ডেস্ক রির্পোট:- সন্ত্রাসী সংগঠন কেএনএফের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দেশের সন্ত্রাসীদের যোগাযোগ আছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
শনিবার (৬ এপ্রিল) চট্টগ্রামে ওয়াইএনটি সেন্টারে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ বিদেশি সহযোগিতা নিয়ে ব্যাংক লুট, ডাকাতিসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে — এমন অভিযোগের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘তাদের সঙ্গে আশেপাশের সন্ত্রাসীদেরও যোগাযোগ আছে। পার্শ্ববর্তী দেশে যারা ইতোমধ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছিল— তাদের অস্ত্রশস্ত্র এদের কাছে এসেছে বলে জানা গেছে। আপনারা দেখছেন, তাদের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ব্যাংক ম্যানেজারকে মুক্ত করা হয়েছে। তাদেরকে নির্মূল করতে সরকার বদ্ধপরিকর।’
নাবিক ও জাহাজ উদ্ধার
সোমালি জলদস্যুদের হাতে আটক এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের নাবিকদের ঈদের আগে ফিরিয়ে আনতে স্বজনদের আবেদন, নাবিক ও জাহাজের মুক্তি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সর্বমুখী প্রচেষ্টা পরিচালনা করা হচ্ছে। যারা হাইজ্যাক করেছে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। নাবিকরা ভালো আছেন। তাদের খাবার-দাবারেরও কোনও অসুবিধা নেই। তারা কেবিনে আছেন। যেহেতু আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে, আমরা আশা করছি, সহসা তাদের মুক্ত করা সম্ভবপর হবে।’
দস্যুদের ওপর চাপ প্রয়োগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সেই জাহাজের আশেপাশে বিদেশি জাহাজও প্রস্তুত আছে। আলোচনার পাশাপাশি হাইজ্যাকারদের ওপর নানামুখী চাপও রয়েছে। দিনক্ষণ বলা সম্ভব নয়, তবে এ ক্ষেত্রে অনেক অগ্রগতি হয়েছে।’
নাবিকদের ছুটির বিষয়টিও পরিষ্কারভাবে তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জাহাজে যারা চাকুরি করেন— ঈদের আগে পরে হিসাব করে তাদের ছুটি হয় না। তারা যান ছয় মাস কিংবা এক বছরের জন্য। এই জাহাজ যদি হাইজ্যাক নাও হতো, ঈদের আগে জাহাজ ছেড়ে তাদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হবার কথা ছিল না।
এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বিদেশি মদদ পাচ্ছে না বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, পাহাড়ে যৌথ অভিযান চলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। গোটা পাহাড় অশান্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
শনিবার সকালে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প-২ (এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক) এর আওতায় নির্মিত পাঁচটি ফ্লাইওভার যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা করেন সেতুমন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কেএনএফ কোনো ক্ষোভ বা দাবি-দাওয়ার বিষয়ে সংক্ষুব্ধ হয়েও এ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে পারে। এর কারণ জানা যাবে শিগগির। সীমান্ত থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদী কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন থেকে মদদ দেওয়া হবে, এটা আমরা মনে করি না। জোর তদন্ত চলছে, সবই বেরিয়ে আসবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে এ ধরনের ঘটনা তো হতেই পারে। গোটা পাহাড় এখানে অশান্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এখানে বিষয়টা হচ্ছে, বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি, থানচি, কিছুটা আলীকদম, এই এলাকাজুড়ে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট, বম নামে একটি উপজাতি; পার্বত্য চট্টগ্রামে কিন্তু খাগড়াছড়িতে চারটা উপজাতি—বাঙালিসহ চার এবং রাঙ্গামাটিতে তিনটি আর সবচেয়ে বেশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হচ্ছে বান্দরবানে, ১৩টির মতো। এর মধ্যে বম, এরা খুব বড় না।
তিনি আরও বলেন, বম জনগোষ্ঠী চীন এবং ভারত সীমান্তের কাছে চীন স্টেট বলে ওদের একটা স্টেট আছে। মূলত ওখানেই তাদের একটা ঘাঁটি আছে বলে মনে করা হয়। কুকি-চিনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও অনেকবার হয়েছে। এরপর এরা হঠাৎ করে এভাবে অস্ত্র নিয়ে এভাবে বিদ্রোহ কেন করল তার কারণ অনুসন্ধান চলছে। যেন পরিস্থিতির আর কোনো অবনতি না হয়, সে ব্যাপারে আমাদের যৌথ অভিযান চলছে। আশা করি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
ঈদের আনন্দের মধ্যে পাহাড়ে অশান্তি, এটা নিয়ে সরকারের অবস্থান কী জানতে চাইলে কাদের বলেন, এখানে যৌথ অভিযান চলছে। আশা করি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, গত বছরের মতো এবারের ঈদযাত্রাও স্বস্তিদায়ক হচ্ছে। গাড়ির চাপ আছে, কিন্তু এবার যানজট হবে না, এটা আমি বলতে পারি।