শিরোনাম
পাকিস্তানের হামলায় ধ্বংসস্তূপ আফগানিস্তানের গ্রাম, ব্যাপক হতাহত আফগানিস্তানের ওপর ক্ষেপেছে পাকিস্তান হাসিনার ক্ষমতার লোভ এবং ইতিহাসের রং বদল দাবি নিয়ে ব্যস্ত গতিহীন প্রশাসন হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল এস আলম গ্রুপের ৬ কারখানা বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আড়াই কোটি টাকা অনুদান রাঙ্গামাটি জোন’র আয়োজনে কাউখালীতে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অগ্রাধিকার, পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য আলাদা চ্যাপ্টার প্রস্তাব করবে কমিশন রাঙ্গামাটির কর্ণফুলী নদীতে নেমে ২ তরুণ নিখোঁজ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে পার্বত্যবাসী অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে-ইউপিডিএফ

স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অগ্রাধিকার, পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য আলাদা চ্যাপ্টার প্রস্তাব করবে কমিশন

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৪০ দেখা হয়েছে

রাঙ্গামাটি:- পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে আলাদা একটা চ্যাপ্টার কমিশনে জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। তিনি বলেন- পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য ও শিক্ষাকে টপ প্রায়োরিটি দিতে চাই। এই দুটোকে গুরুত্ব দিলে অনেক কিছুর সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। আমরা আমাদের কমিশনের চেয়ারম্যানকে নিশ্চয়ই রাজী করাতে পারবো যে, আমরা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে আলাদা একটা চ্যাপ্টার এখানে দেওয়ার চেষ্টা করবো। এছাড়া সুনির্দিষ্টভাবে জনপ্রশাসন বা পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি সিস্টেম উন্নত করার জন্য যা যা করা করার দরকার সেটা আমরা করবো।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে পার্বত্য জেলার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ এবং সরকারি কর্তকর্তাদের সাথে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। সভায় বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. মোঃ হাফিজুর রহমান ভূঞা, ফিরোজ আহমেদ ও মেহেদী হাসান।

বেলা এগারোটায় শুরু হয়ে তিনঘন্টাব্যাপী চলা এই মত বিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন, রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মোঃ সহিদুজ্জামান, বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, রাঙ্গামাটি পুলিশ সুপার, তিন জেলার সরকারি কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য রাখেন।

সভায় বক্তারা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, গণমুখী, জবাবদিহিমূলক এবং দক্ষ প্রশাসন গড়ে তোলার আহ্বান জানান। প্রশাসনিক কার্যক্রমকে স্বচ্ছ ও কার্যকর করতে আঞ্চলিক পরিষদ, জেলা পরিষদ এবং উন্নয়ন বোর্ডের সাথে জেলা প্রশাসনের সমন্বয় বৃদ্ধির প্রস্তাব তোলা হয়। জমি ক্রয়-বিক্রয়ে দীর্ঘদিনের জটিলতা দূর করতে হেডম্যান প্রথা বিলুপ্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে জেলা পরিষদের অধীনস্থ সব নিয়োগে জেলা প্রশাসনকে সম্পৃক্ত অথবা জাতীয় পর্যায় থেকে স্থানীয় জনগণের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

শিক্ষাখাতে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পার্বত্য অঞ্চলের স্থানীয় জনগণের মধ্য থেকে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়। বক্তারা উল্লেখ করেন, এনটিআরসিএ-এর মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো বিশেষ অঞ্চলে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল দিচ্ছে না। দেশের দূরদুরান্ত থেকে শিক্ষকরা এখানে এসে চাকরি করতে অপারগতা প্রকাশ করে। তারা পার্বত্য অঞ্চল আসার পর থেকেই তকদির করতে থাকে এখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য। ফলে তারা তাদের কর্মক্ষেত্রে আন্তরিক থাকে না। তাই দেশে এক-দশমাংশ পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বরাবর শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকছে। তাই শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পার্বত্য অঞ্চলের স্থানীয় জনগণকে প্রাধান্য দেওয়া হলে নিয়োগপ্রাপ্তরা আন্তরিকতার সাথেই এখানে কাজ করে যাবেন। পাশাপাশি স্থানীয় শিক্ষকদের নিয়োগ দিলে শিক্ষার মানোন্নয়ন দ্রুত সম্ভব হবে। একই সাথে দূর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরির সাথে সাথে আবাসিক হোস্টেল স্থাপনের দাবিও জানানো হয়। তারা বলেন, দূর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে শিশুরা পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে প্রতিনিয়ত বিদ্যালয়ে যাওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। তাই অনেক বিদ্যালয়েই শিক্ষার্থী সংকট দেখা দেয়। এজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরির সাথে সাথেই আবাসিক হোস্টেল নির্মাণ প্রয়োজন।

সভায় সরকারি কর্মকর্তাদের পদোন্নতিতে বৈষম্য দূর করার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়। বক্তারা জানান, সময়মতো পদোন্নতি নিশ্চিত না হওয়ায় কর্মদক্ষতা ও মনোবলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। দক্ষতা বিবেচনায় পদায়ন হলে প্রশাসনিক কার্যক্রম আরও উন্নত হবে। স্ব স্ব ক্যাডারে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পদায়নের সুযোগ সহজ করা হলে সবাই নিজেদের কাজে আরও বেশী আন্তরিক হবে। এতে জনআকাংখার প্রতিফলন ঘটবে। একই সাথে জেলা প্রশাসনের উপর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করা গেলে তারা স্বাধীনভাবে কাজ করে প্রশাসনের কার্যকারিতা বাড়াতে পারবেন বলে প্রত্যাশা করেন সকলেই।

সভায় পার্বত্য চট্টগ্রামের পর্যটন খাতের উন্নয়নের উপরও আলোচনা হয়। বক্তারা নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার মাধ্যমে পর্যটনকে আরও আকর্ষণীয় ও নিরাপদ করার প্রস্তাব দেন। দুর্গম এলাকায় কর্মরত কর্মকর্তাদের জন্য বেতন-ভাতায় বিশেষ সুবিধা দেওয়ার দাবি তুলে ধরা হয়, যাতে তারা এসব অঞ্চলে কাজ করতে উৎসাহী হন।

উল্লেখ্য, বর্তমান সরকারের লক্ষ্য দক্ষ, দুর্নীতিমুক্ত এবং জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তোলা। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে গত ৩ অক্টোবর জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়। কমিশন প্রশাসনিক কাঠামো সংস্কার, দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করছে।

সভায় অংশগ্রহণকারীরা জানান, এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নত করবে। পাহাড়ের খবর

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions