ডেস্ক রির্পোট:- এমডি মিজান। বিসিএস প্রশ্ন বিক্রি চক্রের হোতা। কয়েক কোটি টাকার সম্পদের মালিক। নাম মিজানুর রহমান হলেও এলাকায় এমডি মিজান বলে পরিচিত। অনেকে নাম রেখেছেন সরকারি চাকরির জাদুকর। ছাত্রলীগ, যুবলীগের রাজনীতি না করেও হয়েছেন আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। সবই হয়েছেন সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর এপিএস’র ঘনিষ্ঠের সুবাদে। বাড়ি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচার কুঠিরপাড় গ্রামে। গাড়ির শব্দেও বলে দেয় এমডি মিজান আসছে গ্রামে। আচার-আচরণ কোটিপতির।
দীর্ঘদিন ধরে জড়িত প্রশ্ন সিন্ডিকেটে। এলাকাবাসী জানলেও প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর এপিএস’র ঘনিষ্ঠ হওয়ায় প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি কেউ। সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রীর এপিএস’র ঘনিষ্ঠ সুবাদে চালিয়ে যায় একের পর এক অপরাধ। এলাকায় নামে-বেনামে ক্রয় করেছে ২০ বিঘার উপরে জমি। যার মূল্য কয়েক কোটি টাকার উপরে। আদিতমারী শহরে ক্রয় করেছে প্লট। একই এলাকার হাজিগঞ্জ, ভাদাইসহ অনেক এলাকায় স্ত্রী-পুত্রের নামে গড়িছে সম্পদ। শ্বশুরবাড়ি দিনাজপুরেও আত্মীয়স্বজনের নামে নিয়েছে জমি। এমডি মিজান এলাকায় ঠিকাদারি করেন। মিজানের বাবা ছিলেন সাবেক পুলিশ কর্মকতা আবু বক্কর সিদ্দিক। দুই ভাই মিজান আর তার ছোট ভাই মশিয়ার রহমান পুলিশের এসআই। রয়েছে তার দুই বোন। বোনদের হয়েছে বিয়ে। মিজান বেশির ভাগ থাকেন ঢাকার ধানমণ্ডি এলাকায়। মাঝে মাঝে মহিষখোচা কুঠিরপাড়ে নিজ বাড়িতে আসেন ৫/৭ দিনের সফরে। বাড়ি আসলেই বাড়ে অচেনা লোকজনের আনাগোনা। শুধু বিসিএস প্রশ্ন না সরকারি অনেক দপ্তরের চাকরির প্রশ্নও করেন বিক্রি। কুঠিরপাড় গ্রামের আজমল আলী জানান, এমডি মিজান বাড়ি আসলেই কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুরসহ অনেক এলাকার লোকজন ছুটে আসে। পৈতৃক সম্পত্তি থাকলেও নিজ সম্পত্তিতে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়েছেন মিজান।
সরজমিন বিসিএস প্রশ্ন ফাঁস চক্রের হোতা এমডি মিজানুর রহমানের বাড়ি মহিষখোচার কুঠিরপাড়ে দেখা যায় তার পৈতৃক টিনের ঘর দালান বাড়ি থাকলেও মিজান নিজের টাকায় তৈরি করছে বিলাস বহুল ডুপ্লেক্স দোতালা ভবন। ডুপ্লেক্স বাড়ির নির্মাণকাজ চলছে মিজানের। এলাকার স্কুল শিক্ষক আজগার আলী জানান, মিজান প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকাটাই স্বাভাবিক, কারণ তা না হলে বাড়ি আসলেই দূর-দূরান্ত থেকে লোকজনের আনাগোনা বেশি কেন। তদন্তে প্রমাণিত হলে শাস্তির দাবি করেন তিনি। এদিকে বিসিএস প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এমডি মিজানের খবরে জেলা জুড়ে চলছে আলোচনা-সমলোচনা। সনাক-এর ডা. আশিক ইকবাল জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হয়ে যদি বিসিএস প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকে তা হলে দেশের মেধাবীরা কী করবে। তার শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। ওদিকে আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এমডি মিজানুর রহমান মিজান প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতাকমীদের মাঝে তোলপাড় চলে। শনিবার জরুরি সভা বসে আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসে। উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে সিদ্ধান্ত হয় এমডি মিজানকে দল থেকে বহিষ্কারের। মিটিং শেষে সাংবাদিকদের মাঝে মিজানের আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করার কথা জানান দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ও সভাপতি মোহাম্মদ আলী। অপর দিকে এমডি মিজানুর রহমান মিজান পলাতক থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি তবে তার স্বজনরা জানান মিজান জড়িত না। আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রফিকুল ইসলাম জানান, যেহেতু বিষয়টা দুদক দেখছে তারা নির্দেশ দিলে আরও তদন্ত করা হবে।