শিরোনাম
আদানির বকেয়া পরিশোধে হাসিনা সরকারকে ২০০ কোটি ডলার ঋণ দিতে চেয়েছিল ভারত কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু একাডেমি স্থাপনের ৭০০ একর বনভূমির বন্দোবস্ত বাতিল খাগড়াছড়িতে ১১ বছর পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ৪ লুট ১৯ হাজার কোটি টাকা রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদকে ঘিরে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে হবে : পার্বত্য উপদেষ্টা খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় কিশোর হৃদয় হত্যাকাণ্ডের দায়ে তিনজনের যাবজ্জীবন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের তোপের মুখে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের দায়িত্ব গ্রহণ আওয়ামীলীগই পাহাড়ে অশান্তির বীজ বপন করেছিল : ওয়াদুদ ভূইয়া খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ নেতাকে গুলি করে হত্যা

বন্ধ আছে এক দশক দেশের একমাত্র রেলওয়ে জাদুঘর

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১৫৬ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- নতুন প্রজন্মকে রেলের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কে জানাতে ২০০৩ সালে চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল দেশের একমাত্র রেলওয়ে জাদুঘর। প্রাচীন আমলে কয়লার ইঞ্জিনের রেল গাড়িতে ব্যবহৃত পুরোনো সব যন্ত্রপাতির ঠাঁই হয় এই জাদুঘরে। জাদুঘর ঘুরতে এসে জানা যেত দেশের রেলওয়ের সমৃদ্ধ ইতিহাস-ঐতিহ্য, দেখা যেত প্রাচীন সব জিনিসপত্র। কিন্তু সেই জাদুঘরটি দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ হয়ে আছে। তালায় ধরেছে জং। ভেতরে শত শত কবুতর বাসা বেঁধেছে। অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে ইতিহাসের অংশ, প্রাচীন রেলের স্মৃতিচিহ্ন মূল্যবান সব যন্ত্রপাতি। বর্তমানে কোনো দর্শনার্থী সেখানে প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছেন না।

অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের উদাসীনতা আর অবহেলায় বন্ধ হয়ে আছে এই জাদুঘরটি। এটি মাদক ও যৌনকর্মীদের আখড়ায় রূপ নিয়েছে। তবে সেই অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি এর দায় চাপিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের দিকে। এমনকি ভবিষ্যতেও এই জাদুঘর চালুর কোনো উদ্যোগ নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

সম্প্রতি কয়েক দফায় চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর আমবাগানের শেখ রাসেল শিশুপার্কের পাহাড়ে অবস্থিত রেলওয়ে জাদুঘরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, কাঠের তৈরি দৃষ্টিনন্দন দোতলা একটি বাড়ি। ব্রিটিশ আমলের এই বাড়িটি ছিল একটি বাংলো। এখানেই করা হয়েছে রেলওয়ে জাদুঘর। এটির চারপাশে সীমানা প্রাচীর আছে। ভেতরে সুনসান নীরবতা।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের দপ্তরে গিয়ে জাদুঘরটি দেখার জন্য তার কাছে অনুরোধ করলে তিনি ভেতরে নিয়ে পরিদর্শন করাতে দুজন ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেন। দূর থেকে দেখতে যেমন সুন্দর, কাছ থেকে আরও মনোরম এই জাদুঘর। কিন্তু সবকিছুতেই অযত্ন-অবহেলার ছাপ। বাড়িটির পেছন থেকে মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন নামে একজন এসে তালা খুলে দেন। আগে থেকেই ভেতরে ছিলেন মোহাম্মদ ইউনূস শিকদার নামে এক ব্যক্তি। তিনি দরজা ভেতর থেকে খুলে দিলেন। বড় আকারের চারটি প্রশস্ত কক্ষ। দুটি কক্ষে বিদ্যুৎ থাকলেও অন্য দুটি ঘুটঘুটে অন্ধকার। প্রত্যেক কক্ষে আছে নানা ধরনের পুরোনো জিনিসপত্র। এগুলোর মধ্যে আছে রেললাইন (কাপড় দিয়ে ঢাকা), পাটাতন, ব্রিটিশ আমলে ব্যবহৃত নানা ধরনের সিগন্যাল বাতি, স্কেল, ভাল্ব, বার্তা প্রেরণ যন্ত্র, এনালগ টেলিফোন, নিড়ানি, ফায়ার বাকেট, ঘড়ি, ট্রেইল ল্যাম্প, দুরবিন, স্টেশন মাস্টরের ক্যাপ, স্প্যাগ, ডায়নামোভ, গেট ল্যাম্পসহ আরও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি। এ ছাড়া রয়েছে রেলওয়ের গার্ডদের ব্যবহার করা বিভিন্ন যন্ত্রপাতি।

তবে নিচতলার এই তিন কক্ষে থাকা যন্ত্রপাতিগুলো ধীরে ধীরে নষ্ট হচ্ছে। কক্ষের দূরবস্থা হওয়ায় দেয়ালের আস্তরণ খসে খসে সেগুলোর উপরে পড়ছে। যদিও জাদুঘরের দোতলার ওঠে সবকটি কক্ষই অন্ধকার দেখা গেছে। সেখানে উপরে নিচে শত শত কবুতর বাসা বেঁধেছে।

স্থানীয়রা জানান, বিগত এক দশক ধরে জাদুঘরটি বন্ধ আছে। প্রতিদিনই কেউ না কেউ এসে ফিরে যাচ্ছেন। খবরের কাগজ প্রতিবেদকের আসাকে ঘিরে জাদুঘরটির ভেতরে আসেন অর্ধ শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু দর্শনার্থী। কিন্তু তারা সেটি দেখতে না পেয়ে হতাশা নিয়ে ফিরে যান।

এ সময় আগ্রহ নিয়ে জাদুঘর দেখতে আসা সব দর্শনার্থীকে ভেতর থেকে বের করে দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ের আইডব্লিউ অফিসের ওয়ার্ক সুপারভাইজার মোহাম্মদ মোশাররফ হোসাইন ও অস্থায়ী কেয়ারটেকার ইউনূস শিকদার। তারা দুজনই জাদুঘরের দেখভালের দায়িত্বে আছেন বলে জানান। কিন্তু এটিতে তারাও অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করতে পারেন না। জাদুঘর বন্ধ থাকা নিয়ে আক্ষেপ করেছেন তারাও। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষই এটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।

চাকরিজীবী মো. হাবিবুর রহমান জাদুঘর দেখতে এসে বলেন, ‘রেলওয়ে জাদুঘর সম্পর্কে জানতে পেরে পরিবার নিয়ে দেখতে এসেছিলাম। কিন্তু এটি বন্ধ হয়ে আছে।’

জাদুঘরের দায়িত্বে আছেন রেলওয়ের আইডব্লিউ অফিসের উর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান। কিন্তু তাকে সেখানে দেখা যায়নি। তাকে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এটি তেমন কোনো জাদুঘর নয়। কোনো এক সময় করা হয়েছিল। ভেতরে কিছু নেই। তাছাড়া এটির নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘চসিক এটা দখল করে নিয়েছে। শেখ রাসেল পার্ক করে তারা এটার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তারা পারছে না রেলকে গিলে খেতে। পার্ক গেট খোলে না, তাই কেউ এটি দেখতে আসে না। ফটক না খুললে জাদুঘর খুলে লাভ কী?’

এ বিষয়ে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পার্কটির ব্যবস্থাপনা নিয়ে রেলওয়ের সঙ্গে একটু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। তবে তা মিটিয়ে ফেলা হয়েছে। বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপককে সভাপতি করে একটি ব্যবস্থাপনা কমিটির মাধ্যমে পার্কের দায়িত্ব রেলের কাছেই বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।’খবরের কাগজ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions