বান্দরবানে হাতের সঙ্গেই উঠে যাচ্ছে সড়কের পিচ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ২০ মে, ২০২৪
  • ১২৩ দেখা হয়েছে

বান্দরবান:- বান্দরবান সদর উপজেলায় সড়ক সংস্কারের দুই দিন পরই পিচ ঢালাই সড়কের (কার্পেটিং) উঠে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে মেসার্স নুর কনস্ট্রাকশন স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার মৌলভি সুলতান আহমেদ বিরুদ্ধে। এলজিইডি কর্মকর্তা যোগসাজশে ফলে ঠিকাদারের এমন দুর্নীতি অনিয়মের প্রশ্রয় পেয়েছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসীরা। এছাড়াও কয়েকদিন আগে নিম্নমানের ইট ব্যবহারের ফলে অনিয়মের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল ঠিকাদারের প্রতিষ্ঠান বিরুদ্ধে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েকদিন আগে রাস্তাটির কার্পেটিং কাজ শুরু করেছিলেন ঠিকাদার। শুরুর চার থেকে পাঁচ দিন পরই হাত দিলেই উঠে যাচ্ছে পিচ ঢালাইয়ে কার্পেটিং। তাছাড়া কার্পেটিং করার পূর্বে সড়কটি পরিষ্কার না করে ধুলো ময়লা উপরে শুরু করেছে পিচ ঢালাইয়ের কাজ। ধুলা মিশ্রিত পাথর, নিম্নমানের ভিটামিন ব্যবহার করায় রাস্তার এমন বেহাল দশা হয়েছে। তাছাড়া ঠিকাদার ও এলজিইডির প্রকৌশলীদের যোগসূত্রে নিম্নমানের ও কম সামগ্রী দিয়ে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, ভাগ্যকুল মাজার গেট হতে আলীনগর স্কুল পর্যন্ত ৫ কিলো সড়ক সংস্কারে বাস্তবায়ন করছেন ঠিকাদার মৌলভি সুলতান আহমেদ। কিন্তু এই সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করায় জাতীয় পত্রিকাতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল। এরপর টনক নড়েচড়ে বসে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। নিম্নমানের ইট খোয়া তুলে নতুন ব্যবহার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কার্পেটিংয়ে কাজে একইভাবে দুর্নীতির অনিয়মের আশ্রয় নেন ঠিকাদার। সেখানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ফলে শুরু হয় পুনরায় নিম্নমানের কার্পেটিং কাজ। তবে সেই কাজে স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনের।

এলজিইডি তথ্য মতে, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ৯৬ লাখ টাকার ব্যয়ের সড়ক সংস্কারে প্রকল্পটি পেয়েছেন মেসার্স নুর কনস্ট্রাকশন স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মৌলভি সুলতান আহমেদ। সুয়ালক ইউনিয়নের ভাগ্যকুল মাজার গেইট হতে আলীনগর স্কুল পর্যন্ত ৫ কিলো সড়ক সংস্কারে বাস্তবায়ন করছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। যেটি ২০২৫ সালে শেষ হওয়া কথা রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের ভাগ্যকুল মাজার গেইট হতে আলীনগর স্কুল পর্যন্ত ৫ কিলো রাস্তার সংস্কারের পিচ ঢালাই (কার্পেটিং) কাজ চলমান। অধিকাংশ স্থানে পিচ ঢালাই কাজ শেষ কিছু স্থানে এখনও চলমান। কিন্তু আলীনগর স্কুল আগ পূর্বে সড়কে স্থানীয়রা হাত দিয়ে পিচ ঢালাই তুলে ফেলছেন। অন্যদিকে কার্পেটিং পিচ উঠতে দেখে ছুটে আসেন সড়কে পরিদর্শনে দায়িত্বে থাকা মেহেদি নামে এক ব্যক্তি। শুধু তাই নয় সেসব কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে সূত্র রয়েছে ঠিকাদারের প্রতিষ্ঠানের সাথে। নিম্নমানের কাজ ও দুর্নীতিকে ধামাচাপা দিতে সাংবাদিকদের সংবাদ প্রকাশ না করতে তোড়জোড় শুরু করেন এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী কর্মকর্তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা তোফায়েল ইসলাম বলেন, নিম্নমানের ভিটামিন কম ও সড়ক পরিষ্কার না পিচ ঢালাইয়ের কাজ শুরু করার ফলে রাস্তার পিচ হাত দিলে উঠে যাচ্ছে। এভাবে হলে সরকারে টাকা শুধু অপচয় ছাড়া আর কিছুই নই।

সড়কের চলাচল-কৃত টমটম ও ট্রাক চালক শহিদ ও মোরশেদ বলেন, দুইদিন আগে রাস্তার পিচ ঢালাই কাজ শেষ হয়েছে। তিনদিনের মাথায় উঠে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের দুর্নীতি কারণে সড়কে বেহাল অবস্থা।

এ ব্যাপারে মেসার্স নুর কনস্ট্রাকশন স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার মৌলভি সুলতান আহমেদ সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।

সড়ক সংস্কারের কাজে দায়িত্বে থাকা এলজিইডির প্রতিনিধির কাছে জানতে চাইলে মেহেদী বলেন, সংস্কার কাজের কার্পেটিং এভাবেই করা হয়। তাছাড়া ভাই এসব যদি নির্বাহী প্রকৌশলী কাছে যায় সমস্যা হবে। তাই কাউকে পাঠাবেন না আর কাউকে বলবেন না আমি ঠিকাদার সাথে কথা বলছি।

সড়ক সংস্কার কাজে অনিয়মের বিষয়ে জানতে এলজিইডি বান্দরবান সদর উপজেলার ইঞ্জিনিয়ার বিএম মাহামুদুল হাসান এর সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী জামাল উদ্দিন বলেন, এর আগেও রাস্তা সংস্কার কাজে নিম্নমানের ইট ব্যবহারের কারণে সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। আর গতকাল যে কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে সেটির বিষয়ে উপজেলার ইঞ্জিনিয়ারকে বলেছি সমন্বয় করার জন্য।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions