ডেস্ক রির্পোট:- গাজার উত্তরের বেইত লাহিয়াতে কামাল আদওয়ান হাসপাতালের কাছে ইসরাইলি হামলায় অন্তত আটজন সহ ৩১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অনেকে আহত হয়েছেন। একইসঙ্গে, অস্ত্রবিরতি নিয়ে আলোচনা কিছুটা গতি পেয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর ) ইসরাইলি বাহিনী কামাল আদওয়ান হাসপাতালের কাছে একটি আবাসিক ভবনে বোমা বর্ষণ করে। এতে আটজন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই ছিল ওই অঞ্চলে বাস্তুহারা ফিলিস্তিনি। হামলার সময় হাসপাতালের কাছেই একটি বিস্ফোরকবাহী রিমোট কন্ট্রোল গাড়ি ব্যবহার করে পার্শ্ববর্তী ভবন ধ্বংস করা হয়। এর ফলে হাসপাতালেও শার্পনেলের আঘাতে রোগীরা আহত হন। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ এই হামলার কারণ হিসেবে গাজার প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর কার্যক্রম দমন করার কথা বলছে।
ইসরাইল ও গাজার মধ্যে চলমান সংঘাত অক্টোবর ৭, ২০২৩ থেকে শুরু হয়, যখন হামাসের নেতৃত্বে ইসরাইলের উপর আক্রমণ চালানো হয়। ওই হামলায় ১,১৩৯ জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি বন্দি হয়। এর প্রতিশোধ নিতে ইসরাইল গাজার উপর ব্যাপক হামলা শুরু করে।
জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা (OCHA) জানায়, ইসরাইল এখনো উত্তর গাজায় ত্রাণ কার্যক্রমে বাধা দিচ্ছে। মঙ্গলবার খাদ্য ও পানীয়বাহী তিনটি ত্রাণ কনভয় বাধা পায়। ওচা জানিয়েছে, এই অঞ্চলটিতে মানবিক সহায়তার অবস্থা চরমে পৌঁছেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় ৪৫,০৫৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,০৭,০৪১ জন আহত হয়েছেন।এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
হামাস বলেছে, ইসরাইল নতুন শর্ত আরোপ না করলে একটি অস্ত্রবিরতি সম্ভব। অন্যদিকে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনে করেন, আলোচনায় ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে।এই সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। তবে নিরীহ মানুষের মৃত্যু ও মানবিক সংকটের অবসান ঘটাতে উভয়পক্ষের দ্রুত সমঝোতায় পৌঁছানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা