শিরোনাম
আদানির বকেয়া পরিশোধে হাসিনা সরকারকে ২০০ কোটি ডলার ঋণ দিতে চেয়েছিল ভারত কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধু একাডেমি স্থাপনের ৭০০ একর বনভূমির বন্দোবস্ত বাতিল খাগড়াছড়িতে ১১ বছর পর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন, গ্রেফতার ৪ লুট ১৯ হাজার কোটি টাকা রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদকে ঘিরে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে হবে : পার্বত্য উপদেষ্টা খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় কিশোর হৃদয় হত্যাকাণ্ডের দায়ে তিনজনের যাবজ্জীবন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের তোপের মুখে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের দায়িত্ব গ্রহণ আওয়ামীলীগই পাহাড়ে অশান্তির বীজ বপন করেছিল : ওয়াদুদ ভূইয়া খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ নেতাকে গুলি করে হত্যা

লোডশেডিংয়ে দুর্বিষহ জনজীবন

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১০৯ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- বৃহত্তর চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ সঙ্কট আরো বেড়েছে। ঈদের ছুটি শেষ হতেই ফিরে এসেছে অসহনীয় লোডশেডিং। গ্রীস্মের খরতাপের সাথে বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। ঈদের ছুটি শেষ হলেও এখনও বন্ধ বেশির ভাগ কলকারখানা, দোকান পাট, মার্কেট, বিপণি কেন্দ্র। তারপরও রাতে দিনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। আগামী রোববার থেকে সরকারি-বেসরকারি ইপিজেডসহ শিল্প কারখানা পুরোদমে চালু হলে বিদ্যুতের চাহিদা আরো বেড়ে যাবে। আর তখন পরিস্থিতি শোচনীয় পর্যায়ে পৌঁছার আশঙ্কা করা হচ্ছে। গ্যাস ও জ্বালানির অভাবে চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। অথচ এখন চাহিদা যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি। চাহিদা আর সরবরাহের বিশাল ব্যবধান লোডশেডিং অনিবার্য হয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের ২৭টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা চার হাজার চার মেগাওয়াট। পিডিবির রের্কড অনুযায়ী বুধবার বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে দিনের বেলায় এক হাজার ৪৯৯ মেগাওয়াট আর রাতে পিক আওয়ারে এক হাজার ৬৮০ মেগাওয়াট। ওইদিন সারা দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় দিনের বেলায় ১৩ হাজার ৮৭ মেগাওয়াট আর রাতে পিক আওয়ারে পাওয়া যায় ১২ হাজার ৮৪২ মেগাওয়াট। অথচ দেশে সবকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার ৯০৩ মেগাওয়াট। অর্ধেকের চেয়ে কম বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়ায় সারা দেশেই লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
পিডিবির কর্মকর্তারা জানান, গ্যাস, জ্বালানি ও পানি সঙ্কট এবং যান্ত্রিক ত্রæটির কারণে চট্টগ্রামে ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। আটটি কেন্দ্রে নামমাত্র উৎপাদন হচ্ছে। খরচ কমাতে জ্বালানি নির্ভর বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বেশির ভাগ সময় বন্ধ রাখা হচ্ছে। বাঁশখালীর এসএস পাওয়ার প্ল্যান্টের উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ২২৪ মেগাওয়াট। আর সর্বশেষ ওই কেন্দ্র থেকে সরবরাহ পাওয়া গেছে মাত্র ২৭০ মেগাওয়াট। জানা গেছে, কয়লার অভাবে ওই কেন্দ্রের উৎপাদনে ধ্বস নেমেছে। মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহ পাওয়া গেছে ৫৭৩ মেগাওয়াট। পানির অভাবে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ মহাপ্রকল্পের পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে একটি চালু রাখা হচ্ছে। গ্যাসের অভাবে বন্ধ রাউজানের ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট। চট্টগ্রামে এখন গড়ে বিদ্যুতের চাহিদা সাড়ে ১৩শ’ থেকে প্রায় ১৫শ’ মেগাওয়াটের কাছাকাছি। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ কম হওয়ায় চট্টগ্রামে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। গড়ে প্রতিদিন আড়াইশ থেকে তিনশ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি হচ্ছে।
বৈশাখের শুরুতেই চট্টগ্রামে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। বৈশাখের কাঠফাঁটা রোদের ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে জনজীবন। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। গরমের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। গতকাল সকালের বৃষ্টিতে কিছুটা স্বন্তি ফিরলেও গরমের তীব্রতা রয়ে গেছে। সেই সাথে দফায় দফায় লোডশেডিং জনজীবন অতিষ্ঠ। বিগত দেড় দশকে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। কিন্তু এখন বিদ্যুতের অভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। চাহিদা মতো বিদ্যুৎ দিতে না পারলেও সরকার দফা দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। অতিরিক্ত দাম দিয়েও গ্রাহকেরা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না।
এনিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ-অসন্তোষ বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারি দলের সমর্থক হিসাবে পরিচিতরাও বিদ্যুৎ সঙ্কট নিয়ে তাদের ক্ষোভ অসন্তোষ আর বিরক্তি প্রকাশ করছেন। চট্টগ্রাম দেশের প্রধান বন্দরনগরী। বিদ্যুতের অভাবে এখানকার সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য এবং আমদানি-রফতানি কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শিল্প কারখানায় উৎপাদনেও রীতিমত ধ্বস নেমেছে। গ্যাস, বিদ্যুৎসহ জ্বালানির অভাবে নতুন বিনিয়োগ নেই। বাড়ছে না কর্মসংস্থান। অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় চট্টগ্রামকে লোডশেডিংয়ের আওতামুক্ত করার দাবিও উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।
এদিকে বিদ্যুতের অভাবে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানি পরিশোধন ব্যাহত হচ্ছে। কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ওয়াসার পানি উৎসে জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে। তাতে পানিতে লবণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় জোয়ারের সময় পানি পরিশোধন বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এতে ওয়াসার পানি পরিশোধন দিনে সাত থেকে আট কোটি লিটার কমে গেছে। নগরবাসীর পানির চাহিদা পূরণে ওয়াসার গভীর নলক‚পগুলো সচল করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের অভাবে তাও বিঘিœত হচ্ছে। ফলে বিদ্যুতের সাথে পাল্লা দিয়ে নগরীতে পানি সঙ্কটও তীব্র হয়ে উঠছে। #

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions