শিরোনাম
বাণিজ্য সম্ভাবনায় ‘সেভেন সিস্টার্স’ দুবাইয়ে বিপু-কাজলের ২০০ কোটির দুই ভিলা পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে,প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দিকে তাকিয়ে সবাই শিক্ষার্থীদের পরিকল্পিতভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে ঢাকা-দিল্লি পররাষ্ট্রসচিব বৈঠক ডিসেম্বরে, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনা হবে কি এবার মারা গেলেন পরীমণির প্রথম সিনেমার পরিচালক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পরামর্শ সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুপারিশ, বদিউল বললেন, ‘বিবেচনায় রয়েছে’ বান্দরবানে নৌকা বাইচ দিয়ে ক্রীড়া মেলা শুরু রাঙ্গামাটিতে সাফজয়ী পাহাড়ের তিন কন্যাকে উষ্ণ সংবর্ধনা

কক্সবাজার মডেল হাই স্কুল : প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোটি টাকা দুর্নীতির তদন্ত শুরু

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০২৪
  • ১২১ দেখা হয়েছে

কক্সবাজার:- নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থআত্মসাৎ, স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজার মডেল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক কে এম রমজান আলীর বিরুদ্ধে। গেল ছয় বছরে বিদ্যালয়ের কোটি টাকা লুটপাট করেছেন তিনি। শিক্ষকদের মাঝে বিভাজন তৈরে করে গড়ে তোলেছেন নিজস্ব সিন্ডিকেট। বিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাসের পরিবর্তে বাধ্যতামূলক কোচিং বাণিজ্যে জড়িয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করেছেন অতিরিক্ত টাকা। এতে ভেঙে পড়েছে বিদ্যালয়ের নিয়ম-শৃঙ্খলা। এ অবস্থায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিভাবক মহল। তারা দ্রুত দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধান শিক্ষকের অপসারণ দাবি জানিয়েছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কে. এম. রমজান আলীর অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থআত্মসাৎ, স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চলতি বছরের ১৫ মে আবদুর রহমান নামের এক অভিভাবক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য জেলা জেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশনা দেন শিক্ষাবোর্ড। ২০ মে ২৪৫ নাম্বর স্বারকে শিক্ষা ও কল্যাণ শাখার সহকারী কমিশনার মির্জা মো: তাওসীফ শরীফ স্নিগ্ধ এ পত্র দেন।

অভিযোগ তদন্ত করছেন কক্সবাজার সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ইসমাইল। তিনি বলেন, ‘রমজান আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের জন্য আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আজ বুধবার অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত দুইজনের সাক্ষ্য নেয়া হবে। বাকিটা তদন্তের পর বলা যাবে।’

অভিযোগকারী আবদুর রহমান বলেন, দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাত ও কোচিং বাণিজ্যে জড়িয়ে বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেছেন প্রধান শিক্ষক কে এম রমজান আলী। তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয় ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষার স্বার্থে আমি অভিযোগ করেছি।

তথ্য মতে, বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ১২০০ শতাধিক। এ হিসেবে ভর্তি ফরম, ভর্তি ফি, মাসিক বেতন, টার্ম পরিক্ষা ফি, মডেল টেস্ট, প্রশংসাপত্র ফি, মিলে প্রতিবছর শুধু শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিদ্যালয়ে কোটি টাকার উপরে আয় হয়। অথচ ব্যাংকে স্থিতি বলতে থাকে মাত্র কয়েক লাখ টাকা।

২০২২ সালের হিসেব থেকে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোট টাকায় আয় হয়েছে ১ কোটি ১৪ লাখ, ২২ হাজার ১০০ টাকা। এরআগে ২০২১ সালে ব্যাংকে স্থিতি ছিলো ৪১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। সে হিসেবে দুই বছরে ১ কোটি ৫৫ লাখ ৫২ হাজার ১০০ টাকা স্থিতি থাকার কথা। কিন্তু প্রধান শিক্ষক অফিস ও আপ্যায়ন খরচ হিসেবে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা, টার্ম পরীক্ষা ব্যয় ৩ লাখ টাকা, বেতন বোনাস সাড়ে ৪৮ লাখ টাকা আরও অন্যান্য ব্যয় দেখানোর পরে ব্যাংকে স্থিতি থাকার কথা ছিল ৮৩ লাখ ৬২ হাজার ১০০ টাকা। কিন্তু ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর ব্যাংক স্থিতি রয়েছে শুধুমাত্র ১০ লাখ ১৫ হাজার টাকা। বিদ্যালয়ের বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথায় গেল সেই প্রশ্ন এখন অভিভাবক মহলের। প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে ২০১৭ সালে ২৫ এপ্রিল ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা’ বোর্ড চেয়ারম্যানকে লিখিতভাবে অবহিত করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি)।

শুধু অর্থ আত্মসাৎ নয়, নিজের অপরাধ আড়াল করতে বিদ্যায়ের ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনও কৌশলে বন্ধ রেখেছেন প্রধান শিক্ষক। সর্বশেষ ২০১৭ সালের ৩১’মে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও সঠিক সময়ে নির্বাচনের কাগজপত্র শিক্ষাবোর্ডে প্রেরন না করায় নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা করেন। এর কারণ দর্শাতে সাত দিনের মধ্যে এর ব্যাখ্যা দিতে প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেন শিক্ষাবোর্ড। একই বছর ১৬ আগস্ট বোর্ডের কাছে ক্ষমা চান প্রধান শিক্ষক। বিধিমালা না মেনে ২ জন শিক্ষক, ১ জন কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ দেন। একই সাথে কোন প্রকার টেন্ডার ছাড়া ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করেন। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রধান শিক্ষক নিজের পছন্দের ও অনুগত শিক্ষক দিয়ে নতুন এডহক কমিটি গঠনে শিক্ষাবোর্ডে সুপারিশ পাঠান। এ কমিটি প্রবিধানমালা ২০০৯-এর বিধি ১২ অনুযায়ী ২০২৪ সালের ৭ এপ্রিলের মধ্যে ভোটার তালিকা সম্পন্ন করার কথা। কিন্তু এ সংক্রান্ত কোনো কাজই করেননি এডহক কমিটি।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কমিটি না থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন ভাতা উত্তোলনে প্রধান শিক্ষকের পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষর নেয়া বাধ্যতামূলক করেন শিক্ষা বোর্ড। কিন্তু তিনি তাও মানেন নি রমজান আলী।

জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক কে এম রমজান আলী বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তা সত্য নয়। একটি অসাধু চক্র স্কুলের সুনাম নষ্ট করতে মূলত আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।’

এই বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন জানিয়ে, ‘কেজি স্কুলের প্রধান শিক্ষক রমজান আলীর অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কার্যক্রম চলমান। তা শিগগিরই সম্পন্ন হবে। অভিযোগ প্রমাণিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’আজাদী

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions