ডেস্ক রির্পোট:- সম্প্রতি সিরিয়ায় থাকা ইরানের কনস্যুলেট অফিসে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এতে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। ওই ঘটনার পর ইসরাইলের বিরুদ্ধে চরম প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে তেহরান। আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থা ও গণমাধ্যমগুলো বলছে, ইতোমধ্যে হামলার প্রস্তুতি নিয়েছে ইরান। যেকোনো সময় মধ্যপ্রাচ্যের যেকোনো জায়গায় ইসরাইলি স্বার্থে আঘাত হানতে পারে ইরান। এ নিয়ে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পাশাপাশি আতঙ্ক বিরাজ করছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া ও জার্মানি।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে ইসরাইলের বিমান হামলার পর তেহরান এর প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেওয়ায় ওই অঞ্চল এবং যুক্তরাষ্ট্র সতর্কাবস্থায় রয়েছে।
দামেস্কে ওই হামলায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরসিজি) কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদিসহ অন্তত ৭ সামরিক উপদেষ্টা নিহত হন।
ইসরাইল এ হামলার দায় স্বীকার না করলেও বুধবার এক ভাষণে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামেনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘কনস্যুলেটে হামলা করে ইসরাইল যেন ইরানের মাটিতেই হামলা চালিয়েছে। তারা একটি ভুল করেছে। এর শাস্তি তাদেরকে পেতেই হবে।’
মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে জার্মানির এয়ারলাইন্স লুফথানসা প্রথমে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত ইরানে যাওয়া-আসার ফ্লাইট স্থগিত করেছিল। বৃহস্পতিবার এর মেয়াদ আরও দু’দিন বাড়িয়ে ১৩ এপ্রিল করেছে এয়ারলাইন্সটি।
এদিকে রাশিয়া নিজেদের নাগরিকদের মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমণের বিষয়ে সতর্ক করেছে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। তবে ইরানের হুমকির মুখে অন্যত্রও নিরাপত্তার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
একটি বিমানঘাঁটি সফরের পর তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের ক্ষতি করবে, আমরা তাদের ক্ষতি করব। ইসরাইল রাষ্ট্রের সব ধরনের নিরাপত্তা রক্ষণাত্মক কিংবা আক্রমণাত্মক- দুভাবেই পূরণ করতে আমরা প্রস্তুত।’
গাজায় ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। লেবানন, ইয়েমেন ও ইরাকের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ফিলিস্তিনিদের সমর্থন দিয়ে হামলা চালাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরাইলের সঙ্গে সরাসরি সংঘাত এড়িয়ে চলছে ইরান। তবে সশস্ত্র ওই গোষ্ঠীগুলোকে সহযোগিতা করে আসছে দেশটি।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ানের সঙ্গে ফোনালাপে উত্তেজনার তীব্রতা বৃদ্ধি এড়াতে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের নাগরিকদের মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষ করে ইসরাইল, লেবানন ও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে সবার উচিত সংযত থাকা, এমন কিছু করা উচিত হবে না যাতে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি পুরোপুরি অস্থিতিশীলতায় পর্যবসিত হয়।’