পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্যমান পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা জণিত কারণে তিন পার্বত্য জেলায় কঠিন চীবর দান উদযাপন না করার সিদ্ধান্ত

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১০৮ দেখা হয়েছে

রাঙ্গামাটি:- পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্যমান পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা জণিত কারণে তিন পার্বত্য জেলায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব কঠিন চীবর দান উদযাপন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ।
রোববার ৬ অক্টোবর দুপুরে রাঙ্গামাটি বনরূপা মৈত্রী বিহারে সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে এই ঘোষনা দেন, পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি ভদন্ত শ্রদ্ধালংকার মহাথের। সংবাদ সম্মেলনে তিন পার্বত্য জেলার ১৫টি বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বনভান্তে শিষ্য সংঘ বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ভদন্ত সৌরজগৎ মহাথের, পার্বত্য ভিক্ষু পরিষদ বান্দরবানের ভদন্ত তেজপ্রিয় মহাথের, রাজ নিকার মার্গ চিৎমরম কাপ্তাইয়ের সহসভাপতি জ্ঞানবংশ মহাথের, ত্রিরত্ন ভিক্ষু অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের ভদন্ত আপ্রাশ্রী মহাথের, খাগড়াছড়ি শাসনা রক্ষিতা ভিক্ষু সংঘের সভাপতি ভদন্ত সুমনা মহাথের সহ অন্যান্য ভিক্ষু সংঘের ভিক্ষু প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি ভদন্ত শ্রদ্ধালংকার মহাথের সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিদ্যমান পরিস্থিতি ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে এবছর পার্বত্য চট্টগ্রাম (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কঠিন চীবর দান উদযাপন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্মিলিত ভিক্ষু সংঘ।
সংবাদ সম্মেলনে শ্রদ্ধালংকার মহাথের লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, গত ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০ সেপ্টেম্বর ও ১লা অক্টোবর খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় শতাধিক দোকানপাট ভাংগচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। একইসাথে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি তিন জন আদিবাসী তিনজন ব্যাক্তি নিহত হন। হামলায় বিভিন্ন মন্দির, বুদ্ধমুর্তি ভাংচুর ও দানবাক্স লুট করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরো অভিযোগ কর হয়, আইন-শৃংখলা বাহিনীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় এমন সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ যাবতকালে যত সাম্প্রদায়িক হামলা হয়েছে তার কোন বিচার হয়নি। নামে মাত্র তদন্ত কমিটি করা হয়, যা আলোর মুখ দেখে না। প্রশাসনের প্রতি কোন আস্থা না থাকার পাশাপাশি বৌদ্ধ সমাজ ও ভিক্ষুসংঘ উদ্বিগ্ন ও শঙ্কিত। এমন নিরাপত্তাহীনতা ও অনিশ্চয়তার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল বিহারে কঠিন চীবর দান না করার ঘোষনা দেয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে তিন পার্বত্য জেলার ১৫ টি বৌদ্ধ ভিক্ষু সংঘের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এতে উপস্থিত ছিলেন বনভান্তে শিষ্য সংঘ বাংলাদেশের সহ-সভাপতি ভদন্ত সৌরজগৎ মহাথের, পার্বত্য ভিক্ষু পরিষদ বান্দরবানের ভদন্ত তেজপ্রিয় মহাথের, রাজ নিকার মার্গ চিৎমরম কাপ্তাইয়ের সহসভাপতি জ্ঞানবংশ মহাথের, ত্রিরত্ন ভিক্ষু এসোসিয়েশন বাংলাদেশের ভদন্ত আপ্রাশ্রী মহাথের, খাগড়াছড়ি শাসনা রক্ষিতা ভিক্ষু সংঘের সভাপতি ভদন্ত সুমনা মহাথেরসহ অন্যান্য ভিক্ষু সংঘের ভিক্ষু প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমিয় খীসা বলেন, পূজনীয় ভিক্ষুরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার সাথে আমরা একমত ও একাত্মনা ঘোষণা করছি। এই বছর রাজবন বিহারের অধিনে কোনও শাখা বিহারে কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান হবে না।

প্রসঙ্গত, আশ্বিনী পূর্ণিমাকে প্রবারণা পূর্ণিমা বলা হয়। প্রবারণা পূর্ণিমার পর থেকে এক মাসের জন্য কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান উদযাপন করা হয়। এক মাস ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাঁচ শতাধিক বিহারে ধারাবাহিকভাবে কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান উদযাপন করা হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা, সুতা থেকে চীবর(ভিক্ষুদের পরিধেয় কাপড়) তৈরি করা হয়। এই অনুষ্ঠান ঘিরে পার্বত্য চট্টগ্রামে এক মাস ধরে উৎসব পালিত হয়। আশ্বিনী পূর্ণিমা থেকে কার্তিকী পূর্ণিমা পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান চলে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions