ডেস্ক রির্পোট:- ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে যোগদান করতে এসে পুলিশের হাতে আটক হওয়া থেকে শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে গিয়ে পুলিশের ধাক্কায় পড়ে আহত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রভাষক শেহরীন আমিন ভূঁইয়া। তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন।
বুধবার দুপুর ১টার দিকে হাইকোর্টের অদূরে কার্জন হলের বিপরীত পাশের শিশু একাডেমির সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, দুপুর ১টার দিকে শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি কলেজের কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে যোগদানের উদ্দেশে হাইকোর্ট মোড়ের দিকে আসার সময় এক শিক্ষার্থীকে পুলিশ আটক করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তি ঘটে শিক্ষার্থীদের। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক নুসরাত জাহান চৌধুরী এবং প্রভাষক শেহরীন আমিন ভূঁইয়া বাধা দেন।
সেখানে রমনা জোনের এসি মোহাম্মদ ইমরুল পুলিশের নেতৃত্বে ছিলেন। তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ঘটে তাদের। একপর্যায়ে ইমরুল ছাত্রটির কলার ধরে শিক্ষকদের বলতে থাকেন, ‘আপনি তাকে ছাড়েন’, এ সময় শিক্ষক শেহরীন আমিন বলেন, ‘সে কী করছে বলেন’, ইমরুল তখন বলেন, ‘তার ফোন চেক করে ছেড়ে দেব’, তখন শিক্ষক বলেন ‘আপনি তার ফোন চেক করতে পারেন না’। ইমরুল ছাত্রের কলার ধরে টেনে নিয়ে আসেন।
তবে শেহরীন আমিন ছাত্রটির হাত ধরে রাখলে ইমরুল বলেন, ‘আপনি হাত ছাড়েন নইলে আমি ফোর্স অ্যাপ্লাই করব’। শেহরীন আমিন ছাত্রটিকে ছেড়ে দিতে বলেন। একপর্যায়ে পুলিশ ধাক্কা দিলে শেহরীন আমিন মাটিতে পড়ে যান। পুলিশ ছাত্রটিকে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরে শেহরীন আমিন ফোনে বলেন, বোরহানুদ্দীন কলেজের একজন শিক্ষার্থীকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন আমি ও আমার একজন সহকর্মী নুসরাত জাহান গিয়ে বাধা দেই। পুলিশকে বললাম তার অপরাধ কী? পুলিশ বলল তাকে চেক করব। তখন আমি পুলিশকে বলি চেক করার থাকলে এখানে করেন। আমাদের ব্যাগ, ফোন চেক করেন। পুলিশ তখন বার বার বলছিল, আমি কিন্তু বলপ্রয়োগ করব। এরপর পুলিশ ধ্বস্তাধস্তি করে তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল।
তিনি বলেন, ‘আমি ওই শিক্ষার্থীর হাত শক্ত করে ধরে রাখছিলাম। তখন একজন পুলিশ আমার হাত ধরে মুচড়ে দেয় ও আমাকে ধাক্কা দেয়। হাত মুচড়ে দেওয়াত হাতে একটু বেশি ব্যথা পেয়েছি। এর বেশি বলার মতো শক্তি আমার নেই।’
এরপর অধ্যাপক নুসরাত জাহান বলেন, ‘দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় শিক্ষক হিসেবে আমার শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে আমরা পারিনি। আমরা যখন তাদের পাশে দাঁড়াতে পারব না, ১২০ জন শিক্ষার্থীর ক্লাস নেওয়ার নৈতিক অধিকার আমার থাকবে না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর মাকসুদুর রহমানের ফোনে কল করা হলে তিনি উত্তর দেননি।
প্রসঙ্গত, রমনা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মোহাম্মদ ইমরুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের সাবেক ছাত্র, তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ।