শিরোনাম
ইউএনও’র বাসভবনে বান্ডিল বান্ডিল পোড়া টাকার ভিডিও ভাইরাল বিএনপি নেতার চাঁদাবাজি বন্ধে মানববন্ধন ১৮৭ পুলিশ কর্মকর্তাকে সন্ত্রাসী বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো পুনর্গঠন না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন না হওয়ায় কার্যত স্থবির তিন পার্বত্য জেলার উন্নয়ন প্রকল্প শ্রমিক অসন্তোষে পোশাকশিল্পে ক্ষতি ৪৮০০ কোটি টাকা: বিজিএমইএ আ. লীগ নিষিদ্ধসহ ২৩ দফা দাবি এলডিপির খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়িতে ১৮ বছর পর সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার প্রয়োজনে সিস্টেম ভেঙে নতুন লোক বসানো হবে: চট্টগ্রামে আসিফ মাহমুদ বান্দরবানে সাঙ্গু নদীতে রথ উৎসর্গের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রবারণা পূর্ণিমা

জামায়াত নিষিদ্ধ হচ্ছে সন্ত্রাস দমন আইনে আজ প্রজ্ঞাপন হচ্ছে

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০২৪
  • ৭৬ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রিপোট:- অবশেষে আলোচিত-সমালোচিত জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। আজ বুধবার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে। সন্ত্রাস দমন আইন অনুযায়ী সরকার এই ব্যবস্থা নিতে পারে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।

জানা গেছে, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পেছনে জামায়াতে ইসলামীর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে দাবি করে ক্ষমতাসীন দল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বক্তৃতায় বলেন, ‘বিএনপির প্রত্যক্ষ মদদে এবং জামায়াত-শিবিরের পরিকল্পনায় এসব ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। এই সহিংসতাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এমনই এক পরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের বৈঠকে গত সোমবার রাতে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রীকে দু-এক দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। ওই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে আজ বুধবার সংগঠন দুটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সরকারের নির্বাহী আদেশেই কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢুকে নাশকতা চালানোর দায়ে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে বলে গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হবে উল্লেখ করে সচিবালয়ে গতকাল আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কোন আইনি প্রক্রিয়ায় হবে। যখন সিদ্ধান্ত হবে, তখন বলবেন। তখন সাংবাদিকরা জানতে চান, ‘তাহলে কি আগামীকালের (আজকের) মধ্যে এ সিদ্ধান্ত (জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ) হবে?’ জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ।’ একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘কালকের মধ্যে যদি সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে তো নির্বাহী আদেশে হবে?’ এর জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো দলকে যখন নিষিদ্ধ করা হয়, তখন সেটি নির্বাহী আদেশেই হয়।’ এরপর প্রশ্ন করা হয়, ‘তাহলে কি নির্বাহী আদেশেই হচ্ছে (জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ)? জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘যারা কোটা আন্দোলন করেছিলেন, তারা কিন্তু বলেছেন, এই সহিংসতার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাদের (সরকার) কাছে তথ্য–উপাত্ত আছে জামায়াত, বিএনপি, ইসলামী ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের যারা জঙ্গি, তারাই এটা (সহিংসতা) করেছে। দলটিকে (জামায়াত) যদি নিষিদ্ধ করা হয়, তাহলে দেশের আইনশৃঙ্খলা ও রাজনীতিরও অনেক উন্নতি হবে।

জানা যায়, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে দলটির সম্পৃক্ততা থাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মহল থেকেও দলটিকে নিষিদ্ধের দাবি চলে আসছিল। যুদ্ধাপরাধ বিচার ট্রাইব্যুনালের রায়েও দলটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। সবশেষ দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে জামায়াতে ইসলামী ও এর অঙ্গসংগঠন ছাত্রশিবির সারা দেশে সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ক্ষমতাসীনরা।

আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সন্ত্রাস দমন আইন, ২০০৯ অনুযায়ী জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ হচ্ছে। এটি আন্তর্জাতিক মানের একটি আইন। নাইন-ইলেভেনে আমেরিকায় সন্ত্রাসী হামলার পর বিভিন্ন দেশে এ ধরনের আইন হয়েছে। সাম্প্রতিক সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আইনটির পুরোপুরি মিল রয়েছে। আইনে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের যে সংজ্ঞা দেওয়া আছে, তার সঙ্গেও বর্তমান কর্মকাণ্ডের মিল পাওয়া যায়। এ ছাড়া সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে (সংগঠনের স্বাধীনতা) সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনাকারী রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিষয়ে বলা রয়েছে।

নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার নিন্দা জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম। একটি রাজনৈতিক দল বা জোট অন্য একটি রাজনৈতিক দলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। বাংলাদেশের আইন ও সংবিধান কাউকে এ এখতিয়ার দেয়নি।

অন্যদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার একটার পর একটা ইস্যু তৈরি করে মূল ইস্যুকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যায়। এখন তারা জামায়াত নিয়ে ইস্যু করেছে, এটিও তাদের আরেকটি প্রজেক্ট। সব দলকে নিষিদ্ধ করে বাকশাল কায়েম করতে চায় সরকার।

সন্ত্রাস দমন আইন:

আইন মন্ত্রণালয়ের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সন্ত্রাস দমন আইন-২০০৯-এর ৬ ও ৭ ধারায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের যে সংজ্ঞা দেওয়া রয়েছে, সেই সংজ্ঞার সঙ্গে বর্তমান সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মিল রয়েছে। এ ছাড়া আইনটির ১৭ ও ১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য কোনো দলকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে বলা আছে। সরকার এই আইনটি ব্যবহার করে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধের পথে হাঁটছে। এ ছাড়া সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদকেও কাজে লাগাবে সরকার।

সন্ত্রাস দমন আইনের ৬ (১) ধারায় বলা হয়েছে, (১) যদি কোনো ব্যক্তি, সত্তা বা বিদেশি নাগরিক-‘(ক) বাংলাদেশের অখণ্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করিবার জন্য জনসাধারণ বা জনসাধারণের কোন অংশের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে সরকার বা কোন সত্তা বা কোন ব্যক্তিকে কোন কার্য করিতে বা করা হইতে বিরত রাখিতে বাধ্য করিবার উদ্দেশ্যে-(অ) অন্য কোন ব্যক্তিকে হত্যা, গুরুতর আঘাত, আটক বা অপহরণ করে বা করিবার প্রচেষ্টা গ্রহণ করে; অথবা (আ) অন্য কোন ব্যক্তিকে হত্যা, গুরুতর জখম, আটক বা অপহরণ করার জন্য অপর কোন ব্যক্তিকে ষড়যন্ত্র বা সহায়তা বা প্ররোচিত করে; অথবা (ই) অন্য কোন ব্যক্তি, সত্তা বা প্রজাতন্ত্রের কোন সম্পত্তির ক্ষতি সাধন করে বা করিবার প্রচেষ্টা গ্রহণ করে; অথবা (ঈ) অন্য কোন ব্যক্তি, সত্তা বা প্রজাতন্ত্রের কোন সম্পত্তির ক্ষতি সাধন করিবার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্র বা সহায়তা বা প্ররোচিত করে; অথবা (উ) উপ-দফা (অ), (আ), (ই) বা (ঈ) এর উদ্দেশ্য সাধনকল্পে কোন বিস্ফোরক দ্রব্য, দাহ্য পদার্থ ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে বা নিজ দখলে রাখে; (খ) অন্য কোন রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত বা উহার সম্পত্তি বিনষ্ট করিবার অভিপ্রায়ে দফা (ক) এর উপ-দফা (অ), (আ), (ই), (ঈ) বা (উ) এর অনুরূপ কোন অপরাধ সংঘটন করে বা সংঘটনের প্রচেষ্টা করে বা উক্তরূপ অপরাধ সংঘটনের জন্য প্ররোচিত, ষড়যন্ত্র বা সহায়তা করে; (গ) কোন আন্তর্জাতিক সংস্থাকে কোন কার্য করিতে বা করা হইতে বিরত রাখিবার জন্য দফা (ক) এর উপ-দফা (অ), (আ), (ই), (ঈ) বা (উ) এর অনুরূপ কোন অপরাধ সংঘটন করে বা সংঘটনের উদ্যোগ গ্রহণ করে বা উক্তরূপ অপরাধ সংঘটনের জন্য প্ররোচিত, ষড়যন্ত্র বা সহায়তা করে; (ঘ) জ্ঞাতসারে কোন সন্ত্রাসী সম্পত্তি ব্যবহার করে বা অধিকারে রাখে; (ঙ) এই আইনের তপশিল-১ এ অন্তর্ভুক্ত জাতিসংঘ কনভেনশনে বর্ণিত কোন অপরাধ করিতে সহায়তা, প্ররোচিত বা ষড়যন্ত্র করে বা সংঘটন করে বা সংঘটন করিবার প্রচেষ্টা করে; (চ) কোন সশস্ত্র সংঘাতময় দ্বন্দ্বের বৈরী পরিস্থিতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন নাই এইরূপ কোন বেসামরিক কিংবা অন্য কোন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটাইবার বা মারাত্মক শারীরিক জখম ঘটাইবার অভিপ্রায়ে এইরূপ কোন কার্য করে, যাহার উদ্দেশ্য, উহার প্রকৃতিগত বা ব্যাপ্তির কারণে, কোন জনগোষ্ঠীকে ভীতি প্রদর্শন বা অন্য কোন সরকার বা রাষ্ট্র বা কোন আন্তর্জাতিক সংস্থাকে কোন কার্য করিতে বা কোন কার্য করা হইতে বিরত থাকিতে বাধ্য করে; তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি, সত্তা বা বিদেশি নাগরিক ‘‘সন্ত্রাসী কার্য’’ সংঘটনের অপরাধ করিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।’

সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন সংক্রান্ত অপরাধ বিষয়ে (৭) (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোন ব্যক্তি বা সত্তা স্বেচ্ছায়, বৈধ বা অবৈধ উৎস হইতে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যে কোনভাবে এই অভিপ্রায়ে অর্থ, সেবা বা অন্য যে কোন সম্পত্তি সরবরাহ, গ্রহণ, সংগ্রহ বা উহার এইরূপ ব্যবস্থা করে যে, উহার সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ—(ক) সন্ত্রাসী কার্য পরিচালনায় ব্যবহৃত হইবে; বা (খ) সন্ত্রাসী ব্যক্তি বা সন্ত্রাসী সত্তা কর্তৃক যে কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হইবে অথবা ব্যবহৃত হইতে পারে মর্মে জ্ঞাত থাকে; তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তি বা সত্তা সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়নের অপরাধ সংঘটন করিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।’

৭-এর (২) ধারায় বলা হয়েছে, ‘সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন সংক্রান্ত অপরাধে দোষী সাব্যস্তকরণের ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত অর্থ, সেবা বা অন্য যে কোন সম্পত্তি প্রকৃতই কোন সন্ত্রাসী কার্য সম্পাদনের বা পরিচালনার ক্ষেত্রে বা সন্ত্রাসী কার্য সম্পাদনের প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হইয়াছে কি না বা কোন সুনির্দিষ্ট সন্ত্রাসী কার্যের সহিত সম্পর্কযুক্ত ছিল কি না, উহার উপর নির্ভর করিবে না।’

সন্ত্রাস দমন আইনের চতুর্থ অধ্যায়ে ‘নিষিদ্ধ ঘোষণা ও তালিকাভুক্তকরণ এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন বাস্তবায়ন’ অংশে বলা হয়েছে, (১৭) ‘এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোনো ব্যক্তি বা সত্তা সন্ত্রাসী কার্যের সহিত জড়িত বলিয়া গণ্য হইবে, যদি সেই ব্যক্তি বা উহা (ক) সন্ত্রাসী কার্য সংঘটিত করে বা উক্ত কার্যে অংশগ্রহণ করে; (খ) সন্ত্রাসী কার্যের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে; (গ) সন্ত্রাসী কার্য সংঘটনে সাহায্য বা উৎসাহ প্রদান করে; (ঘ) সন্ত্রাসী কার্যের সহিত জড়িত কোনো সত্তাকে সমর্থন ও সহায়তা প্রদান করে; (ঙ) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন নং ১৩৭৩ এ উল্লিখিত নিম্নবর্ণিত তালিকাভুক্তি বা নিষিদ্ধের মানদণ্ডের আওতাভুক্ত হয়, যথা:- (১) যদি কোনো ব্যক্তি বা সত্তা কোনো সন্ত্রাসী কার্য করে বা প্রচেষ্টা গ্রহণ করে বা অংশগ্রহণ করে বা সন্ত্রাসী কার্য সংঘটনে সহযোগিতা করে; (২) তালিকাভুক্ত বা নিষিদ্ধ ঘোষিত যে কোনো ব্যক্তি বা সত্তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো সত্তা; (৩) তালিকাভুক্ত বা নিষিদ্ধ ঘোষিত যে কোনো ব্যক্তি বা সত্তার পক্ষে বা নির্দেশে কাজ করে এরূপ অন্য কোনো ব্যক্তি বা সত্তা। (চ) কোনো সন্ত্রাসী ব্যক্তিকে আশ্রয় প্রদান করে; অথবা (ছ) অন্য কোনোভাবে সন্ত্রাসী কার্যের সহিত জড়িত হয়।’

১৮ অনুচ্ছেদে ‘নিষিদ্ধ ঘোষণা ও তালিকাভুক্তকরণ’ অংশে বলা হয়েছে, (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, কোনো ব্যক্তি বা সত্তা সন্ত্রাসী কার্যের সহিত জড়িত রহিয়াছে মর্মে যুক্তিসংগত কারণের ভিত্তিতে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত ব্যক্তিকে তপশিলে তালিকাভুক্ত করিতে পারিবে বা সত্তাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা ও তপশিলে তালিকাভুক্ত করিতে পারিবে। (২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে কোনো ব্যক্তি বা সত্তাকে তপশিলে তালিকাভুক্ত করিতে বা তপশিল হইতে বাদ দিতে পারিবে অথবা অন্য কোনোভাবে তপশিল সংশোধন করিতে পারিবে।’

সংবিধানের ভাষ্য:

সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে ‘সংগঠনের স্বাধীনতা’ অংশে বলা হয়েছে, ‘জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতার স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে সমিতি বা সংঘ গঠন করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে। তবে শর্ত থাকে যে, কোনো ব্যক্তির উক্তরূপ সমিতি বা সংঘ গঠন করিবার কিংবা উহার সদস্য হইবার অধিকার থাকিবে না, যদি (ক) উহা নাগরিকদের মধ্যে ধর্মীয়, সামাজিক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করিবার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়; (খ) উহা ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ, জন্মস্থান বা ভাষার ক্ষেত্রে নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করিবার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়; (গ) উহা রাষ্ট্র বা নাগরিকদের বিরুদ্ধে কিংবা অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী বা জঙ্গিকার্য পরিচালনার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়; বা (ঘ) উহার গঠন ও উদ্দেশ্য এই সংবিধানের পরিপন্থি হয়।’

যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের পর্যবেক্ষণ:

মানবতাবিরোধী বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পর্যবেক্ষণেও জামায়াতে ইসলামীকে অপরাধী সংগঠনের আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া রায়ের পর্যবেক্ষণে ট্রাইব্যুনাল বলেছিলেন, দালিলিক প্রমাণ ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বলা যায়, জামায়াতে ইসলামী একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে ইচ্ছাকৃতভাবে অপরাধী সংগঠনের মতো কাজ করেছে, বিশেষ করে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া অন্তত চারটি রায়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীকে পাকিস্তানি সেনাদের ‘সহযোগী বাহিনী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এসব রায়ের পর্যবেক্ষণে ট্রাইব্যুনাল মুক্তিযুদ্ধকালীন নৃশংসতার জন্য পাকিস্তানি সেনাদের পাশাপাশি জামায়াতকেও দায়ী করা হয়।

সরকারের মন্ত্রীদের ভাষ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলন ‘ছিনিয়ে’ নিয়ে জামায়াত-শিবির দেশব্যাপী নাশকতা চালিয়েছে। এমন তথ্য-উপাত্ত তারা সংগ্রহ করে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। আন্দোলনে হামলা-অগ্নিসংযোগ ও নিহতের সব দায় জামায়াত-শিবিরের ঘাড়ে চাপিয়ে তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন উল্লেখ করে নিষিদ্ধ করার এখনই সময়। এ সময় জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে ব্যাখ্যা তুলে ধরবে সরকার। বিদেশি কূটনীতিকদেরও সরকার বিষয়টি বোঝাতে পারবে বলে মনে করছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions