বান্দরবান;- দীর্ঘ ২৯ দিন অপেক্ষার পর পর্যটকদের ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে আগামীকাল থেকে খুলে দেয়া হচ্ছে বান্দরবানের সকল পর্যটন কেন্দ্র। ফলে পর্যটকদের বরণে প্রস্তুত নৈসর্গিক লীলাভূমি পার্বত্য জেলা বান্দরবান। তবে নানা জটিলতার কারণে রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানচিসহ তিন উপজেলার এখনো বন্ধ রয়েছে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে এগারোটা দিকে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন।
শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রশাসন সাথে আলোচনা করে আগামীকাল থেকে পর্যটক ভ্রমণের প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিন উপজেলা ব্যতীত বান্দরবান সদর, লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি নিশ্চিন্তে পর্যটক ঘুরে বেড়াতে পারবে। তাছাড়া পর্যটক ভ্রমণের জন্য পর্যটন স্পটগুলো নতুন আঙ্গিকে ঢেলে সাজানো হয়েছে যাতে পর্যটকদের কাছে বিমোহিত হয়। আর পর্যটকদের নিরাপত্তা জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠ পর্যায়ের থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশাসনের ঊর্ধতন কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীসহ পর্যটন ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, গেল মাসে ৮ তারিখে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি সহিংসতা জেড়ে তিন পার্বত্য জেলা পর্যটক ভ্রমণ না করার জন্য অনুরোধ জানান প্রশাসন। এরপর থেকে তিন জেলা পর্যটক ভ্রমণের বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভীক্ষে পড়ে পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ক্ষতিগ্রস্থ মুখে পড়তে হয়েছে হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী, চাদের গাড়ি চালক ও পর্যটক গাইডের। প্রতিদিন হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীদের প্রতিমাসে ক্ষতি পরিমান গুণতে হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। এছাড়াও পাহাড়ে ছুটে চলা চাদের গাড়ি চালক( থ্রি হুইলার মাহিন্দ্রা), ট্যুরিস্ট গাইডসহ পর্যটন ব্যবসায়ী জড়িত নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে দুর্ভিক্ষ পার করতে হয়েছে।
বান্দরবানের ৭০টি পর্যটন স্পট রয়েছে। নিলাচল, মেঘলা, নীলগীরি, শৈলপ্রপাত, দামতুয়া ঝর্ণা, মিরিঞ্জা হিলসহ রয়েছে অসংখ্য ঝিড়ি ঝর্ণা। প্রতি বছর এই মৌসুমে পর্যটকদের আনাগোনা যেন ভীড় লেগে থাকে। কেউ আসে পরিবার পরিজন নিয়ে আবার কেউ আসে বন্ধু বান্ধব নিয়ে। এসময়ে মেঘের মিতালী যেন নজর কাড়ে পর্যটকদের। ফলে দীর্ঘ বন্ধ থাকার পর পর্যটন খুলে দেয়াই প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, পর্যটন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়াই ব্যবসায়ীদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। কয়েকমাস পর্যটন স্পট বন্ধ থাকায় সেসব ক্ষতি হয়েছে এসব ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার আশ্বাস তাদের। পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়ার ফলে পর্যটকদের বরণে অপেক্ষায় প্রস্তুত রয়েছে হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া পর্যটকদের জন্য রাখা হয়েছে বিশেষ ছাড়। পর্যটকরা নির্বিঘ্নে ঘোরাঘুরি করতে পারবে বলে আশ্বাস সংশ্লিষ্টদের।
হোটেল-মোটেল এসোসিয়েশন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ও জসিম উদ্দিন বলেন, পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেয়াতেই ব্যবসায়ীদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। পর্যটকদের বরণ করতে হোটেল-মোটেল গুলো ঢেলে সাজানো হয়েছে। আর পর্যটকদের জন্য বিশেষ ছাড়ও ঘোষণা করা হয়েছে। আশা করছি আগামীকাল থেকে পর্যটকরা বান্দরবানে বেড়াতে আসবে এটাই প্রত্যাশা।
বান্দরবান পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার বলেন, পর্যটকরা যাতে নিশ্চিন্তে ঘোরাঘুরি করতে পারে সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠ পর্যায়ের থাকবে এবং পর্যটকদের নিরাপত্তা জন্য আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করা হবে।