শিরোনাম
চেতনার মানচিত্রে রক্তাক্ত গণ-অভ্যুত্থান অগ্নিঝরা জুলাই,এক বছরেও হয়নি শহীদ ও আহতদের চূড়ান্ত তালিকা,৬ জনের মরদেহ এখনো মর্গে পড়ে আছে আজ সেই জুলাই শুরু ফেসবুকজুড়ে ‘লাল জুলাই’ ভোটকেন্দ্র স্থাপন: ডিসি-এসপিদের কর্তৃত্ব বাদ, ক্ষমতা পেল ইসি কর্মকর্তারা দেশে করোনার নতুন ঢেউ, জুনে ২২ জনের মৃত্যু প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ফোনালাপ সুজন বড়ুয়া নামে এক ইউপিডিএফ সদস্য গ্রেপ্তার রাঙ্গামাটিতে পিসিসিপির বিক্ষোভ, পার্বত্য উপদেষ্টার ‘আদিবাসী’ পরিচয়ের দাবির প্রতিবাদ রাঙ্গামাটিতে চাকুরিপ্রার্থী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ! কসমস হোটেল মালিক গ্রেফতার

‘নির্বাচনে এক কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ করেছি, এটা তুলবো, এইটুক অন্যায় করবো’

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪
  • ৩০৪ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- অনিয়ম করে হলেও গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খরচ হওয়া এক কোটি ২৬ লাখ টাকা তোলার ঘোষণা দিয়েছেন নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ। স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে তার এমন ঘোষণার একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ জেলাজুড়ে আলোচনার ঝড় বইছে।

গত মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) জেলার লালপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আবুল কালাম আজাদ এমন বক্তব্য দেন। সংসদ সদস্যের ওই বক্তব্য এখন ‘টক অব দ্য টাউনে’ পরিণত হয়েছে। বিব্রতবোধ করছেন তার দলীয় নেতা-কর্মীরাও। তবে এ বক্তব্য তার নিজস্ব, এই দায়ভার আওয়ামী লীগ নেবে না বলে জানিয়ে দিচ্ছেন দায়িত্বশীলরা। অনেকে তার এই বক্তব্যকে কাণ্ডজ্ঞানহীনও বলছেন।

ভিডিও ক্লিপে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনার টাকা আমার প্রকল্প থেকে দিয়েছি। আমি তো বাড়ির জমি বিক্রি করে দেইনি। আমার বেতন-ভাতার টাকাটাও দেইনি। গত পাঁচ বছরের বেতন-ভাতার এক কোটি ২৬ লাখ টাকা ছাড়া আমার কোনো সম্পদ ছিল না। আগামীতেও থাকবে না। তবে নির্বাচনে এক কোটি ২৬ লাখ টাকা আমি খরচ করেছি, এটা তুলবো। এটা আমি তুলবো, যেভাবেই হোক এটা আমি তুলবো। এইটুক অন্যায় করবো, আর করবো না। ’

আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘গত নির্বাচনে ২৫ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়েছি। ট্যাক্স-ফ্রি গাড়ি কিনেছিলাম ২৭ লাখ টাকা দিয়ে। আমি চাইলে এক কোটি টাকা দিয়ে কিনতে পারতাম। যেহেতু আমার টাকা নেই, আমি ২৭ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছিলাম। এবার আমি কিনব, ওই টাকা দিয়ে কিনব। ওই টাকা, আমি তুলে নেবো এবার। নিয়ে আর কিছু করবো না। খালি এই এক কোটি ২৬ লাখ টাকা তুলবো। ’

এ সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘আমার প্রকল্প থেকে আগে সাইকেল দিছি, দরকার হলে মোটরসাইকেল দেব অসুবিধা নেই। আমি অন্যায় করবো না। যার টাকা তাকে দেব। ’

ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শারমিন আখতার, আমন্ত্রিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, পুলিশ-প্রশাসন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

সংসদ সদস্যের ওই বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে লালপুরের ইউএনও শারমিন আখতার জানান, এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। এমপি যা বলেছেন, তা সম্পূর্ণভাবে তার নিজস্ব ব্যাপার।

ব্ক্তব্যটির বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দাবি করেন, তার বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে। যেটা বোঝাতে চেয়েছেন তা ভিডিও ক্লিপে নেই।

এ নিয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে চান না বলেও জানান তিনি।

নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, দলীয় অনুষ্ঠানে তিনি এমন বক্তব্য দেননি। যে বক্তব্য সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দিয়েছেন, তা তার নিজ্স্ব বক্তব্য এবং তার ও সরকারি অনুষ্ঠানের বক্তব্য। কাজেই তার এ বক্তব্যের দায়ভার আওয়ামী লীগ নেবে না। এই দায়ভার তার একদম নিজস্ব।

তবে এ বক্তব্যকে কাণ্ডজ্ঞানহীন বলে উল্লেখ করেন সিরাজুল ইসলাম।

এ ব্যাপারে নাটোর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, একটি সরকারি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে একজন সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য খুব দুর্ভাগ্যজনক ও হতাশাজনক। তার মত দায়িত্বশীল ব্যক্তির এমন বক্তব্য তার সহকারী, দলীয় নেতা-কর্মীসহ সবাইকে দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত করবে। এটা একদিকে যেমন পরিষ্কারভাবে শপথের লঙ্ঘন, অন্যদিকে নির্বাচনী বিধিরও লঙ্ঘন বলে আমি মনে করি।

তিনি বলেন, নির্বাচনী ব্যয় অনুযায়ী একজন সংসদ সদস্য এক কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন না। কারণ ইসি থেকে নির্বাচনী ব্যয় বেঁধে দিয়ে তফসিল ঘোষণা করেছিল। এর বাইরে বেশি খরচ করার কোনো এখতিয়ার নেই তার। যদি করে থাকেন, এটাও এক ধরনের অন্যায় এবং অনিয়ম। একজন সংসদ সদস্য এমন বক্তব্য দিতে পারেন না।

ইসির ঘোষণা অনুসারে, গত নির্বাচনে প্রতি আসনে একজন প্রার্থীর সর্বোচ্চ ব্যয়সীমা ছিল ২৫ লাখ টাকা। ব্যয়সীমা অতিক্রম করলে সর্বোচ্চ সাত বছরের শাস্তির বিধান আছে।

সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তিনি গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

এর আগে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে তিনি দলীয় মনোনয়ন পাননি এবং নির্বাচনও করেননি। সেবার এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন শহিদুল ইসলাম বকুল। বাংলানিউজ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions