শিরোনাম
বান্দরবানে চাঁদের গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী ম্রো যুবক আহত বান্দরবানে ইসলামী শিক্ষা কেন্দ্রের পরিচালকের অপসারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন রাঙ্গামাটিতে পৌর সেবা সপ্তাহে ৩ শতাধিক রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় বিলুপ্তর দাবি তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে পাহাড়ি-বাঙালি সমান সংখ্যক সদস্য চেয়ে হাইকোর্টে রিট, রুল জারি চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার বিচার ও ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবিতে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল চিন্ময় ইস্যুতে ভারতকে কড়া বার্তা দিল বাংলাদেশ চার বিভাগে নতুন কমিশনার ভৈরবে একই পরিবারের চারজনের মরদেহ উদ্ধার চট্টগ্রামে আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে চিন্ময় সমর্থকরা

ঠেকানো যাচ্ছে না মাদক

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৩৯ দেখা হয়েছে

♦ ৩২ জেলার ৯৬ থানার ৩৮৬ স্পট চিহ্নিত ♦ ধরা পড়ছে মোট মাদকের ১০ শতাংশ ♦ দেশে ১ কোটির বেশি মাদকাসক্ত ♦ বছরে খরচ ৬০ হাজার কোটি টাকা ♦ পাচার হয়ে যায় ৪৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ♦ মাদক নেটওয়ার্কে ২ লাখ মানুষ

ডেস্ক রির্পোট:- দেশে দেদার ঢুকছে মাদক। জল, স্থল ও আকাশপথে মাদক আসছে। পাশের দেশ ভারত ও মিয়ানমার থেকে এসব মাদকের অনুপ্রবেশ ঘটছে। দেশে এ পর্যন্ত ২৫ ধরনের মাদক শনাক্ত হয়েছে। মাদক এখন আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাদকের প্রবেশপথ হিসেবে বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন ৩২টি জেলাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে সর্বশেষ গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। প্রতিবেদনে ছয়টি বিভাগের ৩২টি জেলার ৯৬ থানার ৩৮৬টি মাদক স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। ডিএনসি বলছে, আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানের রুট ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল’ এবং ‘গোল্ডেন ক্রিসেন্ট’-এর একেবারে কেন্দ্রে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের মাদক নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (ইউএনওডিসি) তথ্য বলছে, বাংলাদেশে যত মাদক ঢুকছে, এর মাত্র ১০ শতাংশ ধরা পড়ে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারিভাবে সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান না থাকলেও বেসরকারি হিসাবে দেশে ১ কোটিরও বেশি মাদকাসক্ত রয়েছে। বছরে মাদকের পেছনে খরচ হয় আনুমানিক ৬০ হাজার কোটি টাকা। এ ব্যবসায় পৃষ্ঠপোষক, ব্যবসায়ী, বাহক ও বিক্রির নেটওয়ার্কে কাজ করে প্রায় ২ লাখ ব্যক্তি। প্রতি বছরই বাড়ছে এ সংখ্যা। বাংলাদেশ থেকে মাদকের কারণে প্রতি বছর পাচার হয়ে যায় ৪৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৫ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। কৌতূহল, পারিবারিক অশান্তি, বেকারত্ব, প্রেমে ব্যর্থতা, বন্ধুদের প্ররোচনা, অসৎ সঙ্গ, হতাশা ও আকাশ সংস্কৃতির নেতিবাচক প্রভাবে মাদকাসক্তের সংখ্যা বাড়ছে। মাদকাসক্তরা পরিবার ও সমাজের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। তারা অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশের পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হাসনাবাদ, টাকি, বসিরহাট, স্বরূপনগর, বাদুড়িয়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা, বনগাঁ, পেট্রাপোল, হেলেঞ্চা, ভবানীপুর, রানাঘাট, অমৃতবাজার, বিরামপুর, করিমপুর, নদীয়া, মালদহ, বালুরঘাট, আওরঙ্গবাদ, নিমতিতাসহ সীমান্তসংলগ্ন প্রায় সব এলাকা দিয়ে ১৫টি পয়েন্টে সাতক্ষীরা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট ও দিনাজপুরে মাদক ঢুকছে। ভারতের আসাম ও মেঘালয়ের বাংলাদেশ ঘেঁষা এলাকাগুলোর চারটি পয়েন্ট দিয়ে মাদক ঢুকছে কুড়িগ্রাম, শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনায়। বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তে ভারতের আসাম, ত্রিপুরা ও মিজোরামের চারটি পয়েন্ট দিয়ে মাদক ঢুকছে সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা ও ফেনীতে। ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর হয়ে নওগাঁর ১৭টি স্পট দিয়ে মাদক ঢুকছে। বাংলাদেশ পশ্চিম-উত্তরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, উত্তরে আসাম, উত্তর ও উত্তর-পূর্বে মেঘালয় এবং পূর্বে ত্রিপুরা ও মিজোরাম দ্বারা বেষ্টিত। দক্ষিণ-পূর্বে মিয়ানমারের সঙ্গে সীমানা রয়েছে। বাংলাদেশের ৩২টি জেলার সঙ্গে দুই দেশের সীমান্ত লাইন রয়েছে। এসব সীমানার ৩৮৬ স্পট দিয়ে মাদক ঢুকছে। ৮৮ শতাংশ মাদক আসছে ভারত থেকে, মিয়ানমার থেকে ৮ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ আসছে অন্যান্য দেশ থেকে। দেশে প্রবেশ করা মোট মাদকের ১৭ শতাংশ ঢাকা ও এর আশপাশ এলাকায় আসছে। বাকি ৮৩ শতাংশ মাদক সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। মিয়ানমারের সঙ্গে ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তের সবচেয়ে সক্রিয় মাদক রুটগুলো মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিয়ানমার থেকে কক্সবাজার ও সংলগ্ন এলাকা দিয়ে ঢুকছে কোটি কোটি পিস ইয়াবা। বেশির ভাগ ইয়াবা তৈরি হয় মিয়ানমার-চীন সীমান্তের শান ও কাচিন প্রদেশে। মিয়ানমারের সাবাইগন, তুমব্রু, মংডুর মতো ১৫টি পয়েন্ট দিয়ে টেকনাফের সেন্টমার্টিন, শাহপরীর দ্বীপ, ধুমধুমিয়া, কক্সবাজার হাইওয়ে, উখিয়া, কাটাপাহাড়, বালুখালী, বান্দরবানের ঘুমধুম, নাইক্ষ্যংছড়ি, দমদমিয়া, জেলেপাড়ার মতো অর্ধশত স্পট দিয়ে ইয়াবা ঢুকছে বাংলাদেশে। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, মাদকের সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। ডিএনসির পরিচালক (অপারেশনস ও গোয়েন্দা) তানভীর মমতাজ বলেন, মাদক কারবারি যেই হোক তাদের কঠোর হস্তে দমন করা হচ্ছে। সচেতনতা বাড়াতে প্রচার-প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। যেসব স্পট দিয়ে মাদক ঢুকছে, সেখানে দক্ষ জনবল দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর বলেন, মাদক সামাজিক সমস্যা। এক্ষেত্রে পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করে থাকে। সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, মাদকের বাহক বা মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে; কিন্তু এর পেছনে রাঘববোয়াল, পৃষ্ঠপোষক বা মূল হোতা হিসেবে যারা কাজ করছে তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।বাংলাদেশ প্রতিদিন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions