বান্দরবানে সড়কের কাজ শেষ না করেই বিল উত্তোলন!

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৪৯ দেখা হয়েছে

বান্দরবান:- বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার খুমি পাড়ায় ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ না করেই বিল উত্তোলন করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এতে ক্ষুব্ধ খুমী পাড়া, মংক্রো পাড়াসহ আশপাশের পাহাড়ি গ্রামগুলোর বাসিন্দারা। কাজের অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

প্রকৌশল বিভাগের তথ্যমতে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে রোয়াংছড়ি উপজেলার খুমি পাড়া হতে মংক্রো পাড়া পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার ইটের (এইচবিবি) সড়ক নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ দেয়া হয়। ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুবছর মেয়াদি উন্নয়ন কাজটি পাহাড়ি লাইসেন্সে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে উন্নয়ন কাজটি বাস্তবায়ন করেন আওয়ামীলীগের সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুরের আস্থাভাজন যুবলীগ নেতা আনিসুর রহমান সুজন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উন্নয়ন কাজের কার্যাদেশে খুমি পাড়া হতে মংক্রো পাড়া পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কথা থাকলেও পুরোপুরি রাস্তায় ইট বিছানো হয়নি।

ক্যছালং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেড়শ ফুট আগ থেকে খুমী পাড়া পর্যন্ত সড়কের মাটি কেটে রাস্তা প্রস্তুত করা হলেও কোনো ইট বসানো হয়নি। তবে রাস্তার দুপাশে বিভিন্ন জায়গায় ইট মওজুদ করে রাখার চিহ্ন দেখা গেছে। কোথাও ভাঙাচূড়া ইটের টুকরো পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে রাস্তার জন্য ইট নেয়া হলেও পরক্ষণে রাস্তা না করে ইটগুলো সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সড়কের সাড়ে কিলোমিটারে বালি বক্স করে ইট বসানো এবং ইটের ফাঁকে ফাঁকে বালি ফিলিং করার নিয়ম থাকলেও কোথাও এক ইঞ্চিও বালি দেয়া হয়নি। পাহাড়ের ঢাল কেটে মাটির ওপরেই আড়াই কিলোমিটারের মত রাস্তায় ভাঙ্গাচোরা নিম্নমানের ইট বিছানো হয়েছে। অথচ উন্নতমানের এক নম্বর ইট ধরা রয়েছে কার্যাদেশে।

স্থানীয় বাসিন্দার ইয়াংরি খুমী, রেংরুই খুমী অভিযোগ করে বলেন, সড়কটি খুমী পাড়া থেকে মংক্রো পাড়া পর্যন্ত ইটের রাস্তা হবার কথাছিল। ঠিকাদার রাস্তা নির্মাণের জন্য পাহাড়ের মাটি কেটে সমানও করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি রাস্তায় ইট না বিছিয়ে (লাগিয়ে) দুই কিলোমিটারের মত ইটের রাস্তা করে উধাও হয়ে যায়। বাকি এক-দেড় কিলোমিটারের মত রাস্তায় ইট না লাগিয়েই মন্ত্রীর প্রভাব বিস্তার করে কাজের বিলের পুরো অর্থ উত্তোলন করে নিয়েছে ঠিকাদার। যতটুকু কাজ করেছেন সেখানে বালি দেয়া হয়নি, শুধুমাত্র রুমায় ঠিকাদারের নিজের ইটের ভাটার নিম্নমানের ভাঙাচূড়া ইট বসিয়েই দায় সেরেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে এই ঠিকাদারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। গত ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর এ যুবলীগ নেতাও আত্মগোপনে রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন ইয়াছিন আরাফাত জানান, দুর্গমাঞ্চল হওয়ায় বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়েছে আমাদের কাজটি বাস্তবায়নে। সড়ক নির্মাণ কাজটি স্থানীয়দের সঙ্গে সমন্বয় করেই করা হয়েছে। যতটুকু সম্ভব কাজ আদায় করে নেয়ার চেষ্টা করেছি। তারপরও কাজের অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions