বান্দরবান:- বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে সীমান্ত পোস্ট দখলে নিতে মিয়ানমারের আরকান রাজ্যের ২ সশস্ত্র বিদ্রোহীর মধ্যে প্রচণ্ড গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ভোর ও সকালে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
তুমব্রু গ্রাম ও বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু এলাকার উত্তর পাড়াতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকার ৩৪/৩৫ পিলারের মাঝামাঝি এলাকায় বুধবার রাত ১২টা ২৫ মিনিটে প্রথম ঘটনা ঘটে। যা মিয়ানমারের সামান্য অভ্যন্তরে। এ সময় অন্তত ৩০ রাউন্ড গুলির বিকট শব্দ শোনা গেছে। একই সীমান্ত পিলার এলাকায় ভোর সাড়ে ৫টায় টানা অর্ধশত রাউন্ড গোলাগুলির তীব্র শব্দ সীমন্ত পেরিয়ে তমব্রু গ্রাম ও তুমব্রু বাজার এলাকা কেঁপে উঠে।
সূত্র নিশ্চিত করেন, ভারী অস্ত্রের এ গোলাগুলি আরকানের স্বশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মি ও আল ইয়াকিনের মধ্যে সংগঠিত হয়েছে বলে তারা শুনেছেন।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মোঃ শফিক আহমদ বলেন, গত রাত ও ভোর সকালের এ গোলাগুলি ছিল এ বছরের সবচেয়ে দীর্ঘ গোলাগুলির ঘটনা। এর আগে বিগত কয়েক মাস এ সীমান্ত শান্ত ছিল। মাঝে মধ্যে কয়েকটি গুলির আওয়াজ শুনা গেলেও হঠাৎ করে বুধবারের এ গোলাগুলির শব্দ তাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছেন। তার মতে এলাকাবাসী মনে করছেন সীমান্তে নতুন কিছু হচ্ছে।
তুমব্রু এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা বাজার ব্যবসায়ী নুরুল আবছার বলেন,গভীর রাতে এমন গোলাগুলির আওয়াজে তার পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
অপরগ্রামবাসী মো. ফয়েজ আহমদ বলেন, তাদের সীমান্ত এলাকার মিয়ানমার অংশে আরকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর থেকে এবারই প্রথম প্রচন্ড গোলাগুলির আওয়াজ তাদের এলাকায় শুনা গেছে। তার ধারণা মিয়ানমারের জান্তা সরকার সমর্থিত একটি বিদ্রোহী গ্রুপ আরকান আর্মির দখলে থাকা ক্যাম্প গুলো দখলে নিতে অপর বিদ্রোহীরা এ হামলা চালাচ্ছে। জবাবে দখলদার আরকান আর্মি পাল্টা জবাব দিয়ে গোলাগুলির ঘটনা ঘটাচ্ছে।
তবে এতে হতাহতের কোন খবর এ সংবাদ লেখাকালঅবধি পাওয়া যায়নি। তুমব্রু বাজারের চতু ব্যবসায়ী মোঃ সরোয়ারও একই বক্তব্য দেন এ প্রতিবেদককে।
এদিকে সীমান্তে পুর্বাংশে সীমান্তের ৫১-৫২ পিলারের বিপরীতে সশস্ত্র বিদ্রোহী আরকান আর্মির একটি পোস্ট ধ্বংস ও তাদের টহলকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালান জান্তা বাহিনী।
৪৪ থেকে ৫০ নম্বর পিলার এলাকায় বুলেটপ্রুফ গাড়ি নিয়ে ১১ বিজিবি জোয়ানরা ১১ দিন পর আবারো টহলে দেখা গেছে বলে জানান সীমান্তের বাসিন্দা ছৈয়দ আহমদ ও গুরা মিয়া।
তবে এ বিষয়ে ৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল আবদুল্লাহ আল মাশরুকি বলেন, মিয়ানমার অংশে গোলাগুলি বা অন্য কোন ঘটনা ঘটলেও এপারের সীমান্তরক্ষীদের করার কিছু নেই।
তবে এ সীমান্তে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষীরারা নিয়মিত টহলে আছে চোরাচালান ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ সহ নিরাপত্তা রক্ষায়।