ডেস্ক রির্পোট:- শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট যাচ্ছেতাইভাবে হেরেছে বাংলাদেশ। ৩২৮ রানের বড় হারে পুরো দলই বিপর্যস্ত। এই অবস্থা কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্য নিয়ে শনিবার(৩০ মার্চ) সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি জিতে সিরিজ হার এড়ানোর লক্ষ্য তাদের। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায়, সরাসরি সম্প্রচার করবে টি স্পোর্টস ও গাজী টেলিভিশন।
বড় হারকে সঙ্গী করে সিলেট থেকে চট্টগ্রামে এসেছে বাংলাদেশ। তবে সাগরিকায় দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে নামার আগে চনমনে দেখা গেছে পুরো দলকে। ড্রেসিংরুমে নেই পুরোনো ব্যর্থতার ছাপ। সামনে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে। ব্যক্তিগত কারণে চট্টগ্রাম টেস্টে দলের সঙ্গে থাকছেন না প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তার বদলে দলকে দিকনির্দেশনা দেবেন সহকারী কোচ নিক পোথাস।
ড্রেসিংরুমের পরিবেশ নিয়ে ইতিবাচক ব্যাখ্যাই দিলেন সহকারী এই কোচ, ‘ছেলেরা এই টেস্টে ভালো করতে ক্ষুধার্ত। তারা সবসময়ই ভালো করতে চায়। তারা দল হিসেবে অসাধারণ। ভালো করার ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় তারা বিশ্বাসী। তাদের হাসি দেখলে হয়তো বুঝতে পারবেন। আমাদের ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব এই মনোভাবটাকে দলের ভেতরে টিকিয়ে রাখা, যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা সমান্তরালে আসি। তারপর আমাদের এগিয়ে যাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দলে আবেগের কোনও জায়গা নেই। ড্রেসিংরুমের পরিবেশ বেশ ভালো।’
চট্টগ্রামে লঙ্কানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে নামার আগে পোথাসের কণ্ঠে আত্মবিশ্বাসী সুর, ‘আগের ম্যাচে কী হয়েছে, সেটি এখন অতীত। হারের হতাশা ছিল। সেটি ভুলে আমাদের সামনে তাকাতে হবে। এগিয়ে যেতে হবে। আশা করি, ছেলেরা চট্টগ্রামে ঘুরে দাঁড়াবে। আমরা আরেকটি টেস্ট ম্যাচের জন্য যেভাবে প্রস্তুতি নেই, এবারও সেই কাজটা করছি। আমরা পেছনে কী হয়েছে ভাবছি না। সামনে তাকিয়ে আছি। আমরা ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়েছি এবং সামনে কী হবে সেগুলো নিয়ে ভাবছি। সেগুলোই আগামী টেস্ট ম্যাচে প্রয়োগ করবো।’
বাংলাদেশকে চোখ রাঙাচ্ছে চট্টগ্রামের শেষ পাঁচ টেস্টের পারফরম্যান্স। যেখানে বাংলাদেশ চারটিতেই হেরেছে, ড্র করেছে একটি। একমাত্র ড্রটি এসেছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এছাড়া ভারত, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরেছে। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভয়ে থাকার যথেষ্ট কারণও আছে। পোথাসের বার্তা অবশ্য স্পষ্ট, ‘সামনে ম্যাচটা আমরা জিততে চাই। আসলে প্রত্যেকেই মাঠে নেমে জিততে চায়। উইকেট যেমনই হোক আমাদের খেলতে হবে। মানিয়ে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এটাই সহজ কাজ।’
প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই খারাপ করেছে বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় টেস্টের আগে সাকিব ফেরাতে নিঃসন্দেহে শক্তি বেড়েছে স্বাগতিকদের। হাসান মাহমুদ একাদশে সুযোগ পেলে পেস আক্রমণেও আসবে বাড়তি গতি। সাকিবের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের সহকারী কোচ নিক পোথাস বলেছেন, ‘সাকিবের মতো একজনের থাকাটা যে কোনো দলের জন্যই ভাগ্য। সে বিশ্বসেরা। তার উপস্থিতি ড্রেসিংরুমের পরিবেশ বদলাতে সাহায্য করবে। তার সামর্থ্য দলকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা দেবে। তাকে দলে স্বাগত জানাচ্ছি।’
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সাকিব বেশ বিরতি দিয়ে টেস্ট খেলেছেন। এবারও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে টেস্টে তিনি খেলতে নামবেন প্রায় এক বছর পর। এই টেস্টে ফেরার মাধ্যমে জাতীয় দলের জার্সিই তিনি গায়ে চড়াবেন ৫ মাস পর। নিজের প্রত্যাবর্তন ম্যাচ নিয়ে একদিন আগে সাকিব বলেছেন, ‘দেশের হয়ে পারফর্ম করতে পারা কিংবা প্রতিনিধিত্ব করতে পারা সব সময় গর্বের একটি বিষয়। স্বাভাবিকভাবে টেস্ট ক্রিকেটে ফিরতে পেরে আমি আনন্দিত ও গর্বিত। ব্যক্তিগত কোনও লক্ষ্য নেই, আমার মনে হয় না ক্রিকেট যতদিন খেলেছি কোনও সময় আমার ব্যক্তিগত লক্ষ্য কিংবা অর্জন নিয়ে আমার কোনও চিন্তা ছিল। সব সময় চেষ্টা করেছি দলের জন্য কীভাবে অবদান রাখা যায়।’