলগত নির্বাচনি জোট করে আওয়ামী লীগের সঙ্গে। এই নির্বাচনি জোটে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি এবং জাসদ (ইনু)-ও ছিল। এই জোটের নির্বাচনি কৌশলে ’৯৬-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে। ’৯৬-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়লাভই ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের টানা ক্ষমতায় থাকার ভিত তৈরি করে। ১৯৯৬-এর নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী অওয়ামী লীগের সঙ্গে কৌশলগত নির্বাচনি জোট না করলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ কখনো কোনো নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারত কি না, তা নিয়ে অনেকের মধ্যে এখনো সংশয়। সুতরাং এই দুই রাজনৈতিক মিত্রের সম্পর্কে ভাঙন হলে বা দূরত্ব তৈরি হলে দেশের ও জনগণের কী পরিমাণের ক্ষতি হয়, সেটা পিছনের দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়ে যায়।

বর্তমানে দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময়ের জোটের শরিক বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব বেড়েই চলেছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন বিপরীতে মুখোমুখি অবস্থানে তারা। উভয় দলের বড় নেতারা একে অপরের প্রতি কটাক্ষ করে বক্তব্যও রাখছেন। এ অবস্থায় আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দল দুটির অবস্থান শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সে আশঙ্কা করছে পর্যবেক্ষক মহল। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জামায়াত চাচ্ছে সব ধরনের সংস্কারকাজ শেষ করে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর বিএনপি চাচ্ছে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো শেষে দ্রুত নির্বাচন। এদিকে জামায়াত এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা করেছে। কয়েকটি ইসলামি দল নিয়ে নির্বাচনি মোর্চা গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। এর মধ্যে দলটির পক্ষ থেকে আনুপাতিক হার পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিও তোলা হয়। কিন্তু সেটি ধোপে টেকেনি। অন্যদিকে বিএনপিও নির্বাচন সামনে রেখে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে যাচ্ছে জামায়াতকে ছাড়াই। আজ সোমবার দুপুরেও একটি ইসলামি দলের একজন শীর্ষনেতার সঙ্গে মতবিনিময় করার কথা রয়েছে বিএনপি মহাসচিবের।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা অনেকে মনে করেন, জামায়াত সুদূরপ্রসারী কৌশল নিয়ে সামনে এগোচ্ছে। সংস্কারের ভেতর দিয়ে ছাত্র-জনতার বিপ্লবে যে আশা-আকাক্সক্ষা সেটা সামনে রেখে তারা অগ্রসর হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জামায়াত আমাদের একসময়ের মিত্র। আমাদের জোট বিলুপ্ত হওয়ার পর তারা অনেক আন্দোলন-সংগ্রামেই ছিল না। বিএনপি একাই লড়াই করেছে গত ১৬টি বছর। এমনকি জামায়াত ইসলামী আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনেও ছিল না। তবে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের কর্মসূচির সঙ্গে মিল রেখে তারা অনেক কর্মসূচি দিয়েছে, সে ক্ষেত্রে তারা আমাদের রাজপথের সঙ্গী। তবে জামায়াতে ইসলামীর আদর্শ, রাজনীতি ও নির্বাচনি কৌশল আলাদা। তারা কীভাবে নির্বাচন সামনে রেখে বক্তৃতা-বিবৃতি দেবে, সেটা তাদের কৌশল। আমরা রাজপথে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ছিলাম। জাতীয় ঐক্য নষ্ট হয় এমন কিছু আমরা চাই না।’

‘কেন বিএনপি দ্রুত জাতীয় নির্বাচন চাচ্ছে?’ এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, নির্বাচন যদি দ্রুত না হয়, যদি সময়ক্ষেপণ করা হয়। তাহলে অন্য শক্তিগুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে। তখন জনগণের যে চাহিদা, সেই চাহিদা থেকে তারা পুরোপুরিভাবেই বঞ্চিত হয়। এদিকে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘দলগত কোনো সম্পর্কের দূরত্ব তৈরি হচ্ছে অথবা আমাদের মধ্যে কোনো গ্যাপ তৈরি হচ্ছে- বিষয়টা এমন না। এটা দল ভার্সেস দল- এভাবে আমরা দেখি না। গণতান্ত্রিক দেশে মানুষের নিজ নিজ মতপ্রকাশের অধিকার আছে। একই সঙ্গে কোনো নেতা যদি বক্তব্য দেন, সেটা তার দলের মতামত না ব্যক্তির নিজের বক্তব্য, এটা জনগণই নির্ধারণ করবে।’বাংলাদেশ প্রতিদিন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions