ডেস্ক রির্পোট:- মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে ফাঁসির আসামিদের কনডেম সেলে রাখা যাবে না বলে হাইকোর্টের দেয়া রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। গতকাল আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। এ বিষয়ে আজ আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে শুনানি হবে।
অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পেলে আমরা আপিল করব। এখন রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।’
গত সোমবার মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্ত হওয়ার আগে দণ্ডিত আসামিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না বলে রায় দিয়েছেন আদালত। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের দিন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংবিধানের ১০৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের সুযোগ রয়েছে। এসব প্রক্রিয়া শেষ করতে ১০-১২ বছর পার হয়। কিন্তু বাংলাদেশে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পরই সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে নির্জন কনডেম সেলে বন্দি রাখা হয়। অথচ অনেকের পরবর্তী সময়ে সাজা কমে। অনেকে খালাসও পান। এসব বিবেচনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির আপিল, রিভিউ, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার ধাপগুলো নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ২০২২ সাল পর্যন্ত ২ হাজার ৫৫৬ আসামি কনডেম সেলে রয়েছে। তাদের দুই বছরের মধ্যে ক্রমান্বয়ে সাধারণ সেলে রাখার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বিশেষ কারণে (স্বাস্থ্যগত কারণ, সংক্রামক রোগ) কোনো ব্যক্তিকে নির্জন কক্ষে রাখতে পারবে কারা কর্তৃপক্ষ। সেক্ষেত্রে এ বিষয়ে ওই ব্যক্তির উপস্থিতিতে শুনানি হতে হবে।’
এর আগে ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মামলা চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হওয়ার আগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কনডেম সেলে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়। চট্টগ্রাম কারাগারে কনডেম সেলে থাকা জিল্লুর রহমানসহ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন বন্দির পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির এ রিট করেন।
হাইকোর্টের দেয়া এ রায়কে এক সংবাদ বিবৃতিতে গতকাল সাধুবাদ জানায় আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। বিবৃতিতে বলা হয়, আসক মনে করে, সুনির্দিষ্ট এ রায়ে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন উচ্চ আদালত। বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশের পর পরই সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে কনডেম সেলে বন্দি রাখা হচ্ছে, যা অত্যন্ত অমানবিক। মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিদের কনডেম সেলে না রাখার রায়ের মাধ্যমে আসামিদের প্রতি মানবিক আচরণ করা হবে। আসক উচ্চ আদালতের এ মানবিক সিদ্ধান্তে সাধুবাদ জ্ঞাপন করছে।